ছবি: ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের প্রভাবে প্রায় ৫৪ লাখ কর্মী তাদের চাকরি হারাতে পারেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে তাঁরা মনে করেন, এর ফলে দেশের অর্থনীতিতে কিছু সংকট দেখা দিলেও, একই সঙ্গে নতুন সম্ভাবনার দ্বারও উন্মুক্ত হতে পারে। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এবং সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে সরকারের নতুন একটি কৌশলপত্র তৈরি করার পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা।
গতকাল সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পর্যটন ভবনে এসএমই ফাউন্ডেশন এবং জার্মান উন্নয়ন সংস্থা এফইএস বাংলাদেশ-এর উদ্যোগে আয়োজিত সেমিনারে বিশেষজ্ঞরা এই বিষয়গুলো তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ার হোসেন চৌধুরী স্বাগত বক্তব্য দেন। এছাড়াও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী, শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. সলিম উল্লাহ এবং এফইএস বাংলাদেশ-এর আবাসিক প্রতিনিধি ড. ফেলিক্স গার্ডেসসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যপ্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. কাজী মুহাইমিন-উস-সাকিব মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। প্রবন্ধে এটুআই এবং আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা আইএলওর গবেষণার তথ্য তুলে ধরে বলা হয়, চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের ফলে তৈরি পোশাক খাতের ২৭ লাখ, ফার্নিচার খাতের প্রায় ১৪ লাখ, কৃষিপণ্য ও পর্যটন খাতের ৬ লাখ করে মোট ১২ লাখ, এবং চামড়াশিল্পের ১ লাখ কর্মী চাকরি হারাতে পারেন। এছাড়া গবেষণা সংস্থা সিপিডি ও পিআরআই-এর তথ্যও এই প্রবন্ধে তুলে ধরা হয়।
বিশেষজ্ঞরা আরও বলেন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বা আইসিটি ব্যবহারে পিছিয়ে থাকা দেশের এসএমই খাত, যা বাংলাদেশের অর্থনীতি ও কর্মসংস্থান তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে, চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সংকটে পড়তে পারে। এ অবস্থায় এসএমই খাতে পণ্য রপ্তানি, নতুন ব্যবসা মডেল তৈরি এবং নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরিতে একটি কৌশলপত্র প্রয়োজন।
সেমিনারে এসএমই উদ্যোক্তা, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, এসএমই চেম্বার ও অ্যাসোসিয়েশন, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান, গবেষক, অর্থনীতিবিদসহ বিভিন্ন অংশীজনেরা অংশগ্রহণ করেন। দেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং পরিবেশগত সুরক্ষার মাধ্যমে এসএমই খাতের উন্নয়ন এবং সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী এসএমই ফাউন্ডেশন জাতীয় শিল্পনীতি-২০২২, পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা, এবং জাতিসংঘের এসডিজি-২০৩০-এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে।
২০০৭ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন এই প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন কর্মসূচির সুবিধাভোগী দেশের প্রায় ২০ লাখ ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা।
repoter