ঢাকা,  বৃহস্পতিবার
৩ এপ্রিল ২০২৫ , ০২:৪৩ মিনিট

Donik Barta

শিরোনাম:

* চাঁদপুরের ৪০টি গ্রামে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদ রবিবার * প্রতিযোগী না হয়ে প্রতিপক্ষ হলে ক্ষতিই নিজেদের: পঞ্চগড়ে সারজিস আলম * জুলাই বিপ্লবের শহীদ পরিবারদের পাশে নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক * ভূমিকম্প বিধ্বস্ত মিয়ানমারে যাচ্ছে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর উদ্ধারকারী দল * শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেছে, সৌদিতে রবিবার ঈদ উদযাপিত হবে * “বাংলাদেশ কোরআনের উর্বর ভূমি” — পিএইচপি কোরআনের আলো প্রতিযোগিতায় ধর্ম উপদেষ্টার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা * চা শ্রমিকদের পাশে সিলেটের ডিসি — দুর্দশায় ত্রাণ নিয়ে হাজির প্রশাসন * সাত বছর পর পরিবারের সান্নিধ্যে ঈদ উদযাপন করছেন খালেদা জিয়া * মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডে ভয়াবহ ভূমিকম্পে শতাধিক মৃত্যুর আশঙ্কা * আগামীকাল রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর ২ ঘণ্টার লেনদেন

গ্লোবাল সেইফ সিস্টেম এপ্রোচের আলোকে সড়ক নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের দাবি

repoter

প্রকাশিত: ০৭:৩৯:৫৮অপরাহ্ন , ৩০ জানুয়ারী ২০২৫

আপডেট: ০৭:৩৯:৫৮অপরাহ্ন , ৩০ জানুয়ারী ২০২৫

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর গুলশানে সিক্স সিজন হোটেলে অনুষ্ঠিত এক কর্মশালায় বক্তারা বলেছেন, সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধ এবং প্রাণহানি ও আহতের হার কমানোর জন্য গ্লোবাল সেইফ সিস্টেম এপ্রোচের ভিত্তিতে একটি কার্যকর সড়ক নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করা জরুরি। বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) সকাল ১০টায় ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের স্বাস্থ্য সেক্টরের আয়োজনে এই কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে তরুণদের সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি ও কার্যক্রমে সক্রিয় অংশগ্রহণের ওপর জোর দেওয়া হয়।

বক্তারা বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুসারে, ৫ থেকে ২৯ বছর বয়সীদের মৃত্যুর প্রধান কারণ সড়ক দুর্ঘটনা। রোডক্র্যাশ হ্রাসের লক্ষ্যে একটি আধুনিক ও কার্যকর সড়ক নিরাপত্তা আইন প্রয়োজন, যা কেবল পরিবহন ব্যবস্থার ওপর নির্ভরশীল থাকবে না, বরং সামগ্রিক নিরাপত্তা কাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে সকল নাগরিকের জন্য নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করবে।

কর্মশালায় আহ্ছানিয়া মিশন ইয়ুথ ফোরাম ফর হেলথ এন্ড ওয়েলবিংয়ের সমন্বয়কারী মারজানা মুনতাহা সড়ক ব্যবহারকারীদের পাঁচটি প্রধান আচরণগত সমস্যার ওপর আলোকপাত করেন। তিনি বলেন, সচেতনতা ও দায়িত্বশীল আচরণের অভাব, ট্রাফিক নিয়মের প্রতি অবজ্ঞা, অতিরিক্ত গতি, মাদকাসক্ত অবস্থায় গাড়ি চালানো এবং সড়ক ব্যবহারকারীদের সঠিক প্রশিক্ষণের অভাব সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ।

অনুষ্ঠানে নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সভাপতি আব্দুল্লাহ মেহেদী দীপ্ত ও সাধারণ সম্পাদক তানজিদ মো. সোহরাব রেজা তরুণদের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করেন। তারা বলেন, তরুণদের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছাড়া সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। তারা সড়ক নিরাপত্তা নিয়ে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি, আইনগত সংস্কার এবং নিরাপদ যানবাহন ব্যবস্থাপনার জন্য তরুণদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

কর্মশালায় ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের স্বাস্থ্য ও ওয়াশ সেক্টরের পরিচালক ইকবাল মাসুদ সভাপতিত্ব করেন এবং রোড সেফটি প্রকল্প সমন্বয়কারী শারমনি রহমান সঞ্চালনার দায়িত্ব পালন করেন। গ্লোবাল রোড সেফটি পার্টনারশিপ আইএফআরসি’র গ্র্যান্টস ম্যানেজার তাইফুর রহমান সড়ক নিরাপত্তা আইনের দুর্বল দিকগুলো বিশ্লেষণ করে বলেন, বর্তমান আইনটি মূলত পরিবহনব্যবস্থাকে কেন্দ্র করে গঠিত, যেখানে সড়ক নিরাপত্তা সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর উপস্থিতি নেই। ফলে, শুধুমাত্র ট্রাফিক আইন কার্যকর করলেই দুর্ঘটনা প্রতিরোধ সম্ভব নয়, বরং গ্লোবাল সেইফ সিস্টেম এপ্রোচের আওতায় একটি সুসংগঠিত আইন প্রণয়ন করতে হবে।

এছাড়া, গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটরের পরিচালক মারভিন ক্রিস্টিয়ান নিরাপদ সড়ক নিশ্চিতকরণে তরুণদের সম্পৃক্ত করার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, তরুণদের যথাযথ প্রশিক্ষণ, জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং স্বেচ্ছাসেবী কার্যক্রমের মাধ্যমে নিরাপদ সড়ক ব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব। গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটরের কান্ট্রি কো-অর্ডিনেটর ড. শরিফুল আলম নিরাপদ সড়ক ব্যবস্থা পদ্ধতির বিভিন্ন দিক বিশ্লেষণ করে বলেন, শুধুমাত্র আইন প্রয়োগ নয়, বরং সমাজের সব স্তরের সম্পৃক্ততাই সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে।

বক্তারা পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ পিলারের ওপর জোর দেন, যা হলো— বহুমুখী যানবাহন ও ভূমি ব্যবহার পরিকল্পনা, নিরাপদ যানবাহন, নিরাপদ সড়ক অবকাঠামো, নিরাপদ সড়ক ব্যবহার এবং রোডক্র্যাশ পরবর্তী ব্যবস্থাপনা। তারা বলেন, এই পিলারগুলো বাস্তবায়ন করা গেলে সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমানো সম্ভব।

কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন নিরাপদ সড়ক আন্দোলন, আহ্ছানিয়া মিশন ইয়ুথ ফোরাম ফর হেলথ এন্ড ওয়েলবিং, ইয়ুথ পলিসি ফোরাম, বাংলাদেশ মেডিকেল স্টুডেন্ট সোসাইটি, মিশন গ্রীন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ডিবেট ফেডারেশন, উই ক্যান কক্সবাজারসহ বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা। এছাড়া, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন। তারা সকলে একমত পোষণ করেন যে, নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করতে হলে তরুণদের অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে এবং গ্লোবাল সেইফ সিস্টেম এপ্রোচের আলোকে একটি আধুনিক সড়ক নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করতে হবে।

repoter