ঢাকা,  বৃহস্পতিবার
৩ এপ্রিল ২০২৫ , ০৩:১৫ মিনিট

Donik Barta

শিরোনাম:

* চাঁদপুরের ৪০টি গ্রামে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদ রবিবার * প্রতিযোগী না হয়ে প্রতিপক্ষ হলে ক্ষতিই নিজেদের: পঞ্চগড়ে সারজিস আলম * জুলাই বিপ্লবের শহীদ পরিবারদের পাশে নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক * ভূমিকম্প বিধ্বস্ত মিয়ানমারে যাচ্ছে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর উদ্ধারকারী দল * শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেছে, সৌদিতে রবিবার ঈদ উদযাপিত হবে * “বাংলাদেশ কোরআনের উর্বর ভূমি” — পিএইচপি কোরআনের আলো প্রতিযোগিতায় ধর্ম উপদেষ্টার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা * চা শ্রমিকদের পাশে সিলেটের ডিসি — দুর্দশায় ত্রাণ নিয়ে হাজির প্রশাসন * সাত বছর পর পরিবারের সান্নিধ্যে ঈদ উদযাপন করছেন খালেদা জিয়া * মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডে ভয়াবহ ভূমিকম্পে শতাধিক মৃত্যুর আশঙ্কা * আগামীকাল রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর ২ ঘণ্টার লেনদেন

গাইবো বিজয়েরই গান: আজ মহান বিজয় দিবস

repoter

প্রকাশিত: ০১:৩৪:০৮অপরাহ্ন , ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪

আপডেট: ০১:৩৪:০৮অপরাহ্ন , ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: ছবি: সংগৃহীত

আজ ১৬ ডিসেম্বর, মহান বিজয় দিবস। এটি বাঙালি জাতির শৌর্য, বীরত্ব এবং আত্মত্যাগের এক অবিস্মরণীয় গৌরবের দিন। দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের অবসান ঘটিয়ে ১৯৭১ সালের এই দিনে চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করেছিল বাঙালি জাতি। পৃথিবীর মানচিত্রে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ‘বাংলাদেশ’ নামে নতুন একটি ভূখণ্ডের জন্ম হয়েছিল এই ঐতিহাসিক দিনে। বিজয়ের এই মাহেন্দ্রক্ষণে বাঙালি জাতি বীরের জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছিল।

আজকের এই দিনে গোটা দেশ আনন্দ ও বিজয় উল্লাসে মাতোয়ারা হবে। রাজধানী ঢাকা থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল পর্যন্ত নানা কর্মসূচি ও আয়োজনে উদযাপিত হবে মহান বিজয় দিবস। দেশের সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন এবং সাধারণ জনগণ নিজ নিজ অবস্থান থেকে দিবসটি পালন করবে। শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক নেতৃবৃন্দ। সকাল থেকেই ঢাকার সাভারে অবস্থিত জাতীয় স্মৃতিসৌধে মানুষের ঢল নামবে। হাজারো মানুষ ফুল হাতে ছুটে যাবে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য।

বিজয় দিবস উপলক্ষে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বড় শহরগুলোর প্রধান সড়ক ও ভবনগুলো জাতীয় পতাকা ও আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হয়েছে। বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান নানা আয়োজনের মাধ্যমে দিনটি উদযাপন করছে। এছাড়া দেশের প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক এবং অনলাইন গণমাধ্যমগুলো বিশেষ অনুষ্ঠানমালা ও প্রতিবেদন প্রকাশ করছে।

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে বিজয় দিবসের গুরুত্ব অপরিসীম। ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী অপারেশন সার্চলাইটের নামে নিরস্ত্র বাঙালির ওপর হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে মুক্তিকামী মানুষের কণ্ঠ রোধ করতে চেয়েছিল। কিন্তু বাঙালিরা সেই অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিল। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে শুরু হয়েছিল স্বাধীনতা আন্দোলন, যা পরবর্তী সময়ে রূপ নেয় সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে। দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের পর ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জিত হয়। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর প্রায় ৯০ হাজার সদস্য এদিন ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) যৌথ বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি পায়।

আজকের এই দিনে স্মরণ করা হয় সেইসব বীর মুক্তিযোদ্ধাদের, যাদের আত্মত্যাগে অর্জিত হয়েছে স্বাধীন বাংলাদেশ। একই সঙ্গে জাতি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা, নির্যাতিত মা-বোন ও যুদ্ধকালীন সময়ে সকল বীরদের অবদান। তাদের আত্মত্যাগে লাল সবুজের পতাকা আজ স্বাধীন দেশের আকাশে উড়ছে।

বিজয় দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। তারা বিজয়ের এই দিনে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশ গড়ার আহ্বান জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেন, “মহান মুক্তিযুদ্ধের বিজয় বাঙালি জাতিকে একটি স্বাধীন দেশ উপহার দিয়েছে। আমাদের এই অর্জন ধরে রেখে একটি উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলাই আমাদের লক্ষ্য।”

বিজয় দিবস উদযাপনের অংশ হিসেবে দেশের সকল স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ ও গান, কবিতা আবৃত্তির মাধ্যমে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করছে।

বিজয়ের এই দিনে দেশের প্রতিটি ঘরে ঘরে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। বাড়ির ছাদে উড়ছে লাল-সবুজের জাতীয় পতাকা। শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে সব বয়সের মানুষ বিজয়ের আনন্দে সামিল হচ্ছে। বিশেষত তরুণ প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও বিজয়ের তাৎপর্য সম্পর্কে জানতে বিশেষ আগ্রহ প্রকাশ করছে।

এছাড়া সারাদেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে পুনর্জাগ্রত করতে বিভিন্ন স্থানে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র প্রদর্শনী, আলোকচিত্র প্রদর্শনী এবং মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়েছে। বিজয় দিবসের আনন্দ ও চেতনা ছড়িয়ে পড়েছে সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের মাঝে। বিজয় দিবসের মূল প্রেরণা হলো মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও স্বাধীনতার মর্যাদা রক্ষা করা।

একই সঙ্গে বিজয়ের এই দিনে স্মরণ করা হয় বাঙালির মুক্তির সংগ্রামে যারা জীবন উৎসর্গ করেছেন। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পাশাপাশি লাখো শহীদ বেসামরিক জনগণ এবং নারীরা যারা নিপীড়ন ও নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন, তাদের অবদানের প্রতি শ্রদ্ধা জানায় জাতি।

১৬ ডিসেম্বরের বিজয় বাঙালি জাতির জন্য এক নতুন সূর্যের আলো নিয়ে এসেছিল। সেই আলোর পথে সামনে এগিয়ে যেতে হবে দেশকে। জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার অঙ্গীকার নিয়ে আজ উদযাপিত হচ্ছে মহান বিজয় দিবস।

repoter