
ছবি: ছবি: সংগৃহীত
উত্তরের জেলা দিনাজপুরে শীতের দাপট প্রতিদিনই বাড়ছে। কয়েকদিন ধরে রাতের তাপমাত্রা ক্রমশ কমতে থাকায় শীতের তীব্রতা আরও প্রকট হয়েছে। যদিও সূর্যের দেখা পাওয়া যাচ্ছে, তবে হিম বাতাসের কারণে ঠান্ডা অনুভূতি তীব্রতর। রাতের ঠান্ডা বাতাসের দাপটে দিনাজপুরে শীতের প্রকোপ জনজীবনকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে।
বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় দিনাজপুর আবহাওয়া অফিসে রেকর্ড করা হয়েছে ১০ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা। একদিন আগে বুধবার (৮ জানুয়ারি) এ তাপমাত্রা ছিল ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মাত্র ২৪ ঘণ্টায় ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় শীতের প্রকোপ বেড়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
শীতের প্রকোপ সরেজমিনে দেখা যায়, কুয়াশার তেমন উপস্থিতি না থাকলেও তীব্র হিম বাতাস বইছে। অনেকেই খোলা জায়গায় আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। শীতের তীব্রতায় সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া অধিকাংশ মানুষ বাড়ির বাইরে বের হচ্ছেন না। তবে আর্থিক চাহিদা মেটাতে অনেকেই শীতকে উপেক্ষা করেই কাজের সন্ধানে ছুটছেন।
শীতের কারণে দিনের ব্যস্ততম সড়কগুলোও অনেকটা ফাঁকা দেখা গেছে। হাটবাজারগুলোতেও জনসমাগম কমে এসেছে। দিনের বেলা সূর্যের দেখা মিললেও ঠান্ডা বাতাসের কারণে অনেকে কাজ করতে আগ্রহী হচ্ছেন না। ভোরে হালকা কুয়াশা থাকায় বিভিন্ন সড়কে যানবাহনগুলোকে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে।
শীতজনিত রোগীর সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে স্থানীয় হাসপাতালগুলোতে। শিশু ও বয়স্করা শীতের প্রকোপে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। শ্বাসকষ্ট, সর্দি-কাশি, ডায়রিয়া এবং ঠান্ডাজনিত অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হয়ে অনেকে চিকিৎসা নিতে আসছেন।
দিনাজপুর আবহাওয়া অফিসের অফিসার ইনচার্জ মো. তোফাজ্জল হোসেন জানিয়েছেন, বর্তমানে তীব্র হিমেল বায়ু সক্রিয় রয়েছে। যদিও কুয়াশার উপস্থিতি কম, তবে হিম বাতাসের কারণে তাপমাত্রা কমেছে। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় রেকর্ড করা তাপমাত্রা ছিল ১০ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে গেছে। বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯১ শতাংশ এবং গড় গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৫ কিলোমিটার।
স্থানীয় বাসিন্দারা শীত মোকাবিলায় আগুন জ্বালানোর পাশাপাশি বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করলেও অনেকেই পর্যাপ্ত শীতবস্ত্রের অভাবে কষ্ট পাচ্ছেন। সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
শীতের এমন তীব্রতা আগামী কয়েকদিন ধরে আরও বাড়তে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। হিমেল বাতাস ও তাপমাত্রা হ্রাস জনজীবনকে আরও বিপর্যস্ত করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
repoter