ঢাকা,  শনিবার
১৯ এপ্রিল ২০২৫ , ১১:৫৯ মিনিট

Donik Barta

শিরোনাম:

* রাবি ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে একাধিক ভুল, শিক্ষার্থীদের পূর্ণ নম্বর দেয়ার ঘোষণা * এ্যানির আহ্বান, অবিলম্বে সব অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করতে হবে * ক্ষমতা বদলের নয়, কাঠামোগত পরিবর্তনের জন্যই জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থান: এনসিপি আহ্বায়ক * বাংলাবান্ধা সীমান্তে দেশের সর্বোচ্চ ফ্ল্যাগস্ট্যান্ড নির্মাণ শুরু * নারী বৈষম্য দূরীকরণে সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার * নির্বাচনের লক্ষ্যে আপাতত আন্দোলন স্থগিত: বিএনপি * খাগড়াছড়িতে অপহৃত শিক্ষার্থীদের উদ্ধারে যৌথ বাহিনীর অভিযান অব্যাহত * বাংলাদেশ-পাকিস্তান দ্বিপক্ষীয় বৈঠক: ১৫ বছর পর পুনঃশুরু সম্পর্কের নতুন দিগন্ত * তিন দিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম দ্বিগুণ ফুলবাড়ীতে, ভোগান্তিতে সাধারণ ক্রেতারা * আওয়ামী লীগের মতো দলে সাকিবের যোগ দেওয়া ঠিক হয়নি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব

নির্বাচনের লক্ষ্যে আপাতত আন্দোলন স্থগিত: বিএনপি

repoter

প্রকাশিত: ০৬:০১:১৮অপরাহ্ন , ১৯ এপ্রিল ২০২৫

আপডেট: ০৬:০১:১৮অপরাহ্ন , ১৯ এপ্রিল ২০২৫

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে আপাতত সরাসরি আন্দোলনের পথে যাচ্ছে না দলটি। তিনি আশা প্রকাশ করেন, জন আকাঙ্ক্ষা পূরণে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হবে।

শনিবার (১৯ এপ্রিল) বিকেল সোয়া তিনটায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ১২ দলীয় জোটের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা জানান।

বৈঠক শেষে নজরুল ইসলাম খান বলেন, “বর্তমান ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনই সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ হতে পারে না। আমরা আশাবাদী, জনগণের চাওয়াকে সম্মান জানিয়ে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে ভবিষ্যতে নির্বাচন হবে। সেই লক্ষ্যেই আমরা এগোচ্ছি।”

তিনি আরও বলেন, “বর্তমান শাসকগোষ্ঠী শুধু ভোট ডাকাতিতেই সীমাবদ্ধ নেই, তারা গণহত্যা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধেও লিপ্ত হয়েছে। এর সঠিক বিচার হওয়া উচিত।”

বিএনপির লিয়াঁজো কমিটির সদস্য হিসেবে তিনি জানান, চলমান রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট অংশীদারদের সঙ্গে নিয়মিত আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি, একক কোনো দল নয়, বরং দেশের জনগণ এবং রাজনৈতিক জোটগুলোর সম্মিলিত চেষ্টার মাধ্যমেই একটি গ্রহণযোগ্য সমাধানে পৌঁছানো সম্ভব হবে।”

বৈঠকে ১২ দলীয় জোটের শরিকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামান হায়দার, বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা প্রমুখ।

বৈঠকে বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, আগাম নির্বাচনের সম্ভাবনা, এবং আন্দোলনের ভবিষ্যৎ রূপরেখা নিয়ে আলোচনা হয় বলে জানা গেছে। নেতারা একমত হন যে, আন্দোলন কখন এবং কীভাবে হবে, তা সময় এবং পরিস্থিতি বিবেচনায় নির্ধারণ করা হবে।

বৈঠকের পরে বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়, জনগণের ভোটাধিকার রক্ষা, নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিসহ অন্যান্য সাংবিধানিক দাবিতে দলটি অটল থাকবে। তবে আপাতত তারা সরাসরি আন্দোলনের কর্মসূচিতে না গিয়ে রাজনৈতিক সমঝোতার পথেই অগ্রসর হতে আগ্রহী।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, “আমাদের মূল লক্ষ্য একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও সকলের অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। সেই নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করতেই আমরা জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলছি।”

তিনি বলেন, “বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন মানেই ভোটকেন্দ্র দখল, রাতের ভোট, ভোটারদের হয়রানি—এই চিত্র আমরা অতীতে দেখেছি। এবার আমরা চাই একটি আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হোক।”

বিএনপির এই নেতা বলেন, “আমরা জনগণের সঙ্গে আছি, থাকব। তবে কোনো অযথা রক্তপাত বা সংঘাতমূলক আন্দোলন নয়, বরং সচেতনভাবে এবং কৌশলে রাজনৈতিকভাবে এগোনোর সময় এসেছে।”

তিনি আরও বলেন, “জনগণের স্বার্থে আমরা আগেও ত্যাগ স্বীকার করেছি, এখনো করতে প্রস্তুত। আমাদের আন্দোলনের রূপরেখা কেবল স্লোগানের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়—আমরা বাস্তবসম্মত কর্মপরিকল্পনার মধ্য দিয়ে আগাতে চাই।”

বিএনপির নেতারা আশাবাদী, দেশের মানুষ পরিবর্তনের পক্ষে রয়েছে এবং সে পরিবর্তনের জন্য গণতান্ত্রিক পথেই অগ্রসর হবে। বৈঠকে উপস্থিত নেতারাও একমত হন যে, বিরোধী দলগুলোর মধ্যে ঐক্য জোরদার করা এবং বিদেশি কূটনৈতিক মহলের সঙ্গে সংলাপ আরও সক্রিয় করা প্রয়োজন।

আলোচনায় উঠে আসে, গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য বর্তমান সংসদ বাতিল করে একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। এ ব্যাপারে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মহলের সহযোগিতাও প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন নেতারা।

বৈঠকের শেষে নেতারা জানান, আগামীদিনে রাজনৈতিক কর্মসূচি কী হবে, তা জোটের সব শরিকের মতামত নিয়েই চূড়ান্ত করা হবে। আন্দোলনের পথে না গিয়ে আপাতত রাজনৈতিক সংলাপ ও কূটনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমে চাপ সৃষ্টি করাই তাদের মূল কৌশল।

বিএনপি আশা করছে, দেশের মানুষ গণতন্ত্র, সুশাসন ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষে থাকবে এবং তারই প্রতিফলন ভবিষ্যতের রাজনীতিতে দেখা যাবে।

repoter