ঢাকা,   বুধবার
৪ ডিসেম্বর ২০২৪ , ০২:১৯ মিনিট

Donik Barta

শিরোনাম:

* বিপিএল থিম সংয়ের কিছু লাইন লিখেছেন ড. ইউনূস * ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক বিষয়ে একচুলও ছাড় নয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তীব্র প্রতিবাদ * দক্ষিণ কোরিয়ায় সামরিক আইন জারি * জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানাবেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস * সন্ত্রাসী হামলার ঝুঁকিতে বাংলাদেশ ভ্রমণে সতর্কতা জারি করেছে যুক্তরাজ্য * ডেঙ্গুতে চলতি বছরে মৃত্যু ৫০০ ছাড়াল * নিরাপত্তা ঝুঁকিতে আগরতলার বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশন বন্ধ * সীমান্তে যেকোনো অপতৎপরতা রোধে সতর্ক বিজিবি * বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক উন্নয়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ: হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা * বাবা-মেয়ে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা, রাণীনগরে উদ্ধার মরদেহ

গাজায় ইসরাইলের ভয়াবহ বিমান হামলা: নিহত ১০০, ধ্বংসস্তূপে পরিণত শরণার্থী শিবির

repoter

প্রকাশিত: ১২:৫৯:১৭অপরাহ্ন , ০১ ডিসেম্বর ২০২৪

আপডেট: ১২:৫৯:১৭অপরাহ্ন , ০১ ডিসেম্বর ২০২৪

গাজায় ইসরাইলের ভয়াবহ হামলা, নিহত ১০০ - ছবি : আল-জাজিরা

ছবি: গাজায় ইসরাইলের ভয়াবহ হামলা, নিহত ১০০ - ছবি : আল-জাজিরা

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের বিমান হামলার তাণ্ডব থামছে না। গত ২৪ ঘণ্টায় ভয়াবহ হামলায় অন্তত ১০০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে চালানো এক হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ৪০ জন। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

রবিবার (৩০ নভেম্বর) আল জাজিরার সরাসরি আপডেট অনুযায়ী, গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় খান ইউনিস এলাকায় খাদ্য সহায়তার জন্য অপেক্ষমাণ ফিলিস্তিনিদের ওপর চালানো বিমান হামলায় অন্তত ১২ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে আন্তর্জাতিক সংস্থা ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেন এবং সেভ দ্য চিলড্রেন-এর চারজন কর্মীও রয়েছেন।

মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৪৪ হাজার

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই আগ্রাসনে এ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৪ হাজার ৩৮২ জনে। হামলায় আহত হয়েছেন আরও এক লাখ পাঁচ হাজারের বেশি মানুষ। ক্রমাগত হামলায় পুরো গাজা অঞ্চল পরিণত হয়েছে ধ্বংসস্তূপে।

আল জাজিরার প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ইসরাইলি বাহিনীর অব্যাহত আগ্রাসনে শুধু গাজা নয়, লেবাননেও ব্যাপক প্রাণহানি ঘটেছে। এ পর্যন্ত লেবাননে নিহত হয়েছেন তিন হাজার ৯৬১ জন এবং আহত হয়েছেন ১৬ হাজার ৫২০ জন।

বাস্তুচ্যুত ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি

জাতিসংঘের তথ্য অনুসারে, ইসরাইলের বর্বর হামলায় গাজার ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের কারণে পুরো অঞ্চলজুড়ে মানবিক বিপর্যয় নেমে এসেছে। সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, গাজার ৭০ শতাংশ অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে বা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে পুরো অঞ্চলের বাসিন্দারা বর্তমানে খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন।

দুর্ভোগ চরমে, গণহত্যার অভিযোগ

গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, ক্ষুধা এবং চরম দুর্ভোগে ফিলিস্তিনিদের জীবনযাপন অসহনীয় হয়ে উঠেছে। খাদ্য সহায়তার জন্য দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষদের ওপর হামলার ঘটনা প্রমাণ করে, ইসরাইলি বাহিনী মানবাধিকার লঙ্ঘনের সকল সীমা অতিক্রম করেছে।

জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, গাজার মানুষের দুর্দশা এখন নজিরবিহীন পর্যায়ে পৌঁছেছে। শিশু, নারী এবং বৃদ্ধসহ সাধারণ মানুষ ক্ষুধা ও আশ্রয়হীন অবস্থায় প্রতিদিন মৃত্যুর মুখে পড়ছে। এদিকে ইসরাইল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগের মুখোমুখি হয়েছে।

গণমাধ্যমের নজর ও মানবিক সহায়তার সংকট

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো অবরুদ্ধ অঞ্চলে চলমান সংকট নিয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করলেও, মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর পথ কার্যত বন্ধ করে দিয়েছে ইসরাইল। এই নিষ্ঠুরতার ফলে খাদ্য সহায়তা ও চিকিৎসা সামগ্রী পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।

গাজার একজন স্বাস্থ্যকর্মী আল জাজিরাকে বলেন, "আমরা এখন আর হতাশ নই; আমরা ভীত। প্রতিদিন নতুন মৃতদেহ উদ্ধার করতে হচ্ছে। চিকিৎসা সরঞ্জামের অভাবে অসংখ্য আহত মানুষকেও আমরা বাঁচাতে পারছি না।"

বিশ্বব্যাপী নিন্দা ও সমাধানের দাবি

ইসরাইলের চলমান আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে তীব্র নিন্দার ঝড় উঠলেও, তা পরিস্থিতি পরিবর্তনে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না। মানবাধিকার সংস্থাগুলো ফিলিস্তিনিদের ওপর এ ধরনের বর্বরতার অবসান ঘটাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আরো জোরালো ভূমিকা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

গাজার পরিস্থিতি বর্তমানে মানব ইতিহাসের অন্যতম নৃশংস সংকট হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে। ক্ষুধা, গৃহহীনতা এবং ভয়াবহ সহিংসতার সম্মুখীন ফিলিস্তিনিরা এক মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে, যা বন্ধে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ প্রয়োজন।

repoter