ঢাকা,  শুক্রবার
১৮ এপ্রিল ২০২৫ , ১০:১৭ মিনিট

Donik Barta

শিরোনাম:

* ইউরোপে রাজনৈতিক আশ্রয় পেতে কঠিন হবে বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য * আলোচনায় অসন্তুষ্ট কারিগরি শিক্ষার্থীরা, আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা * চীন থেকে অর্থ আনার অনিয়মে জড়িত থাকার অভিযোগে এনবিআরের দুই কর্মকর্তা বাধ্যতামূলক অবসরে * ঢাকার চারপাশে গড়ে উঠছে ব্লু নেটওয়ার্ক: পানি সম্পদ উপদেষ্টা * বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্ক নিয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা * গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি বাড়ালেও সরবরাহ সংকট ও চুরি কমেনি * দেশজুড়ে বজ্রসহ বৃষ্টির আভাস, কোথাও কোথাও শিলাবৃষ্টির সম্ভাবনা * ২১ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন, বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি নেমে এসেছে ৬ দশমিক ৮২ শতাংশে * মাত্র ৮ দিনের মাথায় জামিনে মুক্ত ‘ডন মাসুদ’, এলাকায় ফের আতঙ্কের ছায়া * প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি প্রতিনিধি দল

বিমানের মুনাফা বৃদ্ধি, দায়-দেনার বোঝা এখনও বিশাল

repoter

প্রকাশিত: ০৩:০২:৫০অপরাহ্ন , ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪

আপডেট: ০৩:০২:৫০অপরাহ্ন , ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: ছবি: সংগৃহীত

২০২৩-২৪ অর্থবছরে রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী আকাশ পরিবহন সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস যাত্রী ও পণ্য পরিবহন, গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংসহ বিভিন্ন সেবা দিয়ে ২৮২ কোটি টাকা নিট মুনাফা করেছে। আগের অর্থবছরে এই মুনাফার পরিমাণ ছিল ২২ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে মুনাফা বৃদ্ধি পেলেও সংস্থাটির ওপর এখনও বিশাল দায়-দেনার চাপ রয়ে গেছে।

গত অর্থবছরের নিরীক্ষা প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিমানের মোট দায়-দেনার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ৯৩৬ কোটি টাকায়। এর মধ্যে বড় অংশই বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) ও পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের কাছে বকেয়া।

বিমান কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ২০২০ সালের পর থেকে নতুন কোনো দায় সৃষ্টি হয়নি এবং ২০২৭-২৮ অর্থবছরের মধ্যে পুরনো সব দেনা পরিশোধের পরিকল্পনা রয়েছে। তবে প্রতিবেদনে নির্দিষ্ট তথ্যের অভাবে কোন প্রতিষ্ঠানের কাছে কী পরিমাণ বকেয়া রয়েছে, তা পুরোপুরি জানা যায়নি।

পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের হিসাব অনুসারে, ২০২৪ সালের অক্টোবর পর্যন্ত বিমানের কাছে তাদের পাওনা ১ হাজার ৮৩২ কোটি টাকা। ২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৪ সালের অক্টোবর পর্যন্ত পদ্মা অয়েলকে ২৭৬ কোটি টাকা পরিশোধ করেছে বিমান। সর্বশেষ ২০২৪ সালের ৪ নভেম্বর বকেয়া পরিশোধ করা হয়েছে প্রায় ১৫ কোটি টাকা।

অন্যদিকে, বেবিচক থেকে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিমানের কাছে তাদের পাওনার পরিমাণ ছিল ৫ হাজার ৬১৭ কোটি টাকা। তবে সাম্প্রতিক পাওনার পরিমাণ সম্পর্কে কোনো নির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি।

বিমানের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) বোসরা ইসলাম বলেছেন, "বেবিচক ও পদ্মা অয়েল আমাদের কাছে টাকা পায়, তবে তাদের সঙ্গে আমাদের বিভিন্ন বিষয়ে বিরোধ রয়েছে। ২০২০ সালে পদ্মার সঙ্গে বিরোধ মীমাংসা হয়েছে, এবং তারা আমাদের কাছে নতুন কোনো অর্থ দাবি করছে না। সিভিল এভিয়েশনের সঙ্গে পুরনো বিরোধ এখনো রয়েছে। ডিসপিউট থাকা সত্ত্বেও আমরা নিয়মিত অর্থ পরিশোধ করে আসছি। ২০২৭-২৮ অর্থবছরের মধ্যে সব দেনা শোধ হয়ে যাবে।"

তিনি আরও জানান, "২০২০ সালের পর থেকে সিভিল এভিয়েশনের কোনো বকেয়া নেই। নিরীক্ষকরা বিষয়টি সম্পর্কে অবগত এবং এজন্য নিরীক্ষা প্রতিবেদনে এসব তথ্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।"

গত ২১ ডিসেম্বর বিমানের বার্ষিক সাধারণ সভায় জানানো হয়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বিমানের মোট আয় হয়েছে ১০ হাজার ৫৭৫ কোটি টাকা, যা পূর্ববর্তী অর্থবছরের তুলনায় ৯.৫ শতাংশ বেশি। একই সময়ে ১ হাজার ৫৫৬ কোটি টাকা অপারেশনাল মুনাফা অর্জন করেছে প্রতিষ্ঠানটি। তবে ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে এক্সচেঞ্জ লস ও ট্যাক্স-পরবর্তী নিট মুনাফা কমে দাঁড়িয়েছে ২৮২ কোটি টাকায়।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, বিমানের নিজস্ব তহবিল থেকে কেনা ১৩টি উড়োজাহাজের জন্য লোন ও সুদসহ ২০২৪ সালের নভেম্বর পর্যন্ত ১২ হাজার ৫৭৪ কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। এর মধ্যে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে পরিশোধ করা হয়েছে ১ হাজার ২৭৪ কোটি টাকা। একই অর্থবছরে ভ্যাট ও ট্যাক্স বাবদ ৯২৭ কোটি টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিয়েছে বিমান।

থার্ড টার্মিনাল প্রকল্পের অংশ হিসেবে নিজস্ব তহবিল থেকে ২৪.৫ কোটি টাকার গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সরঞ্জাম কেনা হয়েছে। গত অর্থবছরে বিমান ২১টি উড়োজাহাজ দিয়ে ৩৩ লাখ ৬৩ হাজার ৬৮৫ যাত্রী পরিবহন করেছে। একই সময়ে পরিবহন করা হয়েছে ৪৩ টনের বেশি কার্গো।

বর্তমানে বিমান ৩২টি বিদেশি যাত্রীবাহী এয়ারলাইনস ও ১৭টি কার্গো এয়ারলাইনসকে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সেবা প্রদান করছে।

বিমান কর্তৃপক্ষের আশা, ২০২৭-২৮ অর্থবছরের মধ্যে পুরনো সব দায়-দেনা পরিশোধ করে তারা একটি সম্পূর্ণ দায়মুক্ত অবস্থানে পৌঁছাবে। তবে তাদের এই পরিকল্পনার সাফল্য অনেকাংশে বেবিচক ও অন্যান্য পাওনাদারদের সঙ্গে বিরোধ মীমাংসার ওপর নির্ভরশীল।

repoter