ছবি: পূজা চেরি। ছবি: সংগৃহীত
ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেত্রী পূজা চেরিকে নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে এক নতুন গুজব ছড়িয়ে পড়েছে। বলা হচ্ছে, তিনি বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের (মহিলা) অমুসলিম শাখায় আইন ও মানবাধিকার সম্পাদকের দায়িত্ব নিয়েছেন। এ খবর ছড়িয়ে পড়ার পর তা দ্রুত আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়।
সোমবার (১০ ডিসেম্বর) রাতে পূজা চেরি তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এই গুজব নিয়ে মুখ খোলেন। পোস্টে তিনি এসব অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে উল্লেখ করেন।
তিনি লেখেন, “মানুষ এমন অবান্তর পোস্ট করে কীভাবে, আমার বোধগম্য নয়। সাধারণত কোনো গুজব নিয়ে আমি মাথা ঘামাই না। তারকাদের নিয়ে নানা গুজব ছড়ানো স্বাভাবিক বিষয়। কিন্তু আজকে যে বা যারা এই গুজবটি ছড়িয়েছে, তা নিয়ে আসলে কিছু বলা উচিত। এটি শুধু গুজব থাকলে কোনো বিষয় ছিল না, কিন্তু এখানে ধর্মকে জড়ানো হয়েছে। এমন কাজ ধর্ম, জাতি ও বর্ণকে অসম্মান করে।”
গুজবের তীব্র নিন্দা
পূজা চেরি এই মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর কারণে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, "আমি একজন অভিনয় শিল্পী। বাংলা চলচ্চিত্রকে ভালোবাসি এবং এটাই আমার পেশা। আমি সবসময় আমার পেশাকে সম্মান করি এবং উপভোগ করি। কিন্তু এই পেশার বাইরে আমার কোনো রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা নেই। যারা এ ধরনের গুজব ছড়ায়, তারা শুধু আমাকে নয়, বরং পুরো সমাজকেই বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, “এ ধরনের মিথ্যা তথ্য সমাজে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানে। এটি বন্ধ হওয়া উচিত। এমন কাজ শুধু একটি গোষ্ঠী বা ধর্ম নয়, বরং সব ধর্ম ও জাতির প্রতি অবমাননাকর।”
সামাজিক মাধ্যমে গুজবের প্রসার
এই ভ্রান্ত খবরটি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর অনেকে তা সত্য মনে করে মন্তব্য করা শুরু করেন। এমনকি কিছু পেজ এবং ব্যক্তিগত আইডি থেকে এই তথ্যকে আরও বিস্তৃত করা হয়। বিষয়টি এতটাই ছড়িয়ে পড়ে যে, তা পূজা চেরির কাছে পৌঁছায় এবং তিনি দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বিভ্রান্তি দূর করার চেষ্টা করেন।
তারকাদের নিয়ে গুজবের প্রভাব
তারকাদের নিয়ে এ ধরনের গুজব নতুন কিছু নয়। মিডিয়া ও সামাজিক মাধ্যমের কৌতূহলী দর্শকরা প্রায়ই তারকাদের ব্যক্তিগত ও পেশাগত জীবনের সঙ্গে সম্পৃক্ত নানা অসত্য তথ্য প্রচার করেন। তবে পূজা চেরি মনে করেন, যখন বিষয়টি ধর্মীয় সংবেদনশীলতার সঙ্গে জড়িত হয়, তখন এটি শুধু তারকাদের নয়, পুরো সমাজের জন্য ক্ষতিকর হয়ে ওঠে।
সমাধানের আহ্বান
পূজা চেরি তার বক্তব্যে এ ধরনের গুজব বন্ধ করার আহ্বান জানান। তিনি মনে করেন, সামাজিক মাধ্যমে দায়িত্বশীল আচরণ এবং সঠিক তথ্য যাচাই করা অত্যন্ত জরুরি। তার ভাষায়, "গুজব ছড়ানোর আগে সবাইকে ভাবতে হবে, এর প্রভাব কতদূর পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে এবং তা সমাজে কী ধরনের নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।"
গুজব বন্ধে তিনি সামাজিক মাধ্যমের ব্যবহারকারীদের প্রতি সচেতন হওয়ার অনুরোধ জানান এবং এমন বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করেন।
এ গুজবের সত্যতা না থাকায় এটি নিয়ে বিতর্ক অবসান হলেও, এ ঘটনা তারকাদের ব্যক্তিগত জীবনে গুজবের প্রভাব সম্পর্কে আমাদের নতুন করে চিন্তা করার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে।
repoter