ঢাকা,  মঙ্গলবার
১৭ জুন ২০২৫ , ০১:২৬ মিনিট

Donik Barta

শিরোনাম:

* আবারও সক্রিয় মাস্ক সিন্ডিকেট, আতঙ্কে জনসাধারণ * উত্তরাখণ্ডে হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে ৭ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু * যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ট্রাম্পবিরোধী গণবিক্ষোভ * আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ড: অভিযুক্ত চারজন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির * ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠক ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া * ইরান-ইসরায়েল সংঘাত: উভয় পক্ষকে সংযমের আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের * পুলিশ নয়, ভারি মারণাস্ত্র থাকবে শুধু এপিবিএনের কাছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা * জনগণের মতামত উপেক্ষা করে বাজেট দিয়েছে সরকার: বিএনপি * ঈদযাত্রায় খানাখন্দ ও বৃষ্টির কিছুটা প্রভাব থাকলেও যাত্রা হবে স্বস্তিদায়ক: অতিরিক্ত আইজিপি দেলোয়ার * বাংলাদেশের জার্সিতে অভিষেক ফাহামিদুলের, একাদশে নেই শমিত সোম

বিডিআর হত্যাকাণ্ড: তদন্তে সহায়তা চেয়ে জাতীয় স্বাধীন কমিশনের গণবিজ্ঞপ্তি

repoter

প্রকাশিত: ০৬:৪৮:৫৫অপরাহ্ন , ১৮ এপ্রিল ২০২৫

আপডেট: ০৬:৪৮:৫৫অপরাহ্ন , ১৮ এপ্রিল ২০২৫

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: ছবি: সংগৃহীত

বিডিআর হত্যাকাণ্ডবিষয়ক জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশন একটি গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যাতে পিলখানায় ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি সংঘটিত বর্বরতম হত্যাযজ্ঞের প্রকৃত সত্য উদ্ঘাটনে সহায়ক তথ্য দিয়ে কমিশনকে সহায়তা করা হয়। এই লক্ষ্যে কমিশন নির্ভরযোগ্য তথ্য ও সাক্ষ্য আহ্বান করছে এবং বিভিন্ন মাধ্যমে তথ্য দেওয়ার সুযোগ রেখেছে।

কমিশনের ওয়েবসাইট www.bdr-commission.org-এর মাধ্যমে সরাসরি তথ্য জমা দেওয়া যাবে। একইসঙ্গে comission@bdr-commission.org ঠিকানায় ই-মেইল করেও তথ্য পাঠানো যাবে। এছাড়া সরাসরি কমিশনে হাজির হয়ে অথবা ডাকযোগ ও কুরিয়ারের মাধ্যমেও তথ্য পাঠানো যাবে। ঠিকানা: বাংলাদেশ রেফারেন্স ইনস্টিটিউট ফর কেমিক্যাল মেজারমেন্টস (বিআরআইসিএম), নতুন ভবন (৭ম তলা), ড. কুদরত-এ-খুদা সড়ক (সায়েন্স ল্যাবরেটরি রোড), ধানমন্ডি, ঢাকা-১২০৫। কমিশনের হটলাইন নম্বর ০১৭৬৯-৬০০২৮১, যেখানে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত যোগাযোগ করা যাবে।

কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে তথ্যদাতাদের পরিচয়ের গোপনীয়তা বজায় রাখা হবে। যে কেউ চাইলে নির্ধারিত ঠিকানায় কমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করে দেশের যেকোনো প্রান্ত বা বিদেশ থেকেও সাক্ষ্য প্রদান বা তথ্য পাঠাতে পারবেন।

ওয়েবসাইটে তথ্য জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে তথ্যদাতাকে প্রথমে তথ্যের ধরন বাছাই করতে হবে। বাছাইয়ের অপশনগুলোর মধ্যে রয়েছে—বেঁচে ফেরা শহীদ পরিবারের ব্যক্তিবর্গের বিবৃতি, অন্যান্য সাক্ষী বা গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের বিবৃতি, প্রিন্ট মিডিয়া (খবরের কাগজ), ইলেকট্রনিক মিডিয়া (ইমেজ, ভিডিও, অডিও, নিউজ পেপার), মোবাইল কল রেকর্ড, মোবাইল ম্যাসেজ, হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বার ইত্যাদি। এরপর নাম, ফোন নম্বর, ই-মেইল ঠিকানা এবং বাসার ঠিকানা সাবমিট করতে হবে।

গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি বিডিআর সদর দপ্তর, পিলখানায় সংঘটিত এই নজিরবিহীন হত্যাকাণ্ডের পেছনের দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র, প্রকৃত ঘটনা ও সংশ্লিষ্টদের সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করতে সরকার জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠন করেছে। এই কমিশন কমিশন অফ ইনকোয়ারি অ্যাক্ট ১৯৫৬-এর অধীনে গঠিত হয় ২০২৪ সালের ২৪ ডিসেম্বর একটি সরকারি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে। কমিশনের সভাপতি হিসেবে নিয়োগ পান মেজর জেনারেল (অব.) আ ল ম ফজলুর রহমান।

গণবিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, বিডিআর বিদ্রোহের নামে সংঘটিত পিলখানার হত্যাযজ্ঞে কারা ষড়যন্ত্রকারী, কারা ঘটনার সহযোগী, কে বা কারা আলামত ধ্বংসে যুক্ত ছিল কিংবা কারা ঘটনাটি সংঘটিত করেছিল এবং অপরাধ প্রতিরোধে কারা ব্যর্থ ছিল, তা নির্ধারণ করাই কমিশনের মূল লক্ষ্য। এজন্য কমিশন কোনো ধরনের চাপ বা প্রভাব ছাড়াই সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্যমতে, কিছু বিদেশি দূতাবাসের সঙ্গেও যোগাযোগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং সে বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় পিলখানা হত্যাকাণ্ড নিয়ে প্রচুর গুরুত্বপূর্ণ তথ্য রয়েছে, যা ইতোমধ্যেই পর্যালোচনা করেছে কমিশন।

এদিকে, তদন্ত প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে কমিশন একাধিক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে ১৫ জন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সাক্ষ্য নেওয়ার প্রয়োজনীয়তার কথা জানিয়েছে। এ তালিকায় রয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার তৎকালীন নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, ঢাকা দক্ষিণ সিটির সাবেক মেয়র ফজলে নূর তাপস, গোপালগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, ঢাকা-১৩ আসনের সাবেক এমপি জাহাঙ্গীর কবির নানক, জামালপুর-৩ আসনের সাবেক এমপি মির্জা আজম, ঢাকা-৮ আসনের সাবেক এমপি আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, ৪৪ রাইফেল ব্যাটালিয়নের তৎকালীন অধিনায়ক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মুহাম্মদ শামসুল আলম, ডিজিএফআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মোল্লা ফজলে আকবর, সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) মঈন ইউ আহমেদ, সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদ, র‌্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ড. হাসান মাহমুদ খন্দকার, সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা আবদুল কাহহার আকন্দ, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক নূর মোহাম্মদ এবং পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মনিরুল ইসলাম।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এই ১৫ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ তদন্তের জন্য অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। ফলে তাদেরকে ফোন, ই-মেইল বা চিঠির মাধ্যমে সাত দিনের মধ্যে সময়সূচি জানিয়ে কমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করার অনুরোধ জানানো হয়েছিল, যদিও ওই সময়সীমা ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে।

কমিশন বলছে, প্রায় ১৬ বছর আগে সংঘটিত পিলখানা হত্যাকাণ্ডের তথ্য উদ্ঘাটন জটিল হলেও তারা অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে কাজ করে যাচ্ছে যাতে করে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করে সত্য প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়।

এই জাতীয় তদন্ত কমিশনের কার্যক্রম দেশব্যাপী একটি গুরুত্বপূর্ণ নজির সৃষ্টি করবে বলে আশা প্রকাশ করা হচ্ছে, কারণ এটি ভবিষ্যতের জন্য ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ও ঐতিহাসিক ঘটনার নির্ভরযোগ্য রেকর্ড গঠনে ভূমিকা রাখবে।

repoter