ঢাকা,  শুক্রবার
১৯ ডিসেম্বর ২০২৫ , ০৩:৪৩ মিনিট

Donik Barta

শিরোনাম:

* জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধ: ওবায়দুল কাদেরসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল * গুলিবিদ্ধ শরিফ ওসমান হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, দেশে–বিদেশে উদ্বেগ * ঢাকা–দিল্লি সম্পর্কে নতুন করে উত্তেজনা, আজ চালু থাকছে ভারতীয় ভিসা কেন্দ্র * ৬৬ হাজার কোটি টাকার সম্পদ জব্দ, বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারে গতি আনছে সরকার * যুক্তরাষ্ট্রের ‘সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধ’ ফিরিয়ে আনছেন ট্রাম্প, সমালোচনার কেন্দ্রে ভেনেজুয়েলা অভিযান * পাবনার বেড়ায় স্পিডবোটে এসে বাজারে ডাকাতি, ব্যবসায়ীরা আতঙ্কিত * যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভেনেজুয়েলা অভিযান: মাদুরো সরকারের ওপর চাপ বাড়ছে * ট্রাম্পের ২৮ দফা শান্তি পরিকল্পনা: ইউক্রেন–রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধে নতুন জটিলতা * গুম ও মানবতাবিরোধী অভিযোগে ১৩ সেনা কর্মকর্তা ট্রাইব্যুনালে * বিএনপির ৪০টির বেশি আসনে মনোনয়নসংক্রান্ত অসন্তোষ, কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ব্যস্ত সমাধান খুঁজতে

মার্কিন আদালতে ঘুস ও প্রতারণার মামলায় অভিযুক্ত আদানি

repoter

প্রকাশিত: ০১:১৫:৫২অপরাহ্ন , ২২ নভেম্বর ২০২৪

আপডেট: ০১:১৫:৫২অপরাহ্ন , ২২ নভেম্বর ২০২৪

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: ছবি: সংগৃহীত

ভারতের ধনকুবের এবং আদানি গ্রুপের কর্ণধার গৌতম আদানি ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক ফেডারেল আদালতে ঘুস এবং প্রতারণার অভিযোগ আনা হয়েছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, ভারতের সরকারি কর্মকর্তাদের ঘুস দিয়ে বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ আদায়ের পাশাপাশি বিনিয়োগকারীদের কাছে তথ্য গোপন করেছেন তারা। এ বিষয়ে গৌতম আদানি এবং তার সহযোগী সাগর আদানির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি হয়েছে।

এদিকে, বাংলাদেশের সঙ্গে আদানি পাওয়ারের বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি নিয়ে দীর্ঘদিনের সমালোচনা নতুন করে তীব্র হয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, মার্কিন আদালতের এই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের জন্য অসম এই চুক্তি পুনর্বিবেচনার সুযোগ তৈরি হতে পারে।

মার্কিন আদালতের অভিযোগে বলা হয়েছে, আদানি গ্রিন এনার্জির নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ পেতে ২০২০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে ভারতীয় সরকারি কর্মকর্তাদের ২৫ কোটি ডলার ঘুস দিয়েছেন গৌতম আদানি ও তার সহযোগীরা। প্রকল্পটি থেকে ২০ বছরে প্রায় ২০০ কোটি ডলারের মুনাফা আসার কথা। তবে, আদানি গ্রুপ মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে এই প্রকল্পের জন্য ৩০০ কোটি ডলারের বেশি ঋণ এবং বন্ড সংগ্রহ করে।

২০১৭ সালে আদানি পাওয়ারের সঙ্গে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) একটি বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি করে, যার মেয়াদ ২৫ বছর। ঝাড়খণ্ডের গড্ডায় নির্মিত ১৬০০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে এই বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হলেও চুক্তির শর্ত নিয়ে সমালোচনা অব্যাহত রয়েছে।

বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করার পর থেকেই বিল পরিশোধ নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়। বকেয়া বিল পরিশোধ না হওয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধের হুমকিও দেয় আদানি পাওয়ার। বিপিডিবির তথ্য অনুযায়ী, আদানি পাওয়ারের বকেয়া পরিমাণ ৭৩ কোটি ২০ লাখ ডলার, যা প্রতি মাসে ১০০ মিলিয়ন ডলার করে পরিশোধের চেষ্টা চলছে।

বিভিন্ন বিশ্লেষক এবং খাত সংশ্লিষ্টরা আদানি গ্রুপের সঙ্গে করা এই বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তিকে অসম এবং বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী বলে অভিহিত করেছেন। সম্প্রতি বাংলাদেশের উচ্চ আদালত চুক্তিটি পুনর্বিবেচনার নির্দেশনা দিয়েছে। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান জানিয়েছেন, সরকার চুক্তিটি পর্যালোচনার জন্য একটি কমিটি গঠন করেছে। চুক্তির কোনো শর্ত যদি দেশের স্বার্থবিরোধী প্রমাণিত হয়, তবে তা বাতিলেরও সম্ভাবনা রয়েছে।

মার্কিন আদালতে আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে মামলাটি বাংলাদেশের জন্য ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, "আদানির বিরুদ্ধে প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এটি বাংলাদেশের বিদ্যুৎ চুক্তি বাতিলের জন্য একটি ভালো নজির হতে পারে। আন্তর্জাতিক আদালতে গেলে মার্কিন মামলার তথ্য বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে সহায়ক হবে।"

মার্কিন আদালতের এই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আদানি গ্রুপের পক্ষ থেকে অভিযোগগুলোকে ভিত্তিহীন বলে দাবি করা হয়েছে। গ্রুপটি জানিয়েছে, সম্ভাব্য সব ধরনের আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তবে, মামলার খবর প্রকাশের পর আদানি গ্রুপের শেয়ারদর একদিনে ২৭ বিলিয়ন ডলার কমে গেছে।

বিদ্যুৎ খাতের চুক্তি নিয়ে বাংলাদেশের সরকারের গৃহীত পুনর্বিবেচনা উদ্যোগ এবং উচ্চ আদালতের নির্দেশনা আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছে। আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে আনা মার্কিন আদালতের মামলাটি বাংলাদেশের স্বার্থ সুরক্ষায় একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

repoter