
ছবি: ছবি: সংগৃহীত
ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারত সবসময় সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চায়। শনিবার (৮ মার্চ) ইন্দো-এশীয় নিউজ সার্ভিস (আইএএনএস)-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা জানান। তিনি বলেন, প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে শক্তিশালী ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখা ভারতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়।
রাজনাথ সিং বলেন, ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ী বলতেন, আমরা বন্ধুদের পরিবর্তন করতে পারি, কিন্তু প্রতিবেশীদের পরিবর্তন করতে পারি না। তাই বাংলাদেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা আমাদের জন্য অপরিহার্য। তিনি আরও উল্লেখ করেন, ভারত বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং একটি স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশকে সমর্থন করে।
এর আগে শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেছিলেন, ভারত বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে সব সমস্যার সমাধান চায়। তিনি বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, যারা গুরুতর অপরাধের দায়ে দণ্ডিত ছিল, তাদের মুক্তি পরিস্থিতিকে আরও জটিল করেছে।
সংখ্যালঘু বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সহিংসতা প্রসঙ্গে জয়সওয়াল বলেন, ভারত আশা করে যে বাংলাদেশ সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে হত্যা, অগ্নিসংযোগ ও সহিংসতার সঙ্গে জড়িতদের তদন্ত করে বিচারের আওতায় আনবে। তিনি বলেন, ভারত বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা ও শান্তি চায় এবং এ লক্ষ্যে সব ধরনের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।
এদিকে, বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ নদী কমিশনের কর্মকর্তারা গঙ্গা নদীর পানিবণ্টন চুক্তি নিয়ে আলোচনা করতে কলকাতায় ৮৬তম বৈঠকে মিলিত হয়েছেন। গত ৩০ বছর ধরে গঙ্গার পানিবণ্টন নিয়ে সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। আগামী বছর এ চুক্তি নবায়নের কথা রয়েছে। জয়সওয়াল বলেন, দুই দেশের প্রতিনিধি দল গঙ্গার পানিবণ্টন চুক্তি, পানিপ্রবাহ পরিমাপ এবং অন্যান্য প্রযুক্তিগত বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন।
এর আগে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছিলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক কেমন হবে, তা নির্ধারণের দায়িত্ব বাংলাদেশের। এর জবাবে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, বাংলাদেশ অবশ্যই ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের ধরন নির্ধারণ করবে। তবে একইভাবে ভারতকেও সিদ্ধান্ত নিতে হবে তারা বাংলাদেশের সঙ্গে কেমন সম্পর্ক চায়। তিনি বলেন, এটি দুই দেশের পারস্পরিক বিষয় এবং এ বিষয়ে আলোচনা করায় কোনো দোষ নেই।
ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্কের এই আলোচনা দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান ঐতিহাসিক ও কৌশলগত সম্পর্কের গুরুত্বকে আরও তুলে ধরে। উভয় দেশই প্রতিবেশী হিসেবে একে অপরের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ ও সুসম্পর্ক বজায় রাখার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে
repoter