
ছবি: ছবি: সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ায় লস অ্যাঞ্জেলেসসহ আনাহেইম, রিভারসাইড, স্যান বারনার্ডিনো ও অক্সনার্ড অঞ্চলে চলমান দাবানল ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। এ দাবানলে প্রায় ৬০ লাখ মানুষ মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়েছেন। স্থানীয় প্রশাসন বাসিন্দাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নানা জরুরি পদক্ষেপ নিচ্ছে।
সিএনএন-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, দাবানলে এখন পর্যন্ত অন্তত ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া আরও অসংখ্য মানুষের জীবন হুমকির মুখে রয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শত শত দমকলকর্মী নিরলসভাবে কাজ করে চলেছেন। তবে তীব্র বাতাস পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ করে তুলছে।
বিশেষ করে, আবহাওয়াবিদদের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আগামী কয়েক ঘণ্টায় আরও শক্তিশালী বাতাস বইতে পারে। এ ধরনের বাতাস দাবানলের আগুনকে দ্রুত ছড়িয়ে দিতে সক্ষম, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলবে।
ক্যালিফোর্নিয়ার ইতিহাসে প্যালিসেডস ও ইটন দাবানল দুটি সবচেয়ে বিধ্বংসী হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। আগুনের তীব্রতা ও বিস্তার দেখে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, জলবায়ু পরিবর্তন এবং পরিবেশ দূষণ এই আগুনের ভয়াবহতা আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলে স্থানীয় প্রশাসন এবং দমকল বাহিনী একযোগে কাজ করছে। বাসিন্দাদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া এবং প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়ার জন্য বিভিন্ন শিবির স্থাপন করা হয়েছে। যদিও পরিস্থিতি মোকাবিলায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এদিকে, পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দাবানলের এ ধরনের ঘটনা জলবায়ু পরিবর্তনের একটি সরাসরি প্রভাব। ক্রমাগত তাপমাত্রা বৃদ্ধি এবং বৃষ্টিপাতের অপ্রতুলতার কারণে দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ার এই অঞ্চলগুলোতে আগুনের ঝুঁকি বাড়ছে। আগামীতে এ ধরনের ঘটনা আরও ঘন ঘন ঘটার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
দাবানলের প্রভাব শুধু ক্ষয়ক্ষতির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকছে না। এতে সৃষ্ট ধোঁয়া ও দূষণে আক্রান্ত হয়ে আরও অনেক মানুষ শ্বাসকষ্ট ও অন্যান্য শারীরিক জটিলতায় ভুগছে। চিকিৎসা কেন্দ্রে ভিড় বাড়ছে, আর স্থানীয় হাসপাতালগুলোতে সংকট সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সচেতনতা ও সহায়তার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে পরিবেশবিদরা জোর দিয়েছেন। জলবায়ু পরিবর্তন রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য বিশ্ব নেতাদের আরও জোরালো উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
বর্তমানে দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ায় এমন ভয়াবহ দাবানল নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রশাসন ও স্থানীয় বাসিন্দারা সব ধরনের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে, সে বিষয়ে এখনই নিশ্চিতভাবে কিছু বলা যাচ্ছে না।
repoter