
ছবি: শেখ হাসিনাসহ ৫৭ জনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ। ছবি : সংগৃহীত
রাজধানীর পিলখানায় ২০০৯ সালে সংঘটিত বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৫৭ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের করেছেন শহীদ সেনা কর্মকর্তাদের পরিবারের সদস্যরা। বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুরে ট্রাইব্যুনালে এই অভিযোগ দাখিল করা হয়।
পিলখানা হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটনে সরকার জাতীয় স্বাধীন কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিচারপতি ফারাহ মাহবুবের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চকে গত ২ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপক্ষ বিষয়টি জানায়। রাষ্ট্রপক্ষ আদালতকে জানায়, কমিশনের গঠনের বিষয়ে মতামত চেয়ে এটি বর্তমানে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। তবে বিষয়টি শুনে আদালত উষ্মা প্রকাশ করেন এবং কমিশন সংক্রান্ত পূর্ণাঙ্গ তথ্য উপস্থাপনের নির্দেশ দেন।
এর আগে, জাতীয় স্বাধীন কমিশন গঠনের জন্য আইনি নোটিশ পাঠানো হলেও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছ থেকে কোনো সাড়া মেলেনি। এই প্রেক্ষাপটে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. তানভীর আহমেদ ও বিপ্লব কুমার পোদ্দার গত মাসে জনস্বার্থে হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করেন। গত ৬ নভেম্বর এই রিটের প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে ১০ দিনের মধ্যে রিটকারীর আবেদন নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দেন।
রিট আবেদনে আদালত রুল জারি করে জানতে চান, জাতীয় স্বাধীন কমিশন গঠনে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ও কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না এবং কমিশন গঠনের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না। একই সঙ্গে, ২৫ ফেব্রুয়ারি দিনটিকে ‘শহীদ সেনা দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করার জন্য কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তাও জানতে চাওয়া হয়।
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় তৎকালীন সীমান্তরক্ষী বাহিনী বাংলাদেশ রাইফেলসের (বিডিআর) সদর দপ্তরে এক ভয়াবহ বিদ্রোহ ঘটে। এই বিদ্রোহে বিডিআরের বিদ্রোহী জওয়ানদের হাতে প্রাণ হারান ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তা। ঘটনাটি সারা দেশে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করে এবং এর পেছনে প্রকৃত কারণ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে নানা আলোচনা চলছে।
সরকারের পক্ষ থেকে এই ঘটনার প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটনে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হলেও, শহীদ সেনা কর্মকর্তাদের পরিবারের দাবি, এখনো অনেক প্রশ্নের উত্তর মেলেনি। এ কারণে তারা এই ঘটনা নিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের করেছেন।
পিলখানা হত্যাকাণ্ডের বিচার নিয়ে ইতোমধ্যে একাধিক পর্যায়ে মামলার কার্যক্রম চলমান। তবে এই ঘটনার পেছনের মূল ষড়যন্ত্রকারীদের চিহ্নিত ও বিচারের দাবি এখনো জোরালোভাবে উঠে আসছে। নতুন করে দাখিল করা এই অভিযোগ সেই বিচারিক প্রক্রিয়ায় নতুন মাত্রা যোগ করবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
repoter