ঢাকা,  রবিবার
২৭ এপ্রিল ২০২৫ , ১২:৩৩ মিনিট

Donik Barta

শিরোনাম:

* অবৈধ নির্বাচনকে বৈধতা দেওয়া হচ্ছে: স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ * ইরানের বন্দর আব্বাসে ভয়াবহ বিস্ফোরণ, আহত ৫০০ জনের বেশি * যান্ত্রিক ত্রুটিতে মেট্রোরেল চলাচল সাময়িক বন্ধ * গ্রাম ও শহরে সমানভাবে সহনীয় থাকবে লোডশেডিং: বিদ্যুৎ উপদেষ্টা * অন্যায় প্রতিহত করে ন্যায় প্রতিষ্ঠার আহ্বান জামায়াত নেতা মুজিবুর রহমানের * ভারতের যেকোনো আগ্রাসনের জবাবে সর্বাত্মক যুদ্ধ হবে: হুঁশিয়ারি পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর * মস্কোর গাড়ি বিস্ফোরণে রুশ জেনারেল নিহত, তদন্তে জোর * বিসিবি সভাপতির সঙ্গে বৈঠকের পর ক্ষোভ প্রকাশ তামিমের * ‘ভারত চোখ রাঙালে অতীতের মতোই জবাব পাবে’ — পহেলগাঁও হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করল পাকিস্তান * তামিমদের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ

মস্কোর গাড়ি বিস্ফোরণে রুশ জেনারেল নিহত, তদন্তে জোর

repoter

প্রকাশিত: ০৬:৫২:৫৮অপরাহ্ন , ২৫ এপ্রিল ২০২৫

আপডেট: ০৬:৫২:৫৮অপরাহ্ন , ২৫ এপ্রিল ২০২৫

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: ছবি: সংগৃহীত

মস্কোর কাছে একটি গাড়ি বিস্ফোরণে রাশিয়ার এক জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের সঙ্গে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বৈঠকের দিনেই এই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন অনুযায়ী, নিহত ওই সামরিক কর্মকর্তার নাম লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইয়ারোস্লাভ মোসকালিক। তিনি রুশ সশস্ত্র বাহিনীর জেনারেল স্টাফের প্রধান অপারেশন ডিরেক্টরেটের উপ-প্রধান ছিলেন।

রুশ তদন্ত কমিটি জানিয়েছে, মস্কোর উপকণ্ঠে বালাশিখা নামক অঞ্চলে পার্ক করে রাখা একটি গাড়িতে বিস্ফোরক স্থাপন করে মোসকালিককে হত্যা করা হয়। তার নিজস্ব ভক্সওয়াগন গাড়িটির ভেতরেই এই বিস্ফোরণ ঘটে। ঘটনাটি তদন্তে রাশিয়ার সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলি হত্যা ও অবৈধ বিস্ফোরক পরিবহনের অভিযোগে আনুষ্ঠানিকভাবে তদন্ত শুরু করেছে।

বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই ছিল যে গাড়িটি মুহূর্তের মধ্যে দগ্ধ হয়ে যায়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবি ও ভিডিওতে দেখা গেছে, আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়া গাড়ির ধ্বংসাবশেষ এবং তার আশপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ধাতব টুকরো। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ইজভেস্তিয়া একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে যেখানে দেখা যায়, একজন ব্যক্তি গাড়ির দিকে এগিয়ে যাওয়ার সময় হঠাৎ বিস্ফোরণ ঘটে।

তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, গাড়িটির নিচে একটি ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস বা আইইডি স্থাপন করা হয়েছিল, যার ভেতরে ধাতব টুকরো ভর্তি ছিল। বিস্ফোরকটি ট্রিগারের মাধ্যমে সক্রিয় করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে, এই বিস্ফোরণ পরিকল্পিত ছিল এবং বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির উদ্দেশ্যে এটি বানানো হয়েছিল।

ঘটনার পর রুশ নিরাপত্তা সংস্থাগুলো দ্রুত এলাকা ঘিরে ফেলে এবং বিস্ফোরণের ধরন ও সম্ভাব্য জড়িতদের খুঁজে বের করার জন্য অভিযান শুরু করে। প্রাথমিকভাবে হামলার পেছনে কারা জড়িত, সে বিষয়ে নিশ্চিত কোনো তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। তবে রুশ কর্মকর্তারা মনে করছেন, এটি পূর্ববর্তী কিছু হামলার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ, যেগুলোর দায় ইউক্রেন স্বীকার করেছিল।

জেনারেল মোসকালিক ছিলেন রাশিয়ার সামরিক দপ্তরের একজন গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা। তিনি ২০১৫ সালে ইউক্রেন সংকটের সময় ‘নরম্যান্ডি ফর্ম্যাট’ আলোচনায় রাশিয়ার পক্ষে সামরিক প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এই আলোচনায় ইউক্রেন, রাশিয়া, জার্মানি ও ফ্রান্স অংশগ্রহণ করেছিল। ২০২১ সালে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তাকে লেফটেন্যান্ট জেনারেল পদে উন্নীত করেন।

এই বিস্ফোরণের ঘটনা কেবল রাশিয়ার অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার প্রশ্নই তুলে দেয়নি, বরং তা রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্র সাম্প্রতিক কূটনৈতিক সম্পর্কেও ছায়া ফেলতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কারণ, একই দিনেই ক্রেমলিনে পুতিন ও ট্রাম্পের বিশেষ দূতের মধ্যে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হয়েছিল, যেখানে নিরাপত্তা ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নিয়ে আলোচনা হয়।

রাশিয়ার অভ্যন্তরে এমন জ্যেষ্ঠ একজন সামরিক কর্মকর্তার এই ধরনের মৃত্যু দেশটির নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতা এবং জঙ্গি হামলার আশঙ্কাকে আরও জোরালো করেছে। রুশ প্রশাসন এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে দ্রুত পদক্ষেপ নেবে বলে জানিয়েছে। তবে এই হত্যাকাণ্ড আন্তর্জাতিকভাবে নতুন করে আলোচনা ও উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে।

ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে এখন গোটা রাশিয়া জুড়ে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনী সম্ভাব্য অন্য হামলার ঝুঁকি মাথায় রেখে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় নজরদারি বাড়িয়েছে। মোসকালিকের মৃত্যু শুধু সামরিক দপ্তরের জন্য নয়, রাশিয়ার রাজনৈতিক পরিমণ্ডলেও এক বড় ধরনের আঘাত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

এই বিস্ফোরণের দায় এখনো কেউ স্বীকার করেনি। তবে রুশ কর্মকর্তারা এর পেছনে বিদেশি শক্তির মদদে পরিচালিত একটি চক্রের হাত থাকতে পারে বলে সন্দেহ করছেন। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত রাশিয়া বিষয়টি নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো আন্তর্জাতিক অভিযোগ আনছে না, তবে এ ধরনের হামলা ভবিষ্যতে আরও তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

repoter