ছবি: বিটিআরসির লোগো | ফাইল ছবি
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার স্যাটেলাইট ইন্টারনেট চালু করার লক্ষ্যে একটি খসড়া নির্দেশিকা চূড়ান্ত করতে জনগণের মতামত সংগ্রহ করছে। সরকার এবং টেলিকম স্টেকহোল্ডাররা বিশ্বাস করেন যে, এই পদক্ষেপ দেশের ডেটা পরিষেবায় বিপ্লব ঘটাবে এবং ডিজিটাল বিভাজন দূর করে নতুন সুযোগের পথ খুলে দেবে।
এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, স্যাটেলাইট ইন্টারনেট চালু হলে গ্রাহকদের জন্য ডেটা ব্যবহারের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে এবং এটি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, ব্যাকহোলিংসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহায়ক হবে। এর মাধ্যমে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় স্যাটেলাইট কোম্পানি যেমন স্টারলিংক বাংলাদেশে প্রবেশের সুযোগ পাবে।
বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি) গত ২৯ অক্টোবর তাদের ওয়েবসাইটে এনজিএসও স্যাটেলাইট পরিষেবা অপারেটরদের জন্য খসড়া নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে। নির্দেশিকা চূড়ান্ত করার জন্য ১৮ নভেম্বরের মধ্যে মতামত চাওয়া হয়েছে।
নতুন পরিষেবা ও লাইসেন্সিং নির্দেশিকা
খসড়া নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, বিদেশী এবং যৌথ উদ্যোগে মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলি এনজিএসও স্যাটেলাইট সিস্টেম এবং পরিষেবাগুলোর নির্মাণ, মালিকানা, রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনার জন্য আবেদন করতে পারবে। এতে ১০০% বিদেশী বা যৌথ উদ্যোগের বিনিয়োগকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
লাইসেন্সের মেয়াদ হবে পাঁচ বছর এবং এতে অন্তর্ভুক্ত হবে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট, ইন্ট্রানেট পরিষেবা, ইন্টারনেট অব থিংস, মেশিন-টু-মেশিন সংযোগ এবং অন্যান্য সেবা। তবে স্যাটেলাইট ভিত্তিক সরাসরি-টু-হোম এবং সম্প্রচার পরিষেবা সরবরাহের জন্য অনুমোদন দেওয়া হবে না।
লাইসেন্সধারীদের বার্ষিক রাজস্বের নির্দিষ্ট শতাংশ বিটিআরসিকে জমা দিতে হবে এবং তাদের অন্তত একটি গেটওয়ে সিস্টেম স্থাপন করতে হবে।
মোবাইল অপারেটরদের প্রতিক্রিয়া
রবি আজিয়াটার চিফ করপোরেট কর্মকর্তা শাহেদ আলম স্যাটেলাইট ইন্টারনেট চালুর উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং এ পদক্ষেপকে ডেটা পরিষেবায় বিপ্লবী হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
বাংলালিংকের চিফ করপোরেট কর্মকর্তা তৈমুর রহমান বলেছেন, "এ উদ্যোগটি সবার মতামত নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার জন্য প্রশংসনীয়, যা সঠিক দিকনির্দেশনায় সহায়তা করবে।"
গ্রামীণফোনের হেড অব কমিউনিকেশনস শরফুদ্দিন আহমেদ চৌধুরী জানান, "নতুন প্রযুক্তি দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে, তবে সবার জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টির ক্ষেত্রে সঠিক নিয়মনীতি মেনে কাজ করা উচিত।"
আইএসপিএবি সভাপতি মো. এমদাদুল হক নতুন প্রযুক্তি গ্রহণে প্রস্তুত থাকার কথা বলেছেন, তবে এটি দেশের প্রয়োজনে উপযুক্ত কিনা তা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার কথা জানিয়েছেন।
এই উদ্যোগটি দেশের প্রযুক্তি খাতে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনতে পারে এবং ডিজিটাল ব্যবস্থায় সুষম প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে।
repoter