
ছবি: ছবি: সংগৃহীত
স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, আদালতের রায়ের মাধ্যমে প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থীদের মেয়র পদে বসানো অবৈধ নির্বাচনকে বৈধতা দেওয়ার সামিল। শুক্রবার রাজধানীর হেয়ার রোডের সরকারি বাসভবনে এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত এসব অবৈধ নির্বাচন থেকে কোনো প্রাপ্তি না মেনে সততা বজায় রাখা।
সাক্ষাৎকারে স্থানীয় সরকার নির্বাচন, জাতীয় নির্বাচন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা, মন্ত্রণালয়ের কাজ, ব্যক্তিগত নানা প্রসঙ্গসহ চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের বিষয়েও আলোচনা হয়। ২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারির চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী এম রেজাউল করিম চৌধুরী বড় ব্যবধানে জয়ী হলেও, বিএনপির প্রার্থী শাহাদাত হোসেন নির্বাচন ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন কারচুপির অভিযোগে। জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানের পর সরকার পতনের প্রেক্ষিতে রেজাউল করিম চৌধুরী আর অফিসে যাননি এবং সরকার তাকে অপসারণ করে প্রশাসক নিয়োগ দেয়। এরপর আদালতের রায়ে শাহাদাত হোসেনকে বিজয়ী ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন প্রজ্ঞাপন জারি করে।
এদিকে একই ধরনের রায় এসেছে ঢাকার দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নিয়েও। ২০২০ সালের নির্বাচনে বিএনপির ইশরাক হোসেন পরাজিত হলেও, রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর তিনি মামলার সংশোধনী আরজি দিয়ে নিজেকে মেয়র ঘোষণার আবেদন করেন এবং আদালত তাতে রায় দেয়। উল্লেখ্য, ওই নির্বাচনে মাত্র ২৯ শতাংশ ভোট পড়েছিল এবং কেন্দ্রগুলোতে ভোটার উপস্থিতি কম থাকায় নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল।
বরিশাল সিটি করপোরেশনের ২০২৩ সালের নির্বাচন নিয়েও মামলা হয়েছে, যেখানে জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী আদালতে ফলাফল বাতিলের আবেদন করেছেন।
এসব পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, এসব ঘটনার মাধ্যমে বিতর্কিত নির্বাচনের স্বীকৃতি দেওয়া হচ্ছে। তিনি মনে করেন, রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত এ ধরনের নির্বাচনকে অবৈধ ঘোষণা করা এবং কোনো অবস্থাতেই এর ফলাফল গ্রহণ না করা। তিনি বলেন, ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল না করে সরাসরি নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে প্রজ্ঞাপন জারি করা হচ্ছে, যা সঠিক প্রক্রিয়া নয়।
চট্টগ্রামের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তখন তিনি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন না এবং মামলায় মন্ত্রণালয় কোনো পক্ষও ছিল না, ফলে মন্ত্রণালয়ের পক্ষে আপিল করা সম্ভব ছিল না। এখন বিষয়টি পুরোপুরি নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে। নির্বাচন কমিশন চাইলে গেজেট প্রকাশ করতে পারে অথবা আপিলের পথেও যেতে পারে। বিষয়টি তাদের সাংবিধানিক দায়িত্বের অন্তর্ভুক্ত।
আসিফ মাহমুদ আরও বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অনেকে তাদের মামলার আরজিতে নিজের বিজয় ঘোষণার দাবি সংযুক্ত করেছেন। এর আগে তারা শুধু নির্বাচনের ফলাফল বাতিলের আবেদন করেছিল। তবে বর্তমানে মন্ত্রণালয়ের কাছে কোনো আনুষ্ঠানিক অনুরোধ না আসায় তারা এখনই কোনো পদক্ষেপ নিতে পারছে না। বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তে রয়েছে এবং কমিশন থেকে মন্ত্রণালয়ের কাছে এলে তারা পরবর্তী পদক্ষেপ বিবেচনা করবেন।
repoter