ঢাকা,  বৃহস্পতিবার
৩ এপ্রিল ২০২৫ , ০৩:২৭ মিনিট

Donik Barta

শিরোনাম:

* চাঁদপুরের ৪০টি গ্রামে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদ রবিবার * প্রতিযোগী না হয়ে প্রতিপক্ষ হলে ক্ষতিই নিজেদের: পঞ্চগড়ে সারজিস আলম * জুলাই বিপ্লবের শহীদ পরিবারদের পাশে নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক * ভূমিকম্প বিধ্বস্ত মিয়ানমারে যাচ্ছে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর উদ্ধারকারী দল * শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেছে, সৌদিতে রবিবার ঈদ উদযাপিত হবে * “বাংলাদেশ কোরআনের উর্বর ভূমি” — পিএইচপি কোরআনের আলো প্রতিযোগিতায় ধর্ম উপদেষ্টার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা * চা শ্রমিকদের পাশে সিলেটের ডিসি — দুর্দশায় ত্রাণ নিয়ে হাজির প্রশাসন * সাত বছর পর পরিবারের সান্নিধ্যে ঈদ উদযাপন করছেন খালেদা জিয়া * মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডে ভয়াবহ ভূমিকম্পে শতাধিক মৃত্যুর আশঙ্কা * আগামীকাল রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর ২ ঘণ্টার লেনদেন

"এক টাকা আয় করতে আড়াই টাকা ব্যয়: লোকসানের গহ্বরে বাংলাদেশ রেলওয়ে"

repoter

প্রকাশিত: ০২:৫৮:৫১পূর্বাহ্ন, ১৮ মার্চ ২০২৫

আপডেট: ০২:৫৮:৫১পূর্বাহ্ন, ১৮ মার্চ ২০২৫

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ রেলওয়ে দিন দিন লোকসানের গহ্বরে তলিয়ে যাচ্ছে। যাত্রীসেবা ও মালামাল পরিবহনে আয়ের তুলনায় ব্যয় বেড়েই চলেছে। বর্তমানে রেলওয়ের এক টাকা আয় করতে ব্যয় হচ্ছে আড়াই টাকারও বেশি। গত ১৫ বছরে রেলওয়ের লোকসানের পরিমাণ প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকা, যা প্রতি বছর গড়ে দেড় হাজার কোটি টাকার সমান। শিডিউল বিপর্যয়, ট্রেন লাইনচ্যুত হওয়া এবং যাত্রীদের ভোগান্তি যেন নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ অবস্থায় অনেক যাত্রীই রেলসেবা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন।

বাংলাদেশ রেলওয়ের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের ছয় মাসে (জুলাই থেকে ডিসেম্বর) রেলওয়ে আয় করেছে ৮৩৫ কোটি ৭৪ লাখ টাকা, অথচ একই সময়ে পরিচালন ব্যয় হয়েছে ২ হাজার ১৪৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ, রেলওয়ের অপারেটিং রেশিও ছিল ২ টাকা ৫৬ পয়সা। এ ধারাবাহিকতা বহু বছর ধরে চলছে। রেলওয়ের ‘ইনফরমেশন মিরর-২০২২’ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওই বছর এক টাকা আয় করতে রেলওয়ের ব্যয় হয়েছে ২ টাকা ৯০ পয়সার বেশি।

রেলওয়ের এ অবস্থার পেছনে অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি এবং তদারকির অভাবকে দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা। গত এক যুগে রেলের উন্নয়নে ১ লাখ কোটি টাকা ব্যয় করা হলেও ট্রেনের গতি বা সুবিধা বাড়েনি। বরং অপ্রয়োজনীয় প্রকল্পে পকেট ভারী হয়েছে অনেকের। যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, "রেল পরিচালনার জন্য আন্তর্জাতিক এক্সপার্ট আনা প্রয়োজন। কারণ, শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা নিজেদের স্বার্থ নিয়ে ব্যস্ত, আর মাঠপর্যায়ের কর্মীরা দুর্নীতি ও ধান্দাবাজিতে মগ্ন।"

যাত্রীদের অভিযোগ, বিনা টিকিটে যাত্রা রোধে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেই। বিশেষজ্ঞদের মতে, বিনা টিকিটে যাত্রা রোধ করা গেলে মাসে অন্তত ১০০ কোটি টাকা অতিরিক্ত আয় করা সম্ভব। কমলাপুর ও বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিন প্রায় ২০ হাজার যাত্রী বিনা টিকিটে যাত্রা করেন, যা থেকে বৈধভাবে প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা আয় করা যেত।

এদিকে রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আফজাল হোসেন বলেন, "সরকার সাবসিডি দিয়ে রেলভাড়া কম রেখেছে। তেলের দাম, কারিগরি ব্যয়, রক্ষণাবেক্ষণ ও বেতন বৃদ্ধি সত্ত্বেও ভাড়া বাড়ানো হয়নি। যদি ভাড়া বাড়ানো হতো, তাহলে আয় ব্যয়ের চেয়ে বেশি হতো। তবে রেলওয়েকে যাত্রীবান্ধব করতে সব ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।"

রেলওয়ে সূত্রে আরও জানা গেছে, রেলওয়ের প্রায় ৪ হাজার একর জমি বেদখলে রয়েছে। এসব জমি উদ্ধার করে কাজে লাগানো গেলে রেলওয়েকে লাভজনক করা সম্ভব বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে জমি উদ্ধারে কার্যকর উদ্যোগের অভাব রয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দুর্নীতি প্রতিরোধ, স্বচ্ছতা ও কার্যকর মনিটরিংয়ের মাধ্যমে রেলওয়েকে আবারও লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা সম্ভব। তবে এর জন্য প্রয়োজন সঠিক নীতি ও সদিচ্ছা।

repoter