
ছবি: ছবি: সংগৃহীত
জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, “চা বাগানে বৈষম্যের অবসান ঘটাতে চাইলে আগে বাগানের মদের পাট্টা ভাঙতে হবে। মাথা সঠিক থাকলে কেউ তা কিনতে পারবে না। কিন্তু এমন একটি চক্রান্ত চালানো হয়েছে যাতে শ্রমিকদের মানসিক শক্তি দুর্বল থাকে।”
রবিবার বিকেলে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার কুরমা চা বাগানে চা শ্রমিকদের নিয়ে এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। সমাবেশের আয়োজন করে জাতীয় নাগরিক কমিটি। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের মনু-ধলই ভ্যালীর সভাপতি ধনা বাউরি।
সমাবেশে ন্যাশনাল টি কোম্পানিসহ বন্ধ চা বাগানগুলো পুনরায় চালু করা, শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি নিশ্চিত করা, স্বাস্থ্যসেবা, বাসস্থান ও কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তা প্রদানের দাবি জানানো হয়।
সারজিস আলম বলেন, “শেখ হাসিনা ভারতের সঙ্গে বৈষম্যমূলক চুক্তি করেছেন, যা শুধু অল্প কিছু মানুষকে লাভবান করেছে। শেখ পরিবারের সদস্যরা বিদেশে বাড়ি, গাড়ি কিনছেন, অথচ চা শ্রমিকরা আজও মৌলিক চাহিদা থেকে বঞ্চিত। বিগত ১৬ বছর ধরে ‘উন্নয়ন’ নিয়ে গল্প শোনা গেলেও বাস্তবে উন্নয়নের চিত্র কোথায়? ঢাকার গোপালগঞ্জ থেকে কি কখনো মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের চা শ্রমিকদের পাড়ায় চোখ পড়েছে?”
অনুষ্ঠানে জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় সংগঠক প্রীতম দাশ বলেন, “চা শ্রমিকরা যুগের পর যুগ বৈষম্যের শিকার। বর্তমান ব্যবস্থায় অবাধ লুটপাট চা শিল্প এবং শ্রমিকদের ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে। শ্রমিকদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাসস্থান, এবং কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে হবে।”
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার, কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক শ্যামলী সুলতানা জ্যানি, আসাদুল্লাহ গালিব, এবং কুরমা চা বাগানের সহকারী ব্যবস্থাপক ইউসুফ খান।
অন্যান্য বক্তাদের মধ্যে ছিলেন চা শ্রমিক নারী নেত্রী গিতা কানু, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান খাইরুন আক্তার, স্থানীয় ইউপি সদস্য নুরুল ইসলাম, পঞ্চায়েত সভাপতি নারদ পাশী, এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাজমিন সুলতানা।
বক্তারা একসঙ্গে চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নের ওপর জোর দেন এবং দাবি করেন যে দীর্ঘদিনের বৈষম্য ও শোষণের অবসান হওয়া উচিত। চা শ্রমিকদের অধিকারের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের প্রয়োজনীয়তার কথাও সমাবেশে উঠে আসে।
repoter