ছবি: দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওল। ছবি: সংগৃহীত
এশিয়ার অন্যতম অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত শক্তিশালী দেশ দক্ষিণ কোরিয়ায় আকস্মিকভাবে সামরিক আইন জারি করেছেন প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওল। মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) গভীর রাতে এক টেলিভিশন ভাষণে তিনি এই ঘোষণা দেন। বিরোধী দলগুলোর ওপর রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপ এবং উত্তর কোরিয়ার প্রতি সহানুভূতির অভিযোগ এনে এই পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান প্রেসিডেন্ট।
জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রেসিডেন্ট ইউন বলেন, উত্তর কোরিয়ার কমিউনিস্ট শক্তির হুমকি থেকে দেশকে রক্ষা করার এবং রাষ্ট্রবিরোধী উপাদানগুলোর নির্মূল নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সামরিক আইন জারি করতে বাধ্য হয়েছেন। তিনি উল্লেখ করেন, দেশের স্থিতিশীলতা বজায় রাখা এবং নাগরিকদের স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই তাঁর প্রশাসনের প্রধান উদ্দেশ্য।
এই ঘোষণার পরপরই দেশজুড়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার ইতিহাসের প্রথম দিকে কর্তৃত্ববাদী শাসকেরা একই ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। তবে ১৯৮০ এর দশক থেকে দেশটি গণতান্ত্রিক পথে এগিয়ে চলেছে। আকস্মিক সামরিক আইন জারি করার এই সিদ্ধান্ত গণতন্ত্রে আস্থাশীল জনগণের মধ্যে নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
অন্যদিকে, ক্ষমতাসীন পিপল পাওয়ার পার্টির শীর্ষ নেতা হান ডং-হুন প্রেসিডেন্টের এই সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেছেন। তিনি এই পদক্ষেপকে ভুল হিসেবে আখ্যা দিয়ে জনগণকে এর বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এছাড়া, প্রধান বিরোধী দল ডেমোক্রেটিক পার্টি জরুরি বৈঠক ডেকেছে।
সম্প্রতি দক্ষিণ কোরিয়ায় মুদ্রা ওনের মান ব্যাপকভাবে পতিত হয়েছে, যা অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতায় প্রভাব ফেলেছে। এই প্রেক্ষাপটে সামরিক শাসনের ঘোষণা আরও জটিল পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। দেশটির জনগণ এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, এই পদক্ষেপ দক্ষিণ কোরিয়ার গণতান্ত্রিক কাঠামো এবং স্থিতিশীলতার ওপর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলতে পারে।
এদিকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দক্ষিণ কোরিয়ার এই সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রতিক্রিয়া আসতে শুরু করেছে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। সামরিক আইন জারির পর দেশটিতে রাজনৈতিক অস্থিরতা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
repoter