
ছবি: ছবি: সংগৃহীত
চীনের পর এবার মালয়েশিয়াতেও হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস (এইচএমপিভি) সংক্রমণ দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। মালয়েশিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে এবং জনসাধারণকে মাস্ক পরিধান ও নিয়মিত সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার পরামর্শ দিয়েছে।
২০২০ সালের করোনা মহামারির পর চীনে নতুন এই ভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দেয়। এতে বিশেষ করে শিশুদের মধ্যে আক্রান্তের হার বেশি। হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপ বেড়ে চলেছে। একই পরিস্থিতি এখন মালয়েশিয়াতেও দেখা যাচ্ছে। এ বিষয়ে মালয়েশিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জনসাধারণকে সচেতন হতে এবং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলেছে বলে জানিয়েছে দ্য ইকোনোমিক টাইমস।
এই ভাইরাসটি হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস নামে পরিচিত। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি শীতের মৌসুমে বেশি সক্রিয় হয়ে ওঠে এবং সাধারণত ঠাণ্ডা জ্বরের মতো উপসর্গ সৃষ্টি করে। বর্তমানে চীনের বিভিন্ন অঞ্চলে এর দ্রুত বিস্তার নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে।
চীনের স্বাস্থ্য বিভাগ কয়েকদিন আগেই ফ্লু-জাতীয় রোগের হার বৃদ্ধি নিয়ে সতর্ক করেছিল। তবে পরিস্থিতি গুরুতর হলেও এ বিষয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়নি। এতে অনেকেই তথ্য গোপনের আশঙ্কা প্রকাশ করছেন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ভাইরাসের সংক্রমণ আরও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়লে এটি একটি বড় সংকট তৈরি করতে পারে।
এইচএমপিভি ভাইরাস সম্পর্কে জানা গেছে, এটি একটি শ্বাসযন্ত্রের ভাইরাস, যা ওপরের এবং নীচের শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ ঘটায়। সিডিসির তথ্যানুযায়ী, ভাইরাসটি সব বয়সের মানুষের ওপর প্রভাব ফেলে। তবে শিশু, বয়স্ক এবং দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য এটি সবচেয়ে বিপজ্জনক।
এইচএমপিভি প্রথম সনাক্ত করা হয় ২০০১ সালে। এর উপসর্গগুলো ফ্লু বা সাধারণ সর্দি-কাশির মতো। সাধারণ উপসর্গের মধ্যে রয়েছে কাশি, জ্বর, নাক বন্ধ হওয়া এবং শ্বাসকষ্ট। গুরুতর সংক্রমণের ক্ষেত্রে এটি ব্রঙ্কাইটিস বা নিউমোনিয়ার মতো জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে।
এই ভাইরাসের উন্মেষপর্ব বা ইনকিউবেশন পিরিয়ড সাধারণত তিন থেকে ছয় দিনের মধ্যে হয়। তবে সংক্রমণের তীব্রতার ওপর লক্ষণগুলো বিভিন্ন সময়ের জন্য স্থায়ী হতে পারে।
এইচএমপিভি ভাইরাস সাধারণত কাশি বা হাঁচি থেকে নির্গত ড্রপলেটের মাধ্যমে, হাত মেলানো বা সরাসরি স্পর্শের মাধ্যমে, অথবা সংক্রমিত জায়গায় স্পর্শ করে তারপর মুখ, নাক বা চোখ স্পর্শ করার মাধ্যমে ছড়ায়।
বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন, জনসাধারণ যেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে এবং ভাইরাসটি মোকাবিলায় সচেতন থাকে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের সুরক্ষায় প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার উপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
repoter