ছবি: ছবি: সংগৃহীত
পাকিস্তানের তিনটি প্রদেশে নিরাপত্তা বাহিনীর সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে ১৬ জন নিহত হয়েছে। এ সময় দুই সেনা সদস্যসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চার সদস্যও নিহত হন। গত শনিবার এবং রোববার পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া, বালুচিস্তান এবং পাঞ্জাবের বিভিন্ন জেলায় এই অভিযান চালানো হয়। পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডন এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে যে, এসব অভিযানে ৫ সন্ত্রাসী নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের বান্নু জেলার বাকাহেল এলাকায় একটি গোয়েন্দাভিত্তিক অভিযানে পাঁচ সন্ত্রাসী নিহত এবং নয়জন আহত হয়। এ সময় ২৯ বছর বয়সী সেনা সদস্য সিপাহি ইফতেখার হুসাইন প্রাণ হারান। অন্যদিকে, খাইবার জেলার শগাই এলাকায় আরও একটি অভিযান চালানো হয়, যেখানে তিন সন্ত্রাসী নিহত এবং দুজন আটক হয়। আইএসপিআরের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, অভিযানে নেতৃত্ব দেয়ার সময় ২৫ বছর বয়সী ক্যাপ্টেন মুহাম্মদ জোয়াইবুদ্দিন নিহত হন।
এ ছাড়া, খাইবার জেলার সংঘর্ষে নিহত এক সন্ত্রাসী সাংবাদিক খলিল জিবরানের হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিল বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। লাকি মারওয়াট জেলার দারা পেজু এলাকায় একদল সন্ত্রাসী পুলিশ স্টেশনে হামলা চালায়। প্রায় এক ঘণ্টা চলা এই সংঘর্ষে কনস্টেবল কিরামতউল্লাহ নিহত হন, তবে পুলিশ হামলাটি প্রতিহত করতে সক্ষম হয়।
পাঞ্জাবের মিয়ানওয়ালি জেলার চাপরি পুলিশ স্টেশনে সন্ত্রাসীদের হামলায় চারজন নিহত হয়। পুলিশ জানায়, প্রায় ২০ জন সন্ত্রাসী রকেট লঞ্চার এবং গ্রেনেড ব্যবহার করে হামলা চালায়। ঘণ্টাব্যাপী এই সংঘর্ষ শেষে পুলিশ চারজন সন্ত্রাসীর মরদেহ উদ্ধার করে। এছাড়া, মার্দান পুল এলাকায় পুলিশ ভ্যানে হামলায় এএসআই মীর গুলাম মারওয়াট নিহত হন এবং আরও দুজন আহত হন। আহতদের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।
বালুচিস্তানের শেরানি জেলায় সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে চার সন্ত্রাসী নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। কর্তৃপক্ষ জানায়, এই সন্ত্রাসীরা আফগানিস্তান থেকে পাকিস্তানে প্রবেশ করে এবং নিষিদ্ধ সংগঠনের সাথে যুক্ত ছিল। পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ জানায়, এসব সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
পাকিস্তানের সরকার এবং সেনাবাহিনী সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে এসব অভিযান চালিয়ে দেশব্যাপী নিরাপত্তা পরিস্থিতি উন্নত করার চেষ্টা করছে। বিশেষ করে আফগান সীমান্তবর্তী এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পাওয়ার পর এই ধরনের অভিযান বাড়ানো হয়েছে। সরকারি সূত্রে জানানো হয়েছে, এসব অভিযানে নিহত সন্ত্রাসীরা বিভিন্ন নিষিদ্ধ সংগঠনের সদস্য এবং তাদের মূল লক্ষ্য পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তাকে ক্ষতিগ্রস্ত করা।
পাকিস্তান সেনাবাহিনী এ ধরনের অভিযানে সফলতার ব্যাপারে আশাবাদী, এবং জানিয়েছে যে সন্ত্রাসী কার্যক্রম মোকাবিলায় তারা আরও কঠোর পদক্ষেপ নেবে।
repoter