
ছবি: ছবি: সংগৃহীত
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা কমিটির সভায় আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের অংশগ্রহণের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখিয়েছে শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার বেলা ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের তৃতীয় তলার সভাকক্ষে এ ঘটনা ঘটে। সভায় উপাচার্য, প্রো-ভিসি ও ট্রেজারারের উপস্থিতিতে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকরা অংশ নিলে তাদের বিরুদ্ধে ‘স্বৈরাচারীর দোসর ও দালাল’ স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা। পরে প্রক্টরিয়াল বডির সহায়তায় শিক্ষকরা সভা ত্যাগ করেন।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, আওয়ামীপন্থী শিক্ষকরা গত বছরের জুলাই আন্দোলনের সময় সরাসরি শিক্ষার্থীদের বিরোধিতা করেছিলেন। তারা শাপলা ফোরামের ব্যানারে ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে ‘নৈরাজ্যবাদী কর্মকাণ্ড’ আখ্যা দিয়ে মিছিল করেছিলেন। এছাড়া শিক্ষক শহিদুল ইসলাম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেখ মুজিবুর রহমান ও আওয়ামী লীগের পক্ষে নিয়মিত পোস্ট করে আসছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
শিক্ষার্থীরা সভা শেষে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের পেছন থেকে ‘দালাল ধর, দোসর ধর’ স্লোগান দিয়ে ধাওয়া দেয়। পরে হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সভাপতি শহিদুল ইসলামকে বুধবার থেকে ক্যাম্পাসে না আসতে হুমকি দেয় তারা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহ-সমন্বয়ক তানভীর মন্ডল বলেন, ‘আওয়ামী শাসনামলে ছাত্রলীগের ক্যাডাররা জিয়া পরিষদ ও গ্রীন ফোরামের শিক্ষকদের হেনস্তা করেছে। আমরা জুলাই আন্দোলনের বিরোধিতাকারী শিক্ষকদের সঙ্গে এমন আচরণ করতে চাই না। আমরা চাই, তারা তাদের ভুল স্বীকার করুক এবং রুটিন কাজে ফিরে আসুক। তবে যদি তারা তাদের পূর্বের রাজনৈতিক অবস্থান বজায় রাখে, তাহলে আমাদের কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহিনুজ্জামান বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের আপত্তির পর আমরা আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের শান্তিপূর্ণভাবে সভা থেকে বের করে নিয়ে আসি।’
উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষকই আওয়ামীপন্থী। একাডেমিক শৃঙ্খলা রক্ষায় তাদেরকে মাইনাস করার সুযোগ নেই। তবে যারা আন্দোলনের বিরোধিতা করেছিল, তাদের বিষয়ে সর্বশেষ সিন্ডিকেট সভায় আলোচনা হয়েছে।’
এই ঘটনায় ক্যাম্পাসে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। শিক্ষার্থীরা দাবি করছে, আওয়ামীপন্থী শিক্ষকরা যেন তাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড ক্যাম্পাসে না আনে। অন্যদিকে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শৃঙ্খলা রক্ষায় পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বললেও শিক্ষকদের বিরুদ্ধে কোনো কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ এবং আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের বিরুদ্ধে তাদের অভিযোগ ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়িয়ে দিয়েছে। আগামী দিনগুলোতে এই ইস্যু কীভাবে মোকাবিলা করা হয়, তা নিয়ে সবার নজর থাকবে।
repoter