ঢাকা,  শুক্রবার
১৯ ডিসেম্বর ২০২৫ , ০৩:৪৩ মিনিট

Donik Barta

শিরোনাম:

* জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধ: ওবায়দুল কাদেরসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল * গুলিবিদ্ধ শরিফ ওসমান হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, দেশে–বিদেশে উদ্বেগ * ঢাকা–দিল্লি সম্পর্কে নতুন করে উত্তেজনা, আজ চালু থাকছে ভারতীয় ভিসা কেন্দ্র * ৬৬ হাজার কোটি টাকার সম্পদ জব্দ, বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারে গতি আনছে সরকার * যুক্তরাষ্ট্রের ‘সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধ’ ফিরিয়ে আনছেন ট্রাম্প, সমালোচনার কেন্দ্রে ভেনেজুয়েলা অভিযান * পাবনার বেড়ায় স্পিডবোটে এসে বাজারে ডাকাতি, ব্যবসায়ীরা আতঙ্কিত * যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভেনেজুয়েলা অভিযান: মাদুরো সরকারের ওপর চাপ বাড়ছে * ট্রাম্পের ২৮ দফা শান্তি পরিকল্পনা: ইউক্রেন–রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধে নতুন জটিলতা * গুম ও মানবতাবিরোধী অভিযোগে ১৩ সেনা কর্মকর্তা ট্রাইব্যুনালে * বিএনপির ৪০টির বেশি আসনে মনোনয়নসংক্রান্ত অসন্তোষ, কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ব্যস্ত সমাধান খুঁজতে

হেফাজতে ইসলামের দাবি: ভারতীয় গণমাধ্যমের মিথ্যাচার বন্ধ হোক

repoter

প্রকাশিত: ০৬:০৯:১৯অপরাহ্ন , ০২ ডিসেম্বর ২০২৪

আপডেট: ০৬:০৯:১৯অপরাহ্ন , ০২ ডিসেম্বর ২০২৪

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: ছবি: সংগৃহীত

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মুফতি হারুন ইজহার ভারতীয় গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য প্রচারের অভিযোগ তুলে বলেন, ফ্যাসিবাদী শক্তি এখনো ভারতে বসে বিভিন্ন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তিনি দাবি করেন, প্রতিবেশী দেশ হিসেবে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক রাখা প্রয়োজন, তবে ভারতীয় আধিপত্যবাদ মেনে নেওয়া হবে না। তিনি এই মন্তব্য করেন আজ সোমবার চট্টগ্রাম নগরের জমিয়তুল ফালাহ জাতীয় মসজিদ প্রাঙ্গণে আয়োজিত গণজমায়েতে।

হেফাজতে ইসলাম চট্টগ্রাম মহানগর কমিটি ভারতীয় মিডিয়া এবং রাজনীতিবিদদের অপপ্রচারের প্রতিবাদে গণজমায়েত এবং স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচি পালন করেছে। পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী, হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীরা চট্টগ্রামের ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনের দিকে একটি মিছিল নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল, কিন্তু কর্মসূচি পরিবর্তন করে গণজমায়েত আয়োজন করা হয়। পরে নেতাকর্মীরা চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে গিয়ে স্মারকলিপি প্রদান করেন।

গণজমায়েত থেকে হেফাজতের নেতারা দাবি করেন, ভারতীয় গণমাধ্যম বাংলাদেশ সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে দেশের জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে। মুফতি হারুন ইজহার বলেন, "ভারতের আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে যদি আমরা দাঁড়িয়ে না থাকি, তাহলে আমাদের দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের কোনো নিরাপত্তা থাকবে না। মালদ্বীপ, নেপাল, শ্রীলঙ্কার মতো দেশগুলো ভারতের আধিপত্য থেকে বেরিয়ে এসেছে, তবে আমরা পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কের কথা বলছি না।" তিনি আরও বলেন, "ভারতের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আমাদের যদি প্রয়োজন হয়, আমরা পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে কোনো আপত্তি নেই।"

এ সময় তিনি অভিযোগ করেন, ভারতীয় আধিপত্যবাদের পেছনে প্রধান চালিকাশক্তি ছিল শেখ হাসিনার সরকার, যা বাংলাদেশকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে। "ফ্যাসিবাদী শক্তি এখনো ভারতে বসে বিভিন্ন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত," বলেন মুফতি হারুন ইজহার। তিনি উল্লেখ করেন যে, "ইসকন" নামের একটি সন্ত্রাসী সংগঠন বাংলাদেশের অস্থিতিশীলতা তৈরিতে লিপ্ত এবং এই সংগঠনকে অবিলম্বে নিষিদ্ধ করার দাবি জানান। তিনি আরও বলেন, "সাধারণ হিন্দুরা তাদের ক্ষতিকর ফাঁদে পা দেয়নি, কিন্তু সন্ত্রাসী সংগঠন ইসকন এই ফাঁদে পা দিয়েছে।"

হারুন ইজহার আরো বলেন, "আজকের সমাবেশ কোনো সমাপ্তি নয়, এটা আমাদের নতুন সূচনা। ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই চলবে, ভারতকে থামতে হবে, অথবা তাদের পরিণতির জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। বাংলাদেশে আর কোনো স্বৈরাচারী শক্তি চাপিয়ে দেওয়া যাবে না।"

গণজমায়েতে হেফাজতে ইসলামের নেতারা ৪ দফা দাবি নিয়ে স্মারকলিপি প্রদান করেছেন। স্মারকলিপিতে দাবি করা হয়, ভারতীয় গণমাধ্যমের মিথ্যাচার বন্ধ করতে হবে, রাজনীতিবিদদের দায়িত্বশীল আচরণ নিশ্চিত করতে হবে, বাংলাদেশে ভারতীয় গোয়েন্দা নেটওয়ার্কের সকল হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে হবে, এবং দুই দেশের সম্পর্কের মসৃণতা বজায় রাখতে হবে।

এছাড়া, স্মারকলিপিতে বলা হয়, "আমরা ভারতকে আশ্বস্ত করতে চাই যে, বাংলাদেশের জনগণের পক্ষ থেকে ভারতের প্রতি কোনো শত্রুতা বা হুমকি নেই। বাংলাদেশ তার সার্বভৌমত্ব বজায় রেখে শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।"

গণজমায়েতে আরও বক্তব্য রাখেন হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমীর মাওলানা আইয়ুব বাবুনগরী, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মীর ইদরীস, সহকারী মহাসচিব মাওলানা হাবিবুল্লাহ আজাদী, মাওলানা জাফর আহমদ ভাটুয়া ও মাওলানা নাছির উদ্দিন মুনির। মাওলানা নাছির উদ্দিন মুনির বলেন, "আইনজীবী আলিফ হত্যা মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে এবং যাদের আসামি করা হয়েছে তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা উচিত।"

হেফাজতে ইসলামের এই কর্মসূচি দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভারতের হস্তক্ষেপ ও মিথ্যা অপপ্রচারকে প্রতিরোধ করার আহ্বান জানায় এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে।

repoter