ঢাকা,  শুক্রবার
১৯ ডিসেম্বর ২০২৫ , ০২:০৬ মিনিট

Donik Barta

শিরোনাম:

* জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধ: ওবায়দুল কাদেরসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল * গুলিবিদ্ধ শরিফ ওসমান হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, দেশে–বিদেশে উদ্বেগ * ঢাকা–দিল্লি সম্পর্কে নতুন করে উত্তেজনা, আজ চালু থাকছে ভারতীয় ভিসা কেন্দ্র * ৬৬ হাজার কোটি টাকার সম্পদ জব্দ, বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারে গতি আনছে সরকার * যুক্তরাষ্ট্রের ‘সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধ’ ফিরিয়ে আনছেন ট্রাম্প, সমালোচনার কেন্দ্রে ভেনেজুয়েলা অভিযান * পাবনার বেড়ায় স্পিডবোটে এসে বাজারে ডাকাতি, ব্যবসায়ীরা আতঙ্কিত * যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভেনেজুয়েলা অভিযান: মাদুরো সরকারের ওপর চাপ বাড়ছে * ট্রাম্পের ২৮ দফা শান্তি পরিকল্পনা: ইউক্রেন–রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধে নতুন জটিলতা * গুম ও মানবতাবিরোধী অভিযোগে ১৩ সেনা কর্মকর্তা ট্রাইব্যুনালে * বিএনপির ৪০টির বেশি আসনে মনোনয়নসংক্রান্ত অসন্তোষ, কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ব্যস্ত সমাধান খুঁজতে

নির্বাচনের লক্ষ্যে আপাতত আন্দোলন স্থগিত: বিএনপি

repoter

প্রকাশিত: ০৬:০১:১৮অপরাহ্ন , ১৯ এপ্রিল ২০২৫

আপডেট: ০৬:০১:১৮অপরাহ্ন , ১৯ এপ্রিল ২০২৫

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে আপাতত সরাসরি আন্দোলনের পথে যাচ্ছে না দলটি। তিনি আশা প্রকাশ করেন, জন আকাঙ্ক্ষা পূরণে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হবে।

শনিবার (১৯ এপ্রিল) বিকেল সোয়া তিনটায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ১২ দলীয় জোটের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা জানান।

বৈঠক শেষে নজরুল ইসলাম খান বলেন, “বর্তমান ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনই সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ হতে পারে না। আমরা আশাবাদী, জনগণের চাওয়াকে সম্মান জানিয়ে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে ভবিষ্যতে নির্বাচন হবে। সেই লক্ষ্যেই আমরা এগোচ্ছি।”

তিনি আরও বলেন, “বর্তমান শাসকগোষ্ঠী শুধু ভোট ডাকাতিতেই সীমাবদ্ধ নেই, তারা গণহত্যা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধেও লিপ্ত হয়েছে। এর সঠিক বিচার হওয়া উচিত।”

বিএনপির লিয়াঁজো কমিটির সদস্য হিসেবে তিনি জানান, চলমান রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট অংশীদারদের সঙ্গে নিয়মিত আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি, একক কোনো দল নয়, বরং দেশের জনগণ এবং রাজনৈতিক জোটগুলোর সম্মিলিত চেষ্টার মাধ্যমেই একটি গ্রহণযোগ্য সমাধানে পৌঁছানো সম্ভব হবে।”

বৈঠকে ১২ দলীয় জোটের শরিকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামান হায়দার, বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা প্রমুখ।

বৈঠকে বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, আগাম নির্বাচনের সম্ভাবনা, এবং আন্দোলনের ভবিষ্যৎ রূপরেখা নিয়ে আলোচনা হয় বলে জানা গেছে। নেতারা একমত হন যে, আন্দোলন কখন এবং কীভাবে হবে, তা সময় এবং পরিস্থিতি বিবেচনায় নির্ধারণ করা হবে।

বৈঠকের পরে বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়, জনগণের ভোটাধিকার রক্ষা, নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিসহ অন্যান্য সাংবিধানিক দাবিতে দলটি অটল থাকবে। তবে আপাতত তারা সরাসরি আন্দোলনের কর্মসূচিতে না গিয়ে রাজনৈতিক সমঝোতার পথেই অগ্রসর হতে আগ্রহী।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, “আমাদের মূল লক্ষ্য একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও সকলের অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। সেই নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করতেই আমরা জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলছি।”

তিনি বলেন, “বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন মানেই ভোটকেন্দ্র দখল, রাতের ভোট, ভোটারদের হয়রানি—এই চিত্র আমরা অতীতে দেখেছি। এবার আমরা চাই একটি আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হোক।”

বিএনপির এই নেতা বলেন, “আমরা জনগণের সঙ্গে আছি, থাকব। তবে কোনো অযথা রক্তপাত বা সংঘাতমূলক আন্দোলন নয়, বরং সচেতনভাবে এবং কৌশলে রাজনৈতিকভাবে এগোনোর সময় এসেছে।”

তিনি আরও বলেন, “জনগণের স্বার্থে আমরা আগেও ত্যাগ স্বীকার করেছি, এখনো করতে প্রস্তুত। আমাদের আন্দোলনের রূপরেখা কেবল স্লোগানের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়—আমরা বাস্তবসম্মত কর্মপরিকল্পনার মধ্য দিয়ে আগাতে চাই।”

বিএনপির নেতারা আশাবাদী, দেশের মানুষ পরিবর্তনের পক্ষে রয়েছে এবং সে পরিবর্তনের জন্য গণতান্ত্রিক পথেই অগ্রসর হবে। বৈঠকে উপস্থিত নেতারাও একমত হন যে, বিরোধী দলগুলোর মধ্যে ঐক্য জোরদার করা এবং বিদেশি কূটনৈতিক মহলের সঙ্গে সংলাপ আরও সক্রিয় করা প্রয়োজন।

আলোচনায় উঠে আসে, গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য বর্তমান সংসদ বাতিল করে একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। এ ব্যাপারে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মহলের সহযোগিতাও প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন নেতারা।

বৈঠকের শেষে নেতারা জানান, আগামীদিনে রাজনৈতিক কর্মসূচি কী হবে, তা জোটের সব শরিকের মতামত নিয়েই চূড়ান্ত করা হবে। আন্দোলনের পথে না গিয়ে আপাতত রাজনৈতিক সংলাপ ও কূটনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমে চাপ সৃষ্টি করাই তাদের মূল কৌশল।

বিএনপি আশা করছে, দেশের মানুষ গণতন্ত্র, সুশাসন ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষে থাকবে এবং তারই প্রতিফলন ভবিষ্যতের রাজনীতিতে দেখা যাবে।

repoter