
ছবি: ‘নন-ফর্মাল এডুকেশন ফর ইয়ুথ-লেড চেঞ্জ: ইয়ুথ ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামিং ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে অতিথিরা
ব্রিটিশ কাউন্সিল ও লিডস বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে ‘নন-ফর্মাল এডুকেশন ফর ইয়ুথ-লেড চেঞ্জ: ইয়ুথ ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামিং ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) ব্রিটিশ কাউন্সিলের মিলনায়তনে এই গবেষণার প্রতিবেদনটি উন্মোচিত হয়, যা দেশের তরুণ প্রজন্মের উন্নয়নে বিভিন্ন কার্যক্রমের ওপর বিস্তারিত ধারণা প্রদান করে।
গবেষণাটি ব্রিটিশ কাউন্সিল ও লিডস বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত হয় এবং এর অর্থায়ন করেছে ইউকে রিসার্চ অ্যান্ড ইনোভেশনের (ইউকেআরআই) আর্টস অ্যান্ড হিউম্যানিটিজ রিসার্চ কাউন্সিল (এএইচআরসি)। এই গবেষণায় ব্রিটিশ কাউন্সিলের ‘লিডারশিপ ফর অ্যাডভান্সিং ডেভেলপমেন্ট ইন বাংলাদেশ (লিড বাংলাদেশ)’ প্রকল্পটি নিয়ে বিশদ বিশ্লেষণ করা হয়, যেখানে তরুণদের ক্ষমতায়ন, সামাজিক ন্যায়বিচারের প্রচার এবং তরুণ নেতৃত্বাধীন পরিবর্তনকে প্রভাবিত করার ক্ষেত্রে প্রকল্পটির ভূমিকা তুলে ধরা হয়।
গবেষণায় বলা হয় যে, লিড বাংলাদেশ প্রোগ্রামটি তরুণদের জন্য প্রয়োজনভিত্তিক প্রশিক্ষণ মডিউলের মাধ্যমে সামাজিক পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। সক্রিয় নাগরিকত্ব, লৈঙ্গিক সমতা এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় (এসডিজি) গুরুত্ব আরোপ করে পরিচালিত এই প্রোগ্রামের সাফল্যে অংশগ্রহণ ও সম্পৃক্ততামূলক কার্যক্রমের ভূমিকা ছিল বিশেষ।
এছাড়া, গবেষণায় তরুণ নেতৃত্বাধীন সামাজিক কর্ম প্রকল্পগুলোর (এসএপি) গুরুত্বও তুলে ধরা হয়েছে, যা তাত্ত্বিক জ্ঞানের ব্যবহারিক প্রয়োগে এবং ইতিবাচক পরিবর্তনে ভূমিকা রেখেছে। গবেষণায় উল্লেখ করা হয় যে, তরুণদের সাথে সম্পর্কিত বেশ কিছু চ্যালেঞ্জের মধ্যে রয়েছে তাদের সাথে সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, নীতিনির্ধারকদের সাথে যোগাযোগ এবং সম্পদের অপ্রতুলতা।
গবেষণার ফলে বেশ কিছু সুপারিশও এসেছে, যেমন: প্রোগ্রামের সময় বাড়ানো, এসএপি বাজেট বৃদ্ধি, ফলো-আপ এবং মনিটরিং ব্যবস্থা শক্তিশালী করা, অতিরিক্ত এসডিজি লক্ষ্য যুক্ত করা, এবং ধারাবাহিকভাবে বিস্তৃত পরিসরে শেখার পরিবেশ তৈরির প্রয়োজনীয়তা।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী। তিনি তরুণদের শক্তিকে অগ্রাধিকার দেওয়ার বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন এবং তরুণদের উন্নয়নে আরও সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়ার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর স্টিফেন ফোর্বস তার স্বাগত বক্তব্যে বলেন, ব্রিটিশ কাউন্সিলের লিড বাংলাদেশ প্রোগ্রামের ওপর এই গবেষণা প্রতিবেদনটি তরুণদের উন্নয়ন কার্যক্রমের রূপান্তরমূলক শক্তিকে তুলে ধরেছে। তিনি বলেন, এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে তরুণদের জ্ঞান ও দক্ষতা উন্নয়ন করা হয়েছে, যা তাদের নিজ নিজ কমিউনিটিতে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সহায়ক হয়েছে। তবে, তিনি আরও বলেন, তরুণদের ক্ষমতায়নে এখনও অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে এবং বাংলাদেশে আরও অনেক কিছু করার সুযোগ রয়েছে।
লিডস বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব পলিটিকস অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের ড. কেটি হজকিনসন গবেষণার ফলাফল বিস্তারিতভাবে উপস্থাপন করেন। পরে অধ্যাপক মোহাম্মদ মনিনুর রশিদ ও ব্রিটিশ কাউন্সিলের নন-ফর্মাল এডুকেশন (এনএফই) টিম একটি প্রশ্নোত্তর পর্ব পরিচালনা করেন এবং গবেষণার বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
অনুষ্ঠানে এক আলোচনা সভারও আয়োজন করা হয়, যেখানে বাংলাদেশে তরুণদের উন্নয়নের অগ্রাধিকারের বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়। এসব বিষয়ে কর্মসংস্থানের জন্য দক্ষতা, গণতান্ত্রিক শাসন ও কমিউনিটির সম্পৃক্ততার গুরুত্ব তুলে ধরা হয়।
repoter