ছবি: ছবি: সংগৃহীত
মুজিববর্ষ উদযাপনের নামে দেশের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, সরকারি দপ্তর, সংস্থা এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠান মিলে ১ হাজার ২৬১ কোটি টাকার বেশি ব্যয় করেছে। এই বিশাল অঙ্কের ব্যয় নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বুধবার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের ত্রয়োদশ বৈঠকে মুজিববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে ব্যয়ের বিস্তারিত হিসাব উপস্থাপন করা হয়। এ বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
মুজিববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে ২০১৮-১৯ থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবছর পর্যন্ত মোট ব্যয়ের হিসাব তুলে ধরেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের পাশাপাশি নির্বাচন কমিশন সচিবালয়, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, দুর্নীতি দমন কমিশন, জাতীয় সংসদ, মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট মিলে এ অর্থ ব্যয় করেছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছর থেকে এ খাতে নতুন বাজেট বরাদ্দ বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ঘোষিত মুজিববর্ষ উদযাপনের জন্য নেওয়া নানা কর্মসূচি করোনা মহামারির কারণে নির্ধারিত সময়ে সম্পন্ন করা সম্ভব না হওয়ায় সময়কাল একাধিকবার বাড়ানো হয়। প্রথমে ২০২১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত এবং পরে ২০২২ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত সময় বৃদ্ধি করা হয়। তবে এই দীর্ঘ সময় ধরে চলা কার্যক্রমে অধিক অর্থ ব্যয়ের পাশাপাশি নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় ‘মুজিববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে ব্যয়িত অর্থের হিসাব প্রণয়ন’ শীর্ষক একটি চিঠি ৫৯টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সিনিয়র সচিব ও সচিবসহ রাষ্ট্রপতির সামরিক সচিব, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার এবং সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলসহ ৬৩ জন কর্মকর্তাকে পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে ছক মোতাবেক ৬ বছরের ব্যয়ের বিস্তারিত বিবরণ ১২ নভেম্বর ২০২৪ তারিখের মধ্যে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, মুজিববর্ষ উপলক্ষে ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত কর্মসূচি পালিত হয়। সরকারি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানও এই উদযাপনে অংশ নেয়। তবে ব্যয়ের খাত নিয়ে স্বচ্ছতার অভাব এবং বিভিন্ন জায়গায় আর্থিক অনিয়ম ও অপচয়ের অভিযোগ উঠছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী স্মরণীয় করে রাখতে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ১৭ মার্চ পর্যন্ত সময়কে মুজিববর্ষ হিসেবে ঘোষণা করে সরকার। তবে মুজিববর্ষ উদযাপন কার্যক্রমে ব্যয়ের বিশাল অঙ্ক নিয়ে এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে। এটি দেশের আর্থিক স্বচ্ছতা এবং সরকারের বিভিন্ন বিভাগের পরিচালনায় জবাবদিহিতার বিষয় নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে।
repoter