
ছবি: ফাইল ছবি
বাংলাদেশে এখনও চার মাস চলার মতো বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। তিনি জানিয়েছেন, রিজার্ভ নিয়ে ভয়ের কোনো কারণ নেই, তবে সুশাসন বজায় রাখা এবং সতর্কতা অবলম্বন করা অত্যন্ত জরুরি। রাজধানীর একটি হোটেলে শনিবার অনুষ্ঠিত "ব্র্যান্ডিং বাংলাদেশ" শীর্ষক অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন তিনি।
গভর্নর বলেন, গত পাঁচ মাসে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে ৩ বিলিয়ন ডলার। একই সময়ে রফতানি আয় বেড়েছে ২.৫ বিলিয়ন ডলার, যা দেশের অর্থনীতির স্থিতিশীলতা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার ফলে অর্থ পাচার কার্যত বন্ধ হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
ড. আহসান এইচ মনসুর জানান, ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স আনতে সরকারের দেওয়া ২ দশমিক ৫ শতাংশ প্রণোদনার ফলে বছরে ৭ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হলেও এর সুফল পাওয়া যাচ্ছে। প্রবাসীদের ব্যাংকিং চ্যানেল ব্যবহার করে সরাসরি দেশে অর্থ পাঠানোর আহ্বান জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, রেমিট্যান্স প্রবাহের ক্ষেত্রে সৌদি আরবকে পেছনে ফেলে দুবাই শীর্ষে উঠে এসেছে, যা দীর্ঘমেয়াদে ভালো লক্ষণ নয়। কারণ সৌদি আরব থেকে আসা অর্থ প্রথমে দুবাই হয়ে বাংলাদেশে আসছে। এ প্রক্রিয়ায় কিছু প্রতিষ্ঠান মুদ্রা বিনিময় হারে কারসাজি করার চেষ্টা করছে বলে গভর্নর আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
এদিকে সদ্য বিদায়ী ডিসেম্বর মাসে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স এসেছে ২৬৩ কোটি ৮৭ লাখ মার্কিন ডলার, যা দেশের ইতিহাসে এক মাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্সের রেকর্ড। এর আগে একক মাসে এত বেশি পরিমাণ রেমিট্যান্স বাংলাদেশে আসেনি।
দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে আরও মন্তব্য করতে গিয়ে গভর্নর বলেন, রাজনৈতিক অস্থিরতা সত্ত্বেও রেমিট্যান্স প্রবাহ স্মরণকালের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। প্রবাসীদের ব্যাংকিং চ্যানেলে অর্থ পাঠানোর উদ্যোগকে আরও কার্যকর করার ওপর তিনি গুরুত্ব আরোপ করেন।
রিজার্ভের বর্তমান পরিস্থিতি এবং রেমিট্যান্স প্রবাহের এই ইতিবাচক গতিপথ বাংলাদেশের অর্থনীতির স্থিতিশীলতা ধরে রাখার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করছে। তবে সুশাসন বজায় রাখা এবং সতর্ক দৃষ্টিভঙ্গি অবলম্বন করার মাধ্যমে এই উন্নতি ধরে রাখার আহ্বান জানিয়েছেন গভর্নর।
repoter