
ছবি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ছবি : সংগৃহীত
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) বিকেলে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পক্ষ থেকে প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, নির্বাচন নিয়ে খুবই সুস্পষ্ট রোডম্যাপ প্রণয়ন করা হয়েছে। তিনি বলেন, ২০২৫ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের ৩০ জুনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে নির্দিষ্ট তারিখ নির্বাচন কমিশনই ঘোষণা করবে।
শফিকুল আলম আরও বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার শিক্ষাখাতে গুণগত পরিবর্তন আনতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর বদলি ও পদোন্নতিতে ঘুষ লেনদেন বন্ধ করতে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এছাড়া ক্লাস নাইন এবং ক্লাস টেনের পাঠ্যবই আধুনিকীকরণ এবং আইসিটি শিক্ষাকে বিশ্বমানের করতে দ্রুত উদ্যোগ নেওয়া হবে।
শিক্ষাখাতে সংস্কার নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, ইউনিভার্সিটি গ্রান্টস কমিশনের কাঠামোগত পরিবর্তন এনে এটি কেবলমাত্র ইউনিভার্সিটি কমিশন করা হবে। পাশাপাশি শিক্ষাখাতে বরাদ্দ বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে। শফিকুল আলম বলেন, “গত সরকার শিক্ষাখাতে পর্যাপ্ত বরাদ্দ না দিয়ে অপ্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করেছে। আমরা এই প্রবণতা পাল্টাতে চাই।”
এর আগে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ কে এম নাসির উদ্দীন সাংবাদিকদের জানান, নির্বাচন কমিশন সরকারের যে কোনো সময়সূচি অনুযায়ী নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রস্তুত। প্রধান উপদেষ্টা একটি সময়সীমা নির্ধারণ করেছেন, যা অনুসরণ করেই কমিশন কাজ করবে। তবে কমিশনের নিজস্ব কর্মপরিকল্পনা রয়েছে এবং তা অনুযায়ী কাজ চালিয়ে যাবে।
সিইসি বলেন, “নির্বাচনের সীমানা পুনঃনির্ধারণ হবে ন্যায্যতার ভিত্তিতে। অতীতে যদি কোনো অনিয়ম বা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সীমানা পুনঃনির্ধারণ হয়ে থাকে, তা সংশোধন করা হবে। তবে ২০০১ সালের সীমানায় নয়, বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় ন্যায্যতার ভিত্তিতে সীমানা নির্ধারণ করা হবে।”
নতুন ভোটার তালিকা প্রসঙ্গে সিইসি জানান, দুই মাস পর নতুন চূড়ান্ত ভোটার তালিকা পাওয়া যাবে। এরপর বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হবে। তিনি বলেন, “অনেক ভোটার মারা গেছেন, অনেক বিদেশি ভোটার হয়েছেন এবং ভোটারের ডুপ্লিকেশন হয়েছে—এসব তথ্য যাচাই করে সংশোধিত তালিকা প্রণয়ন করা হবে। সেই তালিকাই নির্বাচনের ভিত্তি হবে।”
আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশগ্রহণ বিষয়ে সিইসি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তিনি বলেন, “এটি একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। কমিশন এই বিষয়ে নিরপেক্ষ অবস্থান বজায় রাখবে।”
জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের বিষয়ে সিইসি স্পষ্ট করে বলেন, “জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করা হবে না। ব্যালট পেপারের মাধ্যমেই ভোট অনুষ্ঠিত হবে।”
স্থানীয় সরকার নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি জানান, প্রধান উপদেষ্টা মূলত জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে কথা বলেছেন। স্থানীয় সরকার নির্বাচন বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের মতামত অনুসারে সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে।
নির্বাচনের সময়সূচি এবং পরিকল্পনা নিয়ে সরকারের এই উদ্যোগ দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে ইতিবাচক সাড়া ফেলবে বলে সংশ্লিষ্টরা আশা প্রকাশ করেছেন।
repoter