
ছবি: ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত তিন মাসে ব্যাংকগুলোতে কোটিপতি আমানতকারীর সংখ্যা প্রায় পাঁচ হাজার বেড়েছে। ২০২৪ সালের ডিসেম্বর শেষে এক কোটি টাকার বেশি আমানত রয়েছে এমন ব্যাংক হিসাবের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ২২ হাজার ৮১টি। তিন মাস আগে, ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর শেষে এই সংখ্যা ছিল ১ লাখ ১৭ হাজার ১২৭টি। এর মাধ্যমে, এই তিন মাসে কোটিপতি হিসাবের সংখ্যা বেড়েছে ৪ হাজার ৯৫৪টি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর ডিসেম্বর শেষে এক কোটি টাকার বেশি আমানত রয়েছে এমন ব্যাংক হিসাবের সংখ্যা ১ লাখ ২২ হাজার ৮১টি ছিল। তিন মাস আগে, সেপ্টেম্বর মাসে এই সংখ্যা ছিল ১ লাখ ১৭ হাজার ১২৭টি, অর্থাৎ, তিন মাসে কোটিপতি হিসাবের সংখ্যা ৪,৯৫৪টি বেড়েছে। এর আগের প্রান্তিকে, ২০২৪ সালের জুন মাসে কোটিপতি হিসাবের সংখ্যা ছিল ১ লাখ ১৮ হাজার ৭৮৪টি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এ সময়ের মধ্যে ব্যাংকগুলোতে এক শ্রেণির বড় গ্রাহকরা তাদের টাকা জমা রাখতে শুরু করেছে। সরকারের কঠোর অবস্থানের কারণে অনেক ব্যবসায়ী এবং দুর্নীতিবাজরা এখন অর্থ পাচার করতে পারছেন না। এই পরিস্থিতির মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অনেক সন্দেহভাজন ব্যক্তির বাসায় অভিযান চালিয়ে বড় অঙ্কের টাকা উদ্ধার করেছে। এসব কারণে অনেক বড় গ্রাহক ব্যাংকে টাকা জমা রেখে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চাচ্ছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ডিসেম্বর শেষে ব্যাংক খাতে মোট হিসাবের সংখ্যা ছিল ১৬ কোটি ৩২ লাখ ৪৭ হাজার ৫৩২টি, এবং মোট আমানতের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ১৮ লাখ ৮৩ হাজার ৭১১ কোটি টাকা। সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংক খাতে মোট হিসাবের সংখ্যা ছিল ১৬ কোটি ২০ লাখ ২৮ হাজার ২৫৫টি, এবং এসব হিসাবের মোট আমানত ছিল ১৮ লাখ ২৫ হাজার ৩৩ কোটি টাকা। তিন মাসে ব্যাংক খাতের হিসাব সংখ্যা বেড়েছে ১২ লাখ ১৯ হাজার ২৭৭টি, এবং আমানতের পরিমাণ বেড়েছে ৪৫ হাজার ৬২৮ কোটি টাকা।
এছাড়া, গত কয়েক মাসে দেশে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি এবং ব্যবসায়ীদের অতি মুনাফা অর্জনও প্রভাব ফেলেছে ব্যাংক হিসাবের সংখ্যা বৃদ্ধিতে। সরকারের কঠোর অবস্থান এবং লুটপাটকারীদের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপের কারণে অনেক ব্যবসায়ী তাদের নগদ টাকা ব্যাংকে জমা রেখেছেন। ব্যাংক খাতের হিসাব সংখ্যা এবং আমানতের পরিমাণ বৃদ্ধির এই প্রবণতা ভবিষ্যতে আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
repoter