ছবি: ছবি: সংগৃহীত
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঘোষিত ‘জাতীয় ছাত্র সংহতি সপ্তাহ’ উপলক্ষে ছাত্র সংগঠনগুলোর এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হলেও তাতে যোগ দেয়নি ছাত্র ইউনিয়ন ও জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। রবিবার বিকেল সাড়ে ৩টায় অনুষ্ঠিত সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের দশটি ছাত্র সংগঠনের প্রতিনিধি উপস্থিত থাকলেও উল্লেখযোগ্য এই দুই সংগঠনের অনুপস্থিতি নিয়ে শুরু হয়েছে সমালোচনা। সভায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ইসলামী ছাত্রশিবির, জাতীয় নাগরিক কমিটি, ছাত্র অধিকার পরিষদ, ইসলামী ছাত্র মজলিস, বিপ্লবী ছাত্র পরিষদ, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন, স্টুডেন্টস অ্যালায়েন্স ফর ডেমোক্রেসি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্রজনতা এবং অধিকার রক্ষা পরিষদের প্রতিনিধি অংশ নেন।
সভায় উপস্থিত সংগঠনগুলোর নেতারা জাতীয় ঐক্য ধরে রাখতে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি ও প্রস্তাবনা তুলে ধরেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি বলেন, শিক্ষার্থীদের পক্ষে কে কতটা কাজ করছে সেটাই গুরুত্বপূর্ণ। ছাত্রদল ও বাম সংগঠনগুলোর অনুপস্থিতি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, রাগ-অভিমান আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান সম্ভব। সভায় ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি মুহাম্মাদ ইব্রাহীম প্রশাসনের ব্যর্থতার সমালোচনা করে বলেন, শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে মাঠে থাকলেও প্রশাসনের উচিত ছিল তাদের সমস্যাগুলো সমাধান করা। জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য জোবায়রুল হাসান আরিফ সংবিধান সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে বলেন, বর্তমান ক্ষমতার কাঠামো স্বৈরাচারিতার জন্ম দেয়।
অনুষ্ঠানে ইসলামী ছাত্র মজলিসের সভাপতি সাকিব মাহমুদ রুমি ঐক্যের প্রয়োজনীয়তার কথা বললেও ছাত্র ইউনিয়নের অনুপস্থিতি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন। ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলনের আমিনুল ইসলাম রাকিব বলেন, সংহতি শুধুমাত্র এক সপ্তাহের জন্য নয় বরং এটি একটি স্থিতিশীল সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়া পর্যন্ত চলমান থাকা উচিত। ছাত্র অধিকার পরিষদের রোমান রহমান বলেন, ছাত্রদলের অনুপস্থিতি হতাশাজনক কারণ তারা অতীতে আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি সুদীপ্ত চাকমা জানান, তাদের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তারা কোনো বৈঠকে ইসলামী ছাত্রশিবিরের সঙ্গে বসবেন না। তবে ছাত্রদলের কোনো প্রতিনিধির মন্তব্য পাওয়া যায়নি। ক্যাম্পাসে এই বিভক্তি নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে, যারা ছাত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে সহাবস্থান প্রত্যাশা করেন।
উল্লেখ্য, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ২৫ নভেম্বর থেকে এক সপ্তাহব্যাপী ‘জাতীয় ছাত্র সংহতি সপ্তাহ’ পালনের ঘোষণা দেয়, যার উদ্দেশ্য ছিল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চলমান অস্থিরতা নিরসন এবং স্বৈরাচারবিরোধী ঐক্য প্রতিষ্ঠা করা।
repoter