
ছবি: ছবি: সংগৃহীত
গভীর সমুদ্রে নোঙর করা মাদার ভেসেল থেকে লাইটার জাহাজের মাধ্যমে পণ্য পরিবহনের প্রক্রিয়াকে কাজে লাগিয়ে একদল অসাধু ব্যবসায়ী বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করছে। লাইটার জাহাজে পণ্য বোঝাই করার পর সেগুলো দিনের পর দিন সমুদ্রে ভাসিয়ে রেখে তারা বাজার অস্থির করে তোলে। এরপর পণ্যের দাম বাড়লে সেগুলো খালাস করে বিপুল মুনাফা করে এই সিন্ডিকেট। এই অপকর্ম বন্ধ করতে সরকার ২০১৩ সাল থেকে নীতিমালা প্রণয়নের চেষ্টা চালালেও লাইটার জাহাজ মালিক ও আমদানিকারকদের বিরোধিতায় বারবার ব্যর্থ হচ্ছে।
২০২১ সালে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় একটি গেজেট জারি করে নীতিমালা বাধ্যতামূলক করলেও লাইটার জাহাজ মালিকরা হাইকোর্টে রিট করে তা স্থগিত করে। সরকারের আপিলে আপিল বিভাগ হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখায় নীতিমালা কার্যকর করা যায়নি। ২০২৩ সালের আগস্টে নতুন নীতিমালা চালু করা হয়, যাতে লাইটার জাহাজগুলোকে দুই থেকে সাত দিনের মধ্যে পণ্য খালাস করতে বাধ্য করা হয়। কিন্তু এবারও আদালতে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে নীতিমালা।
গত নভেম্বরে ১৭টি লাইটার জাহাজ কোম্পানি ও আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান হাইকোর্টে রিট করে নীতিমালা স্থগিত করে। আদালত নীতিমালা বাতিলের কারণ জানতে চেয়ে রুল জারি করেন। তবে নৌপরিবহন অধিদপ্তর হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করতে আপিল বিভাগে আবেদন করে। গত ৫ মার্চ আপিল বিভাগ হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করে নীতিমালা কার্যকর করার পথ প্রশস্ত করেন।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের পক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, এই নীতিমালার মাধ্যমে বাজার অরাজকতা, একচেটিয়া আধিপত্য এবং কায়েমী স্বার্থ থেকে মুক্ত হয়েছে। অন্যদিকে, লাইটার জাহাজ মালিকদের দাবি, এই নীতিমালা একটি ছোট সিন্ডিকেটের স্বার্থ রক্ষার জন্য তৈরি করা হয়েছে, যা প্রতিযোগিতাকে দমন করে কিছু মানুষের মুনাফা নিশ্চিত করবে।
কো-অর্ডিনেশন সেলের কনভেনার সাঈদ আহমেদ বলেন, নীতিমালা বাস্তবায়নের পর সমুদ্রে আটকে থাকা লাইটার জাহাজের সংখ্যা কমেছে। নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, কো-অর্ডিনেশন সেলের বরাদ্দ ছাড়া কোনো লাইটার জাহাজ পণ্য পরিবহন করতে পারবে না। তবে নিজস্ব লাইটার জাহাজ থাকা প্রতিষ্ঠানগুলো শর্তসাপেক্ষে অনুমতি পাবে।
এই আইনি লড়াইয়ে সরকারের জয়ী হওয়া জরুরি, কারণ লাইটার জাহাজ সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য বন্ধ না হলে সাধারণ মানুষের পকেট কাটা অব্যাহত থাকবে।
repoter