
ছবি: ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা, ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কূটনৈতিক আলোচনা চলছে, যেখানে বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক এবং দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে উঠেছে। নতুন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. জয়শঙ্করের মধ্যে এক বৈঠকে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে আলোচনা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারত উভয়ই বাংলাদেশে চীনের প্রভাব বাড়ানোর দিকে নজর রেখেছে এবং তাদের সম্পর্ক আরও গভীর করার জন্য কৌশল গ্রহণ করছে।
বৈঠকে, জয়শঙ্কর বলেন, "বাংলাদেশ প্রসঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রুবিওর সঙ্গে আমাদের আলোচনা হয়েছে, তবে বিস্তারিত এখনই প্রকাশ করা সম্ভব নয়।" ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই মন্তব্যের পর, ঢাকা-দিল্লি কূটনৈতিক চ্যানেলগুলোতে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন, ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্র হয়তো বাংলাদেশের ব্যাপারে তাদের অবস্থান আরও পরিষ্কার করতে চাইছে, বিশেষ করে এই সময়ে বাংলাদেশের চীনের সঙ্গে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হচ্ছে।
উল্লেখযোগ্য যে, বাংলাদেশ এখন একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূরাজনৈতিক অবস্থানে রয়েছে এবং দুই দেশই চাইছে না যে, ঢাকা চীনের প্রভাবের দিকে আরও ঝুঁকে পড়ুক। চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চীনের সফরের বিষয়টি এই পরিস্থিতিতে বিশেষ মনোযোগের দাবি রাখে। একই সঙ্গে, ড. ইউনূসের সঙ্গে বাইডেন সরকারের সম্পর্ক এবং তাকে সমর্থন দেওয়ার বিষয়েও দুই দেশের মধ্যে আলোচনা চলছে।
অপরদিকে, ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসন নীতি এবং ভারতের অভিবাসী জনগণের প্রতি তার অবস্থান নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে বসবাসকারী ভারতীয় অভিবাসীদের নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। গত তিন দিনে পাঁচ শতাধিক অভিবাসী গ্রেপ্তার হয়েছেন, এর মধ্যে চারজন বাংলাদেশি এবং ভারতের বেশ কিছু নাগরিকও রয়েছেন। এসব নীতি, ভারতীয়দের জন্য বিপদজনক হতে পারে, বিশেষত যাদের সঠিক কাগজপত্র নেই।
বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কও বর্তমানে বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেছেন, "আমরা বাংলাদেশসহ সকল প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে চাই এবং সব বিষয় পর্যবেক্ষণে রাখি।" তিনি আরও বলেন, "সীমান্তে বেড়া দেওয়ার বিষয়টি দুদেশের মধ্যে সমঝোতার অংশ হিসেবে ইতিবাচকভাবে কার্যকর হবে, যা মানব পাচার ও অন্যান্য অপরাধ বন্ধ করতে সাহায্য করবে।"
এছাড়া, ভারত-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও গভীর করার জন্য বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বিশেষ করে, ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে স্বাধীন ও মুক্ত ভূমিকা বজায় রাখার বিষয়টি গুরুত্ব পেয়েছে। এই অঞ্চলের নিরাপত্তা এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য দুই দেশ একসঙ্গে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
repoter