
ছবি: ছবি: সংগৃহীত
আজ, ২০ জানুয়ারি, সোমবার, যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিতে যাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হবে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল হিলের কংগ্রেস ভবনের একটি অংশে। ট্রাম্প নিজেই জানিয়েছেন, শীতকালীন ঠাণ্ডার কারণে অনুষ্ঠানটি ক্যাপিটল ভবনের ভেতরে অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে, ১৯৮৫ সালে রোনাল্ড রিগ্যান প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন, তখনও ঠাণ্ডার কারণে অনুষ্ঠানটি ক্যাপিটল ভবনের রোটুন্ডায় সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল।
এটি প্রায় ৪০ বছর পর একটি বিশেষ ঘটনা, কারণ ট্রাম্পের অভিষেক অনুষ্ঠানটি খোলা স্থানের পরিবর্তে ক্যাপিটল ভবনের ভেতরে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। শপথ গ্রহণের মাধ্যমে ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বারের মতো হোয়াইট হাউসে ফিরে আসবেন, যা বর্তমান প্রশাসনের মেয়াদ শেষ এবং ট্রাম্প-ভ্যান্স প্রশাসনের সূচনা হবে।
শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানটি শুধুমাত্র ক্ষমতা হস্তান্তরের আয়োজন নয়, বরং এটি আমেরিকার ভবিষ্যতের দিকনির্দেশক এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
এছাড়া, জানা গেছে যে, ট্রাম্প তার প্রশাসনের শুরুতে দেশের অভিবাসন আইন প্রয়োগ আরও কঠোর করার পরিকল্পনা করছেন। শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক নেতা ও রাষ্ট্রপ্রধানদের, যার মধ্যে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংও রয়েছেন। তবে, সি চিন পিং নিজে উপস্থিত থাকবেন না, তার পরিবর্তে চীন থেকে ভাইস প্রেসিডেন্ট হান ঝেং এই অনুষ্ঠানেও অংশগ্রহণ করবেন।
এটি চীনের কোনো ঊর্ধ্বতন নেতার প্রথম বারের মতো যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার ঘটনা, এবং যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্টের শপথ অনুষ্ঠানে সাধারণত বিদেশি নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হয় না। তবে, ট্রাম্প এই পুরোনো রীতিকে ভেঙে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন করেছেন।
বিশ্ব রাজনীতির দিকে নজর দিলে, ১৯৩৩ সালে সংবিধানে ২০তম সংশোধনী আনা হয়, যার মাধ্যমে অভিষেকের দিন ২০ জানুয়ারি এবং নতুন কংগ্রেসের প্রথম অধিবেশন শুরুর জন্য ৩ জানুয়ারি নির্ধারিত হয়। ১৯৩৭ সালে প্রথমবার প্রেসিডেন্টের অভিষেক দিবস পালিত হয় এবং এটি আজও চলছে।
শপথ গ্রহণের পর, ট্রাম্প তার নতুন প্রশাসনের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য তুলে ধরবেন এবং পরবর্তী সময়ে তিনি ক্যাপিটল ভবনের প্রেসিডেন্টস রুমে গুরুত্বপূর্ণ নথিতে স্বাক্ষর করবেন। এরপর কংগ্রেস আয়োজিত মধ্যাহ্নভোজে অংশগ্রহণ করবেন এবং দিনের শেষে ক্যাপিটল হিল থেকে হোয়াইট হাউস পর্যন্ত একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে।
রাতের সময় তিনটি আনুষ্ঠানিক বলের অনুষ্ঠানে ট্রাম্প বক্তৃতা দেবেন। শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস, সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ ও বারাক ওবামা। এ ছাড়া, বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আসাদ আলম সিয়ামও উপস্থিত থাকবেন।
অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করবেন জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী ক্যারি আন্ডারউড, যিনি ‘আমেরিকা দ্য বিউটিফুল’ গানটি গেয়ে শ্রদ্ধা জানাবেন। এছাড়া, আমেরিকান ডিসকো গ্রুপ দ্য ভিলেজ পিপল এবং কান্ট্রি সংগীতশিল্পী লি গ্রিনউডও উপস্থিত থাকবেন। বিশেষভাবে, ‘ওয়াইএমসিএ’ গানটি অনুষ্ঠানে পরিবেশন করা হবে, যা ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারে ব্যবহৃত হয়েছিল।
ডোনাল্ড ট্রাম্প তার শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি এবং স্বাতন্ত্র্য প্রদর্শন করেছেন। প্রেসিডেন্ট পদে শপথ গ্রহণের ক্ষেত্রে অনন্য কিছু উপস্থাপন করেও তিনি বিশ্বের নজর কাড়ছেন।
repoter