
ছবি: ছবি: সংগৃহীত
বাজার ব্যবস্থাপনা সঠিকভাবে নিশ্চিত করতে দেশে প্রতিযোগিতা কমিশন, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, এবং ব্যবসায়ী পরিসর বৃদ্ধির জন্য টিসিবি কাজ করছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। এছাড়া বাজারকে ভোক্তার জন্য সহনীয় করতে ট্যারিফ কমিশন এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কাজ করে যাচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
ঢাকার একটি স্থানীয় হোটেলে অনুষ্ঠিত "খাদ্য পণ্যের যৌক্তিক দাম: বাজার তত্ত্বাবধানের কৌশল অনুসন্ধান" শীর্ষক পলিসি কনক্লেভে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, দেশে আমদানি ব্যবস্থা ও পণ্য মজুত যথেষ্ট পরিমাণে রয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে বিভিন্ন পণ্যের দামের ওঠানামার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দেশের বাজারেও মূল্য হ্রাস পাওয়ার কথা, তবে বাস্তবে তা দেখা যাচ্ছে না। রমজান উপলক্ষে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীর কোনো সংকট হবে না বলেও আশ্বস্ত করেন তিনি।
স্থানীয় উৎপাদক, আমদানিকারক এবং ব্যবসায়ীদের বাজারকে আরও প্রতিযোগিতামূলক করার আহ্বান জানিয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, বাজার ব্যবস্থাপনায় দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রয়োজন। খাদ্যপণ্যের যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণের জন্য স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নেওয়া হবে, যা ভবিষ্যতে বাস্তবায়নের জন্য কাজ করা হবে।
শেখ বশিরউদ্দীন আরও বলেন, রাইস ব্রান অয়েল স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। পূর্বে বছরে ৫-৬ লাখ টন রাইস ব্রান অয়েল ভারতে রপ্তানি হতো, যা নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য ২৫ শতাংশ রেগুলেটরি ট্যাক্স আরোপ করা হয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, এই তেল স্থানীয় বাজারে এলে তেলের বাজার আরও স্থিতিশীল হবে। তিনি বলেন, বোতলজাত ও খোলা তেলের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই, একমাত্র পার্থক্য দাম।
বাজারে প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করতে সরকার প্রতিযোগিতা কমিশনকে আরও স্বাধীন করার উদ্যোগ নিচ্ছে বলেও জানান তিনি। তবে তিনি উল্লেখ করেন, দেশে নীতিনির্ধারণের ক্ষেত্রে ধনীক শ্রেণির সুবিধাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে, সাধারণ জনগণের স্বার্থের কথা খুব বেশি ভাবা হয়নি।
গত ১৫ বছরে দেশে বড় কোনো বিনিয়োগ হয়নি, ফলে কর্মসংস্থানের সুযোগও বাড়েনি বলে মন্তব্য করেন তিনি। বিনিয়োগ বাড়ানো ছাড়া কর আদায়ের পরিমাণ বৃদ্ধি করা সম্ভব নয় বলেও মত প্রকাশ করেন তিনি। ব্যাংকিং খাত নিয়ে সমালোচনা করে তিনি বলেন, ব্যাংকগুলোকে অপরাধ প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা হয়েছে। ইসলামী ব্যাংক ও টিসিবিকে ধ্বংস করা হয়েছে, এবং টিসিবির তালিকায় ৪৩ লাখ ভুয়া উপকারভোগীর সন্ধান পাওয়া গেছে, যা আরও যাচাই করা দরকার।
অনুষ্ঠানে কী-নোট উপস্থাপন করেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। এছাড়া জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ও অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব (রুটিন দায়িত্ব) মো. আবদুর রহিম খান, জাতীয় নাগরিক কমিটির প্রধান সংগঠক সার্জিস আলম এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সমন্বয়ক উমামা ফাতেমা বক্তৃতা করেন।
repoter