ছবি: সংগৃহীত ছবি
নিউক্লিয়ার ফিউশন গবেষণায় নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে রাশিয়া। রসাটমের অধীনস্থ জাতীয় পরমাণু গবেষণা বিশ্ববিদ্যালয় মেফি’তে চালু হয়েছে সেন্টার ফর রিমোট পার্টিসিপেশন (CRP)। এই কেন্দ্রের মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা দূরে বসেই নিউক্লিয়ার ফিউশন গবেষণা পরিচালনা করতে পারবেন। CRP সরাসরি রসাটম কর্তৃক তৈরি একীভূত তথ্য প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে যুক্ত। একই দিনে মেফি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও গবেষকদের তৈরি টকামাক মডেল ‘MEPHIST-0’ এই প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে সংযুক্ত হয়েছে।
নিউক্লিয়ার ফিউশন গবেষণার জন্য তৈরি এই একীভূত তথ্য প্ল্যাটফর্ম রাশিয়ার শীর্ষ গবেষণা কেন্দ্রগুলোকে সংযুক্ত করেছে, যারা থার্মোনিউক্লিয়ার ফিউশন নিয়ে কাজ করছেন। এর মাধ্যমে অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো গবেষণার ফলাফল শেয়ার করতে এবং দূর থেকে গবেষণামূলক কাজ পরিচালনা করতে পারবে।
উদ্বোধনের দিন টকামাক এবং এর নিয়ন্ত্রণ কক্ষের কার্যক্রম নিয়ে বিশদ আলোচনা করা হয়। মেফি’র সিনিয়র গবেষক স্টেপান ক্রাট ব্যাখ্যা করেন কিভাবে রসাটম এবং রুশ বিজ্ঞান একাডেমির বিভিন্ন থার্মোনিউক্লিয়ার স্থাপনায় এক্সপেরিমেন্ট পরিচালিত হবে। উদ্বোধনী দিনে রাশিয়ার মস্কো, সেন্ট পিটার্সবার্গ, নভোসিবিরস্ক এবং ফ্রান্সের বিজ্ঞানীরা ভার্চুয়ালি টকামাকের প্রথম ‘পালস’ প্রত্যক্ষ করেন। মাত্র ২০ মিলিসেকেন্ড স্থায়ী এই এক্সপেরিমেন্টে প্লাজমার তাপমাত্রা ছিল ৫ লক্ষ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এক্সপেরিমেন্ট শেষে প্রাপ্ত ডেটা তাৎক্ষণিকভাবে তথ্য প্ল্যাটফর্মে শেয়ার করা হয়।
রসাটমের মহাপরিচালক আলেক্সি লিখাচেভ বলেন, “মেফি’র শিক্ষার্থীরা প্রথম থেকেই বিশ্বের বৃহৎ মেগা প্রকল্পগুলোতে অংশ নেওয়ার সুযোগ পাবেন। এটি তাদের জন্য বাস্তব দক্ষতা অর্জনের বড় একটি প্ল্যাটফর্ম।”
মেফি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেক্টর ভ্লাদিমির শিবচেংকা বলেন, “আমাদের লক্ষ্য কেবল টকামাক পরিচালনায় দক্ষ জনবল তৈরি করা নয়, বরং এমন ব্যক্তিদেরও প্রশিক্ষণ দেওয়া যারা নতুন ফিউশন ডিভাইস তৈরি করতে আগ্রহী। আমাদের শিক্ষার্থীরা ২০১৭ সালে টকামাক স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছিল, যা আজ সফলতা পেয়েছে। ‘মেফিস্ট-জিরো’ এর মাধ্যমে দেশের বাইরের গবেষকরাও দূর থেকে গবেষণায় অংশ নিতে পারবেন।”
এদিকে, ফ্রান্সের দক্ষিণাঞ্চলে থার্মোনিউক্লিয়ার এক্সপেরিমেন্টাল রিয়্যাক্টর নামে একটি আন্তর্জাতিক ফিউশন মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ চলছে। রাশিয়াসহ বিভিন্ন দেশ এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত। এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য সূর্যের ফিউশন প্রক্রিয়া অনুসরণ করে এনার্জি উৎপাদন, যা বিশ্বের এনার্জি চাহিদা মেটাতে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করবে।
repoter