ঢাকা,  মঙ্গলবার
১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ , ০৭:৫৩ মিনিট

Donik Barta

শিরোনাম:

* জাতীয়করণের দাবিতে শিক্ষকদের মিছিল, পুলিশের জলকামান ও সাউন্ড গ্রেনেডে ছত্রভঙ্গ * শুল্ক কমাতে হবে, নইলে ভারতের ব্যবসা ঝুঁকিতে পড়বে: যুক্তরাষ্ট্রের সতর্কবার্তা * জনসমর্থন ছাড়া গণতন্ত্র টিকবে না: আমীর খসরু * মানুষ জন্মগতভাবে উদ্যোক্তা: প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস * জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলের বৈঠকে জুলাই সনদের বাস্তবায়ন নিয়ে আলোচনা * যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ সামরিক মহড়া নিয়ে উত্তর কোরিয়ার কড়া হুঁশিয়ারি * শহীদ মিনারে ফরিদা পারভীনের প্রতি সর্বস্তরের মানুষের শেষ শ্রদ্ধা * সরকার চায় ‘মব সংস্কৃতি’ টিকে থাকুক: রুমিন ফারহানা * যাবজ্জীবন সাজার মেয়াদ কমানোর চিন্তায় সরকার * চুনারুঘাট থানার ওসি পুলিশের দায়িত্ব থেকে ক্লোজড, বাসা তল্লাশির ভিডিও ভাইরাল হয়ে বিতর্ক

ক্রিকেটারদের নিরাপত্তা প্রশ্নে আপসহীন বিসিসিআই, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি নিয়ে সমাধানের আশায়

repoter

প্রকাশিত: ০২:৪৭:০৩অপরাহ্ন , ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪

আপডেট: ০২:৪৭:০৩অপরাহ্ন , ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: ছবি: সংগৃহীত

আগামী বছরের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি আয়োজন নিয়ে চলমান জটিলতার সমাধানের আশাবাদ ব্যক্ত করেছে ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড (বিসিসিআই)। তবে তারা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে, খেলোয়াড়দের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে কোনো ধরনের ঝুঁকি নিতে রাজি নয়। বিসিসিআইয়ের সহ-সভাপতি রাজীব শুক্লা এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) দৃষ্টি আকর্ষণ করে আশাবাদ প্রকাশ করেছেন যে এই সমস্যার দ্রুত সমাধান হবে এবং প্রতিযোগিতাটি নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হবে।

রাজীব শুক্লা বলেন, "আমাদের কাছে ক্রিকেটারদের নিরাপত্তা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কোনো পরিস্থিতিতেই আমরা ঝুঁকি নিতে পারি না। আমরা আইসিসি এবং পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) মধ্যে চলমান আলোচনার প্রতি আস্থা রাখছি। আমরা আশাবাদী, এই সমস্যার একটি ইতিবাচক সমাধান মিলবে।" বিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে, তারা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি হাইব্রিড মডেলে আয়োজনের পক্ষে। এর আগে গত বছর এশিয়া কাপও একই মডেলে অনুষ্ঠিত হয়েছিল, যেখানে ম্যাচগুলো পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কায় ভাগ করে আয়োজন করা হয়।

২০২৫ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আয়োজক দেশ পাকিস্তান। সেরা আটটি দলকে নিয়ে ওয়ানডে ফরম্যাটের এই টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু ভারত-পাকিস্তানের কূটনৈতিক এবং রাজনৈতিক সম্পর্কের অবনতির কারণে টুর্নামেন্টটি নিয়ে তৈরি হয়েছে এক অনিশ্চয়তা। বিসিসিআই আগেই রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলিদের মতো শীর্ষ ক্রিকেটারদের পাকিস্তানে পাঠানোর ব্যাপারে আপত্তি জানিয়েছে। এর পেছনে প্রধান কারণ হিসেবে তারা উল্লেখ করেছে নিরাপত্তা ইস্যুকে।

২০০৮ সালের মুম্বাই হামলার পর থেকে ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক ক্রিকেট সিরিজ বন্ধ রয়েছে। দুই দেশের দল একে অপরের মুখোমুখি হয় শুধুমাত্র বহুদলীয় আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে। মুম্বাই হামলার ঘটনার পর নিরাপত্তার শঙ্কায় ভারতীয় দলকে পাকিস্তানে পাঠানো বন্ধ করে দেয় বিসিসিআই। এমনকি গত বছর এশিয়া কাপের সময়ও ভারতীয় দল পাকিস্তানে সফর করতে অস্বীকৃতি জানায়। তখন টুর্নামেন্টের ম্যাচগুলো পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কার মধ্যে ভাগ করে আয়োজন করা হয়। এবারও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ক্ষেত্রে বিসিসিআই চায় একই ধরনের হাইব্রিড মডেল অনুসরণ করা হোক।

অন্যদিকে, বিসিসিআইয়ের কঠোর অবস্থানের বিপরীতে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) গত বছর ভারতে অনুষ্ঠিত ওয়ানডে বিশ্বকাপে তাদের দলকে পাঠিয়েছিল। বাবর আজমের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান দল ভারতের মাটিতে বিশ্বকাপে অংশ নেয়। এ বিষয়টিকে সামনে এনে আইসিসির পক্ষ থেকেও একটি ভারসাম্যপূর্ণ সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে পাকিস্তান সফরে ভারতীয় দলের অংশগ্রহণ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত কী হবে, তা এখনও অনিশ্চিত।

বিসিসিআইয়ের দাবি, ক্রিকেটারদের নিরাপত্তার বিষয়টি কোনোভাবেই উপেক্ষা করা যাবে না। রাজীব শুক্লা এ বিষয়ে বলেন, "চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি আয়োজনের জন্য হাইব্রিড মডেলই সবচেয়ে যুক্তিসঙ্গত সমাধান। আইসিসি এই ইস্যুটি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং তারা পিসিবির সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা চাই, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কোনো ধরনের তিক্ততা ছাড়াই একটি সমঝোতা হোক।"

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আইসিসির সামনে একটি বড় চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির মতো গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্ট সফলভাবে আয়োজন করতে হলে ভারত এবং পাকিস্তান উভয়ের মধ্যেই পারস্পরিক বোঝাপড়া জরুরি। তবে রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে দুই দেশের ক্রিকেটীয় সম্পর্ক যেভাবে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে, তা এই আয়োজনের পথে বড় অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ক্রিকেটবিশ্বে এখন আলোচনা চলছে, আইসিসি শেষ পর্যন্ত কীভাবে এই সমস্যার সমাধান করবে। তারা কি ভারতীয় দলকে পাকিস্তানে পাঠাতে রাজি করাতে পারবে, নাকি হাইব্রিড মডেলে টুর্নামেন্ট আয়োজনের মাধ্যমে একটি সমাধান খুঁজে নেবে? এসব প্রশ্নের উত্তর মিলবে আগামী দিনগুলোতে। তবে বিসিসিআইয়ের স্পষ্ট বার্তা হলো— খেলোয়াড়দের নিরাপত্তা কোনো পরিস্থিতিতেই উপেক্ষা করা হবে না।

এই পরিস্থিতিতে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে আইসিসি, বিসিসিআই এবং পিসিবির মধ্যকার আলোচনার উপর। ক্রিকেট অনুরাগীরা আশায় আছেন, দুই দেশের মধ্যকার ঐতিহাসিক দ্বন্দ্বকে পেছনে ফেলে একটি বন্ধুত্বপূর্ণ সমাধানের মাধ্যমে আগামী বছরের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি সফলভাবে সম্পন্ন হবে।

repoter