
ছবি: সংগৃহীত ছবি
গাজা, ২৭ জানুয়ারি — ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে হামাসের আকস্মিক হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় শুরু করেছিল ভয়াবহ অভিযান। এ অভিযানে ফিলিস্তিনিদের ওপর চালানো হামলা এবং ধ্বংসযজ্ঞে দীর্ঘদিন ধরে বাড়ছে প্রাণহানি।
সর্বশেষ গতকাল রোববার বার্তাসংস্থা আনাদোলু এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, গাজার ধ্বংসস্তূপ থেকে প্রতিনিয়ত উদ্ধার হচ্ছে লাশ। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ৪৭ হাজার ৩০৬ জনে পৌঁছেছে। এর মধ্যে গতকাল আরও ১৪ জনের লাশ ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতদের মধ্যে পাঁচজন আহত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন এবং চারজন সাম্প্রতিক ইসরায়েলি হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন।
মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়, ইসরায়েলি আগ্রাসনে আহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১১ হাজার ৪৮৩ জনে। ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো অনেক মানুষ আটকা পড়ে রয়েছেন। রাস্তা ও ভবনের ভেতরে মৃতদেহ পড়ে থাকলেও উদ্ধারকর্মীরা সব স্থানে পৌঁছাতে পারছেন না।
গাজায় চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হয়েছে তিন-পর্যায়ের যুদ্ধবিরতি চুক্তি। এ চুক্তির মধ্যে রয়েছে বন্দি বিনিময়, গাজা থেকে ইসরায়েলি বাহিনী প্রত্যাহার, এবং স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যমাত্রা। তবে যুদ্ধবিরতির পরও গাজায় উদ্ধারকাজ চালানোর সময় ধ্বংসস্তূপ থেকে প্রতিনিয়ত মিলছে লাশ, যা সেখানে যুদ্ধের ভয়াবহতা প্রকাশ করে চলেছে।
ইসরায়েলের অবরোধের কারণে গাজার পরিস্থিতি আরও করুণ হয়ে উঠেছে। জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলি আগ্রাসনে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ জনগণ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। একই সঙ্গে ভূখণ্ডটির ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ধ্বংস বা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন ১১ হাজারেরও বেশি মানুষ।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানালেও ইসরায়েল দীর্ঘদিন ধরে এই ভূখণ্ডে নৃশংস আক্রমণ চালিয়েছে। আন্তর্জাতিক মহল ইসরায়েলের এই কর্মকাণ্ডকে যুদ্ধাপরাধ ও গণহত্যার শামিল বলে মনে করছে। ইতোমধ্যেই ইসরায়েল আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে।
গাজার ধ্বংসস্তূপে লাশের মিছিল, বাস্তুচ্যুত মানুষ এবং ধ্বংস হওয়া অবকাঠামো ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি হামলার ভয়াবহতা প্রকাশ করে। যুদ্ধবিরতির পরও এই ভূখণ্ডের চিত্র এতটাই মর্মান্তিক যে তা বৈশ্বিক বিবেককে নাড়া দিচ্ছে।
repoter