
ছবি: ছবি: সংগৃহীত
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক কার্যালয় (ওএইচসিএইচআর) বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে সাংবাদিক, আইনজীবী, ট্রেড ইউনিয়নকর্মী, সুশীল সমাজকর্মী এবং মানবাধিকার সুরক্ষাকর্মীদের বিরুদ্ধে করা মামলাগুলো প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছে। সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জাতিসংঘের সংস্থাটি মত প্রকাশের স্বাধীনতা, শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের আলোকে এসব মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানায়।
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষকে সাংবাদিক, রাজনৈতিক দলের সমর্থক, ট্রেড ইউনিয়ন কর্মী, নাগরিক সমাজের কর্মী এবং মানবাধিকার সুরক্ষা কর্মীদের ওপর যেকোনো বেআইনি নজরদারি বন্ধ করতে নিরাপত্তা বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। এছাড়াও, প্রতিশোধমূলক সহিংসতা থেকে তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ এবং ব্যক্তিগত সম্পত্তির ওপর আক্রমণ ও নাগরিক ক্ষতির দাবিসহ এ ধরনের হামলার অপরাধীদের তদন্ত ও বিচারের আহ্বান জানানো হয়েছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয় রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী কর্তৃক নাগরিকদের ওপর নজরদারি সম্পর্কে একটি স্বাধীন গণতদন্ত শুরু করার এবং তদন্তের ফলাফল প্রকাশ করার প্রস্তাব করেছে। এছাড়াও, জাতীয় টেলিযোগাযোগ পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র বন্ধ করা এবং নজরদারি কার্যক্রম পরিচালনাকারী নিরাপত্তা সংস্থাগুলোকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন কঠোরভাবে মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ওএইচসিএইচআর বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইনের অস্পষ্ট বিধানগুলো সংশোধন করার সুপারিশ করেছে, যা নিয়ন্ত্রণহীন নজরদারির ভিত্তি হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছিল। প্রতিবেদনে ইন্টারনেট বন্ধ বা নির্দিষ্ট ওয়েবসাইট ও অ্যাপ্লিকেশন ব্লক করার বিষয়ে সুস্পষ্ট মানদণ্ড, স্বচ্ছতা এবং উপযুক্ত বিচারিক তত্ত্বাবধান নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
এছাড়াও, ২০০৯ সালের জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইন সংশোধন করে কমিশনকে প্যারিস নীতিমালা অনুযায়ী সম্পূর্ণ স্বাধীন ও কার্যকরভাবে কাজ করার সুযোগ দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদনে নাগরিক সমাজসহ সব প্রাসঙ্গিক স্টেকহোল্ডারদের সম্পৃক্ত করে কমিশনের স্বাধীন সদস্যদের নিয়োগ এবং কমিশনকে প্রয়োজনীয় আর্থিক ও মানবসম্পদ সরবরাহের আহ্বান জানানো হয়েছে।
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে সাইবার নিরাপত্তা আইন ২০২৩, অফিশিয়াল গোপনীয়তা আইন, সন্ত্রাসবিরোধী আইন এবং দণ্ডবিধির ফৌজদারি মানহানির বিধান অনুযায়ী সমালোচনামূলক মিডিয়া রিপোর্টিং বা নাগরিক ও রাজনৈতিক ভিন্নমত দমন করার জন্য ব্যবহৃত ফৌজদারি বিধানের অধীনে গ্রেপ্তার, তদন্ত বা বিচারের ওপর তাৎক্ষণিক স্থগিতাদেশ আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে।
সূত্র: বাসস
repoter