
ছবি: ছবি: সংগৃহীত
নাটোর জেলার সদর থানার বড় হরিশপুর মহাশ্মশান ঘাটে চুরির ঘটনায় এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তি তরুণ কুমার দাস (৬০) দীর্ঘদিন ধরে মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন এবং শ্মশান ঘাটে অবস্থান করছিলেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। এ ঘটনায় কোনো সাম্প্রদায়িক সম্পৃক্ততা নেই বলে দাবি করেছে স্থানীয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
স্থানীয় পুলিশ জানায়, শনিবার মহাশ্মশান ঘাটের ভোগঘর থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় তরুণ কুমারের লাশ উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, ভোগঘরে চুরির সময় চোরদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি বা চিৎকার করার চেষ্টা করলে তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। নিহতের মুখ, হাত ও পা বাঁধা ছিল। ভোগঘর থেকে কিছু কাসার থালা চুরি হওয়ার তথ্যও পাওয়া গেছে।
নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহবুবর রহমান জানান, “মাদকাসক্তদের একটি দল চুরি করতে গিয়ে এই ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তবে হত্যার সব সম্ভাব্য কারণ তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।”
এদিকে, এই ঘটনাকে ঘিরে ভারতীয় গণমাধ্যমে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার অভিযোগ তোলা হলেও তা ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন স্থানীয় ব্যক্তিরা। শ্মশান কমিটির সাধারণ সম্পাদক সত্য নারায়ণ রায় টিপু বলেন, “তরুণ কুমার শ্মশান কমিটির সদস্য ছিলেন না। তিনি পুরোহিত বা সেবকও ছিলেন না। তার মানসিক অসুস্থতার বিষয়টি আমরা জানি। ঘটনাটিতে কোনো সাম্প্রদায়িক সম্পৃক্ততা নেই বলেই মনে করি।”
ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনশাসনেস (ইসকন) বাংলাদেশের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য হৃষীকেশ গৌরাঙ্গ দাস বলেন, “এই ঘটনাকে সাম্প্রদায়িক হত্যা বলে প্রচার করা দায়িত্বজ্ঞানহীন। এমন সংবাদের মাধ্যমে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হতে পারে।” তিনি আরও বলেন, “তরুণ কুমার ইসকনের কোনো সদস্য ছিলেন না।”
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং তাদের ভেরিফায়েড পেজ ‘সিএ প্রেস উইং ফ্যাক্টস’-এ প্রকাশিত এক পোস্টে দাবি করেছে, ভারতের সংবাদ সংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অফ ইন্ডিয়া (পিটিআই) যাচাই-বাছাই ছাড়া এ ঘটনার ভুল তথ্য প্রচার করেছে। পিটিআই-এর খবরে বলা হয়েছে, ঘটনাটি সাম্প্রদায়িক সহিংসতার অংশ। তবে সেই সংবাদে স্থানীয় প্রশাসন, হিন্দু নেতৃবৃন্দ বা ভিকটিমের কোনো আত্মীয়ের বক্তব্য নেয়া হয়নি।
স্থানীয় ধর্মীয় নেতা ও প্রশাসনের বক্তব্য অনুযায়ী, এটি একটি চুরির ঘটনা। তরুণ কুমার বহুদিন ধরে মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন এবং কোনো ধর্মীয় সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না।
নাটোর জেলা পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থলে চুরি ও হত্যার আলামত পরীক্ষা করা হয়েছে। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত দোষীদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।
repoter