ঢাকা,  শুক্রবার
১৮ এপ্রিল ২০২৫ , ০৯:২৩ মিনিট

Donik Barta

শিরোনাম:

* ইউরোপে রাজনৈতিক আশ্রয় পেতে কঠিন হবে বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য * আলোচনায় অসন্তুষ্ট কারিগরি শিক্ষার্থীরা, আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা * চীন থেকে অর্থ আনার অনিয়মে জড়িত থাকার অভিযোগে এনবিআরের দুই কর্মকর্তা বাধ্যতামূলক অবসরে * ঢাকার চারপাশে গড়ে উঠছে ব্লু নেটওয়ার্ক: পানি সম্পদ উপদেষ্টা * বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্ক নিয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা * গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি বাড়ালেও সরবরাহ সংকট ও চুরি কমেনি * দেশজুড়ে বজ্রসহ বৃষ্টির আভাস, কোথাও কোথাও শিলাবৃষ্টির সম্ভাবনা * ২১ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন, বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি নেমে এসেছে ৬ দশমিক ৮২ শতাংশে * মাত্র ৮ দিনের মাথায় জামিনে মুক্ত ‘ডন মাসুদ’, এলাকায় ফের আতঙ্কের ছায়া * প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি প্রতিনিধি দল

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে পুনরুদ্ধারের ইঙ্গিত

repoter

প্রকাশিত: ১১:০২:৫১অপরাহ্ন , ১২ ডিসেম্বর ২০২৪

আপডেট: ১১:০২:৫১অপরাহ্ন , ১২ ডিসেম্বর ২০২৪

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: ছবি: সংগৃহীত

দীর্ঘমেয়াদে অর্থনৈতিক চাপ ও বৈদেশিক মুদ্রার চাহিদার মধ্যে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে ইতিবাচক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশের রিজার্ভ ১৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। বিপিএম-৬ হিসাব অনুযায়ী এই অর্জন সম্ভব হলেও নেট ইন্টারন্যাশনাল রিজার্ভ (এনআইআর) এখনো ১৫ বিলিয়ন ডলারের নিচে রয়েছে।

২০২১ সালের আগস্টে রিজার্ভ সর্বোচ্চ ৪৮ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছালেও নানা আর্থিক অনিয়ম ও অর্থপাচারের কারণে তা দ্রুত নিম্নমুখী হয়। সেই ধস কাটিয়ে রিজার্ভের পুনরুদ্ধারে সাম্প্রতিক পদক্ষেপগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

ডিসেম্বর মাসের ১১ তারিখ পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, দেশের মোট গ্রস রিজার্ভ ২৪ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের বিপিএম-৬ হিসাব অনুযায়ী রিজার্ভের পরিমাণ ১৯ দশমিক ২০ বিলিয়ন। তবে, নেট ইন্টারন্যাশনাল রিজার্ভ বা প্রকৃত ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ এখনো প্রায় ১৫ বিলিয়ন ডলারের মধ্যে সীমাবদ্ধ।

নেট রিজার্ভের এই সীমাবদ্ধতা দেশের আমদানি খরচ মেটানোর ক্ষেত্রে একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। প্রতি মাসে আমদানির জন্য সাড়ে পাঁচ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন হলেও বর্তমান রিজার্ভ দিয়ে এটি দীর্ঘমেয়াদে টেকসই রাখা কঠিন। আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী, একটি দেশের অন্তত তিন মাসের আমদানি খরচ মেটানোর সমান রিজার্ভ থাকা উচিত।

রিজার্ভের পরিবর্তনের সঙ্গে প্রবাসী আয়ের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স সাম্প্রতিক সময়ে দেশের অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা আনতে সাহায্য করছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে প্রবাসীরা ধারাবাহিকভাবে ২ বিলিয়নের ওপরে রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। নভেম্বর মাসে প্রবাসী আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলারে।

তবে, প্রবাসী আয়ে এই উত্থানের পেছনে রয়েছে নানা প্রেক্ষাপট। জুলাই মাসে কোটা সংস্কার আন্দোলনের কারণে দেশে সংঘাত, সংঘর্ষ এবং ইন্টারনেট বন্ধের ঘটনায় অনেক প্রবাসী বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানো বন্ধের হুমকি দিয়েছিলেন। এর ফলে ওই মাসে রেমিট্যান্স নেমে আসে মাত্র ১৯০ কোটি ডলারে, যা ছিল গত ১০ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন।

পরবর্তী সময়ে নতুন সরকারের গঠনের পর প্রবাসীরা বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানোর জন্য প্রচারাভিযানে সক্রিয় হন। এই প্রচেষ্টা এবং সরকারের উদ্যোগের ফলে রেমিট্যান্সে পুনরুদ্ধার লক্ষ্য করা যায়। আগস্ট থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে প্রবাসী আয় বেড়েছে।

এদিকে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আরও কিছু পরিসংখ্যান তুলে ধরলে দেখা যায়, গ্রস রিজার্ভ ও বিপিএম-৬ এর বাইরে নেট রিজার্ভ একটি গোপন হিসাব হিসেবে রয়ে গেছে, যা শুধুমাত্র আইএমএফকে দেওয়া হয়। এ হিসাব সাধারণ জনগণের জন্য প্রকাশ করা হয় না। নেট রিজার্ভ বাড়াতে সরকার বিভিন্ন ধরণের নীতিগত পদক্ষেপ গ্রহণ করছে, যার মধ্যে রেমিট্যান্সে প্রণোদনা ও রপ্তানিমুখী শিল্পের সহায়তা অন্যতম।

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ একটি দেশের অর্থনৈতিক শক্তিমত্তার অন্যতম প্রধান সূচক। রিজার্ভের এই ইতিবাচক পরিবর্তন দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি পুনরুদ্ধারের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশক হিসেবে কাজ করবে। তবে, এই পথচলায় চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে, বিশেষত আমদানি ব্যয়ের চাপ এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ধরে রাখার ক্ষেত্রে।

ভবিষ্যতে, বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান লক্ষ্য থাকবে রিজার্ভকে আরও শক্তিশালী করা এবং অর্থনীতিকে আরও স্থিতিশীল অবস্থায় নিয়ে আসা। এজন্য, সরকারের বিভিন্ন নীতি ও প্রবাসীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

repoter