ছবি: ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র এবং চট্টগ্রামের পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর গ্রেপ্তারকে কেন্দ্র করে ভারতীয় রাজনীতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি নেতা ও বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী তার মুক্তির দাবিতে সীমান্ত অবরোধ ও বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভের হুমকি দিয়েছেন।
চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তার ও পটভূমি
গত সোমবার (২৫ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে রাজধানীর বিমানবন্দর এলাকা থেকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে হেফাজতে নেয়। পরে তাকে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
উল্লেখ্য, গত ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রামে বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের একটি সমাবেশে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগ ওঠে। এই ঘটনায় ৩০ অক্টোবর রাষ্ট্রদ্রোহ আইনে মামলা করেন ফিরোজ খান নামে একজন। মামলায় চিন্ময় দাসসহ ১৯ জনকে অভিযুক্ত করা হয়। এর আগেই এ মামলায় রাজেশ চৌধুরী ও হৃদয় দাস নামে দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
সম্প্রতি চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ইসকন) বাংলাদেশ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তবে তিনি এখনো বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ ও সম্মিলিত সংখ্যালঘু জোটের মুখপাত্র হিসেবে কাজ করছেন।
বিজেপির প্রতিবাদ ও হুঁশিয়ারি
চিন্ময়ের গ্রেপ্তার নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। সোমবার রাতে তিনি অভিযোগ করেন, “বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার হিন্দুদের ওপর অত্যাচার চালাচ্ছে। হিন্দুদের অস্তিত্ব রক্ষার নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভুকে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।”
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “সোমবার রাতের মধ্যে চিন্ময় প্রভুকে মুক্তি না দিলে সনাতনীরা বাংলাদেশ সীমান্ত অবরোধ করবে। পশ্চিমবঙ্গ থেকে বাংলাদেশে কোনো পরিষেবা প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। পাশাপাশি কলকাতায় বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনারের অফিস ঘেরাও করা হবে।”
‘হিন্দু নির্যাতনের’ অভিযোগে উত্তেজনা
শুভেন্দু অধিকারী আরও বলেন, “বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর যে দমন-পীড়ন চলছে, তা আমরা মেনে নিতে পারি না। এটি ভারতের সনাতনীদের ব্যথিত করেছে। এই ঘটনার বিরুদ্ধে সনাতনী সমাজ সোচ্চার হবে।”
জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রভাব
বাংলাদেশে সংখ্যালঘু অধিকার নিয়ে এমন রাজনৈতিক উত্তেজনা এর আগে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে বেশ কিছুবার চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে। সীমান্ত অবরোধের মতো হুঁশিয়ারি দেওয়া আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও কূটনৈতিক সম্পর্কেও প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের মুক্তি এবং এই ইস্যুতে দুই দেশের মধ্যে কীভাবে সমাধান বের হয়, তা এখন সময়ের অপেক্ষা।
repoter