ঢাকা,  শুক্রবার
১৯ ডিসেম্বর ২০২৫ , ০৩:৩৯ মিনিট

Donik Barta

শিরোনাম:

* জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধ: ওবায়দুল কাদেরসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল * গুলিবিদ্ধ শরিফ ওসমান হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, দেশে–বিদেশে উদ্বেগ * ঢাকা–দিল্লি সম্পর্কে নতুন করে উত্তেজনা, আজ চালু থাকছে ভারতীয় ভিসা কেন্দ্র * ৬৬ হাজার কোটি টাকার সম্পদ জব্দ, বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারে গতি আনছে সরকার * যুক্তরাষ্ট্রের ‘সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধ’ ফিরিয়ে আনছেন ট্রাম্প, সমালোচনার কেন্দ্রে ভেনেজুয়েলা অভিযান * পাবনার বেড়ায় স্পিডবোটে এসে বাজারে ডাকাতি, ব্যবসায়ীরা আতঙ্কিত * যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভেনেজুয়েলা অভিযান: মাদুরো সরকারের ওপর চাপ বাড়ছে * ট্রাম্পের ২৮ দফা শান্তি পরিকল্পনা: ইউক্রেন–রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধে নতুন জটিলতা * গুম ও মানবতাবিরোধী অভিযোগে ১৩ সেনা কর্মকর্তা ট্রাইব্যুনালে * বিএনপির ৪০টির বেশি আসনে মনোনয়নসংক্রান্ত অসন্তোষ, কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ব্যস্ত সমাধান খুঁজতে

বিডিআর হত্যাকাণ্ড নিয়ে ফের মুখ খুললেন জেনারেল মঈন ইউ আহমেদ

repoter

প্রকাশিত: ০৯:৩৪:০২অপরাহ্ন , ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪

আপডেট: ০৯:৩৪:০২অপরাহ্ন , ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: ছবি: সংগৃহীত

২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সংঘটিত পিলখানার বিডিআর হত্যাকাণ্ডে নিহত হন ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তা, তাদের পরিবার সদস্য এবং বিডিআরের আরও কয়েকজন সদস্যসহ মোট ৭৪ জন। এই বর্বর হত্যাযজ্ঞের প্রকৃত তথ্য এখনও অজানা। সাম্প্রতিক সময়ে অন্তর্বর্তী সরকার হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের ষড়যন্ত্র উন্মোচনে একটি বিশেষ তদন্ত কমিশন গঠন করেছে।

সেই সময়ের সেনাপ্রধান অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল মঈন ইউ আহমেদ এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, এই তদন্তের মাধ্যমে জাতি প্রকৃত সত্য জানতে পারবে। ফ্লোরিডা থেকে গণমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, এই হত্যাকাণ্ডের উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে ধ্বংস করা।

হত্যাযজ্ঞের স্মৃতিচারণা ও তদন্তের প্রয়োজনীয়তা

জেনারেল মঈন তার স্মৃতিচারণমূলক বক্তব্যে উল্লেখ করেন, বিদ্রোহের দিন সকাল ৯টা ৪৭ মিনিটে বিডিআরের তৎকালীন মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ হয়। তিনি বিদ্রোহের সূচনা সম্পর্কে জানান। পিলখানার দরবার হলে সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু হলে তিনি শান্তি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেন, তবে বিদ্রোহীদের পরিকল্পিত আক্রমণের শিকার হন।

মঈন আরও বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সেনাবাহিনীর ৪৬ ইনডিপেনডেন্ট ব্রিগেডকে প্রস্তুত করা হয়। ব্রিগেডটি এক ঘণ্টার মধ্যে পিলখানায় পৌঁছায়। তবে তার আগেই বিদ্রোহীরা অনেক সেনা কর্মকর্তাকে হত্যা করে।

তদন্ত কমিশনের প্রধান এ এল এম ফজলুর রহমান বলেছেন, এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র থাকলে তা জাতির সামনে উপস্থাপন করা হবে।

প্রথমদিনের ভয়াবহতা ও ব্যর্থতা

জেনারেল মঈন বলেন, বিদ্রোহ শুরু হওয়ার পর র‌্যাব সদস্যরা আগে পিলখানায় পৌঁছালেও তাদের কোনো কার্যকর ভূমিকা নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি। সেনাবাহিনীকে পিলখানার বাইরে অবস্থান করতে বলা হয়। এর ফলে বিদ্রোহীরা নির্বিঘ্নে তাদের বর্বর কাজ চালিয়ে যায়।

২৫ ফেব্রুয়ারির দুপুরে শেখ হাসিনা বিদ্রোহীদের সঙ্গে আলোচনার জন্য তাদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেসময় বিদ্রোহীরা সাধারণ ক্ষমার শর্তে অস্ত্র সমর্পণের প্রস্তাব দেয়। তবে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এই শর্ত প্রত্যাখ্যান করা হয়।

দ্বিতীয় দিনের সংকট ও আত্মসমর্পণ

২৬ ফেব্রুয়ারি বিদ্রোহীরা পুনরায় গুলি শুরু করলে সেনাবাহিনী ট্যাংক মোতায়েনের প্রস্তুতি নেয়। ট্যাংকের উপস্থিতির কথা শুনে বিদ্রোহীরা আত্মসমর্পণের সিদ্ধান্ত নেয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়ে তাদের আত্মসমর্পণের সময়সীমা বেঁধে দেন। রাতে বিদ্রোহীরা সাদা পতাকা তুলে আত্মসমর্পণ করে।

ভবিষ্যৎ উদ্যোগ ও প্রত্যাশা

জেনারেল মঈন এই হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে থাকা দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র উন্মোচনে সরকারকে সুষ্ঠু তদন্তের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ সত্য উদ্ঘাটনের মাধ্যমে সেনাবাহিনীর সুনাম পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করা সম্ভব।

মঈনের বই ও বক্তব্য

পিলখানার হত্যাযজ্ঞ নিয়ে লিখিত তার বই শিগগিরই প্রকাশিত হবে বলে জানিয়েছেন জেনারেল মঈন। তিনি উল্লেখ করেন, এই বইয়ে হত্যাকাণ্ডের পেছনের অনেক অজানা তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

বিডিআর হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত সত্য উদ্ঘাটনের মাধ্যমে জাতি জানতে পারবে কারা এই ষড়যন্ত্রে জড়িত ছিল এবং কেন সেনাবাহিনীকে ধ্বংসের লক্ষ্য নিয়ে এই নৃশংসতা চালানো হয়েছিল।

repoter