
ছবি: লোকসভায় বক্তব্য দিচ্ছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) লোকসভায় বক্তব্য দিতে গিয়ে বলেন, "বাংলাদেশ তার নিজস্ব স্বার্থেই সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করবে।" লোকসভায় প্রশ্নোত্তর পর্বে কংগ্রেস সংসদ সদস্য মণীশ তিওয়ারির এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতার ঘটনাগুলোর বিষয়ে ভারতের উদ্বেগের কথা উল্লেখ করে জয়শঙ্কর বলেন, "এই ইস্যুটি ভারতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সাম্প্রতিক কূটনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমে বিষয়টি বাংলাদেশ সরকারের কাছে তুলে ধরা হয়েছে। বিশেষ করে ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের ঢাকা সফরেও এটি আলোচিত হয়েছে।"
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, "বাংলাদেশ আমাদের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। তবে, বিশেষত সংখ্যালঘুদের প্রতি আচরণ নিয়ে যে উদ্বেগ রয়েছে, তা অব্যাহত রয়েছে।" তিনি বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রকল্পে ভারতের সহযোগিতার কথা উল্লেখ করে বলেন, "এই অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে আমরা আশাবাদী যে বাংলাদেশ তার দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করবে।"
জয়শঙ্কর এ সময় ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক ও সহযোগিতার প্রসঙ্গও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, "ভারতের বেশিরভাগ প্রতিবেশীর সঙ্গে উন্নয়ন প্রকল্পে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদারিত্ব রয়েছে। পাকিস্তান ও চীন ছাড়া বাকি প্রায় সব প্রতিবেশী দেশের সঙ্গেই এই সহযোগিতা অব্যাহত রয়েছে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও আমাদের ভূমিকা একই রকম গুরুত্বপূর্ণ।"
তিনি আরও বলেন, "আমাদের পারস্পরিক সম্পর্কের ভিত্তি মজবুত করতে এবং এই অঞ্চলের উন্নয়নকে টেকসই করতে দুই দেশের মধ্যকার সহযোগিতা বৃদ্ধি জরুরি। বাংলাদেশে নতুন সরকারের অধীনে এই সহযোগিতা আরও দৃঢ় হবে বলে আমাদের বিশ্বাস।"
জয়শঙ্কর তাঁর বক্তব্যে উল্লেখ করেন, "আমাদের প্রত্যাশা, বাংলাদেশ তার নিজস্ব স্বার্থের কথা বিবেচনা করেই সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। এটি শুধু মানবিক কারণেই নয়, বরং দেশটির অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ।"
ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে তিনি বলেন, "দুই দেশের মধ্যে বহু উন্নয়নমূলক প্রকল্প চলছে। এই প্রকল্পগুলো কেবল অর্থনৈতিক উন্নয়নই নয়, বরং সামাজিক স্থিতিশীলতা ও শান্তি নিশ্চিত করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে।"
জয়শঙ্করের বক্তব্যে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সুরক্ষা নিয়ে যে ধারাবাহিক উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে, তা আবারও স্পষ্ট হয়। তিনি বলেন, "দুই দেশের সহযোগিতা ও অংশীদারিত্ব আরও জোরদার করতে আমাদের কূটনৈতিক উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে।"
শেষাংশ:
এস জয়শঙ্করের বক্তব্যে স্পষ্ট, ভারত বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা নিয়ে উদ্বিগ্ন হলেও দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা ও উন্নয়নমূলক সম্পর্ক জোরদারের ব্যাপারে আশাবাদী। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, নতুন সরকারের অধীনে বাংলাদেশ নিজ স্বার্থে সংখ্যালঘু সুরক্ষা নিশ্চিত করে দুই দেশের মধ্যে আরও স্থিতিশীল সম্পর্ক গড়ে তুলবে।
repoter