ঢাকা,  বৃহস্পতিবার
৩ এপ্রিল ২০২৫ , ০৩:০৫ মিনিট

Donik Barta

শিরোনাম:

* চাঁদপুরের ৪০টি গ্রামে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদ রবিবার * প্রতিযোগী না হয়ে প্রতিপক্ষ হলে ক্ষতিই নিজেদের: পঞ্চগড়ে সারজিস আলম * জুলাই বিপ্লবের শহীদ পরিবারদের পাশে নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক * ভূমিকম্প বিধ্বস্ত মিয়ানমারে যাচ্ছে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর উদ্ধারকারী দল * শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেছে, সৌদিতে রবিবার ঈদ উদযাপিত হবে * “বাংলাদেশ কোরআনের উর্বর ভূমি” — পিএইচপি কোরআনের আলো প্রতিযোগিতায় ধর্ম উপদেষ্টার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা * চা শ্রমিকদের পাশে সিলেটের ডিসি — দুর্দশায় ত্রাণ নিয়ে হাজির প্রশাসন * সাত বছর পর পরিবারের সান্নিধ্যে ঈদ উদযাপন করছেন খালেদা জিয়া * মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডে ভয়াবহ ভূমিকম্পে শতাধিক মৃত্যুর আশঙ্কা * আগামীকাল রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর ২ ঘণ্টার লেনদেন

নতুন বছরে অর্থনীতির সামনে চ্যালেঞ্জের বিশাল ভাণ্ডার

repoter

প্রকাশিত: ১০:৩৮:৪২পূর্বাহ্ন, ০২ জানুয়ারী ২০২৫

আপডেট: ১০:৩৮:৪২পূর্বাহ্ন, ০২ জানুয়ারী ২০২৫

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: ছবি: সংগৃহীত

২০২৫ সালে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গেই বাংলাদেশ অর্থনীতির বেশকিছু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে। সামষ্টিক অর্থনীতির সূচকগুলোতে নজর দেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে। মূল্যস্ফীতির লাগাম টেনে ধরা, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহের নিশ্চয়তা, ব্যাংক খাতের স্থিতিশীলতা, বিনিয়োগ বৃদ্ধি, কর্মসংস্থানের সম্প্রসারণ, বৈদেশিক ঋণের ব্যবস্থাপনা, রাজস্ব আয় বৃদ্ধি, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি এবং এলডিসি থেকে উত্তরণের প্রস্তুতির মতো বিষয়গুলো এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

২০২৬ সালে বাংলাদেশ এলডিসি থেকে উত্তরণ করবে। এজন্য ২০২৫ সালের মধ্যে প্রস্তুতি গ্রহণ এবং মধ্যমেয়াদি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে। তবে, ২০২৪ সালের আগস্ট মাসে যে অর্থনৈতিক সংকটের পটভূমি তৈরি হয়েছিল, সেটি এ বছরেও প্রভাব ফেলবে।

মূল্যস্ফীতি ও পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজন কার্যকর ব্যবস্থা

দেশে খাদ্যমূল্যস্ফীতির কারণে সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তির মধ্যে রয়েছে। সরবরাহ ব্যবস্থার ঘাটতির কারণে খাদ্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। ২০২৪ সালে খাদ্যমূল্যস্ফীতি ১৪ শতাংশের কাছাকাছি ছিল, যা সরবরাহ ব্যবস্থাপনার অদক্ষতার পরিচায়ক। বিশেষজ্ঞদের মতে, খাদ্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারকে সরবরাহ ব্যবস্থা উন্নত করার পাশাপাশি উৎপাদন বৃদ্ধির ওপর জোর দিতে হবে।

বিনিয়োগে গতির প্রত্যাশা

দেশের বিনিয়োগ খাত বর্তমানে স্থবির। নতুন বছরে বিনিয়োগে গতির আনয়ন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধি ছাড়া কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি সম্ভব নয়। কর্মসংস্থান না বাড়লে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে না, যা অর্থনীতিতে বৈষম্য বাড়াবে। তাই বিনিয়োগ আকর্ষণে সরকারকে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

রাজস্ব খাতে সংস্কারের জরুরি প্রয়োজন

সরকারের রাজস্ব আদায় বাড়ানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আইএমএফের শর্ত পূরণের পাশাপাশি সরকারকে ঋণনির্ভরতা কমাতে হবে। রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি পেলে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রদান সহজ হবে এবং অর্থনীতিতে গতিশীলতা আসবে।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের চ্যালেঞ্জ

দেশে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করা যায়নি। পাশাপাশি দাম নিয়েও রয়েছে অসন্তোষ। বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ উন্নত করা এবং অবকাঠামোগত উন্নয়নে মনোযোগ দেওয়া জরুরি।

ব্যাংক খাতে সংস্কার ও স্থিতিশীলতা

গত সরকারের সময় ব্যাংক খাতে লুটপাটের কারণে স্থবিরতা নেমে এসেছিল। খেলাপি ঋণের পরিমাণ লাগামহীনভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দ্রুত সংস্কার কার্যক্রম সম্পন্ন করা এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংককে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেওয়ার প্রয়োজন।

রিজার্ভ সংকটের মোকাবিলা

দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ক্রমাগত হ্রাস পেয়েছে। ২০২৪ সালের ডিসেম্বর শেষে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২১ বিলিয়ন ডলার। নতুন বছরে রিজার্ভ সংকট মোকাবিলায় কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

ব্যবসায়িক পরিবেশের উন্নয়ন

ব্যবসায়ীদের আশা, ২০২৫ সালে দেশে ব্যবসা ও বিনিয়োগের পরিবেশের উন্নয়ন ঘটবে। সুদের হারের স্থিতিশীলতা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি এবং ব্যবসায়িক আস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

কৃষি খাতের উন্নয়ন

স্থানীয়ভাবে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি না পেলে খাদ্যপণ্যের আমদানির ওপর নির্ভরতা বাড়বে। আমদানির উৎস সীমিত হওয়ায় সরবরাহে ব্যাঘাত ঘটে, যা মূল্যস্ফীতি বাড়ায়। তাই স্থানীয় চাহিদা মেটাতে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধিতে মনোযোগ দিতে হবে।

সবমিলিয়ে, নতুন বছরটি বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য চ্যালেঞ্জের বছর হতে যাচ্ছে। সরকারের সময়োচিত সিদ্ধান্ত এবং কার্যকর পদক্ষেপই পারে অর্থনীতির এই সংকট নিরসন করতে।

repoter