ঢাকা,  বৃহস্পতিবার
৩ এপ্রিল ২০২৫ , ০৩:৩৫ মিনিট

Donik Barta

শিরোনাম:

* চাঁদপুরের ৪০টি গ্রামে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদ রবিবার * প্রতিযোগী না হয়ে প্রতিপক্ষ হলে ক্ষতিই নিজেদের: পঞ্চগড়ে সারজিস আলম * জুলাই বিপ্লবের শহীদ পরিবারদের পাশে নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক * ভূমিকম্প বিধ্বস্ত মিয়ানমারে যাচ্ছে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর উদ্ধারকারী দল * শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেছে, সৌদিতে রবিবার ঈদ উদযাপিত হবে * “বাংলাদেশ কোরআনের উর্বর ভূমি” — পিএইচপি কোরআনের আলো প্রতিযোগিতায় ধর্ম উপদেষ্টার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা * চা শ্রমিকদের পাশে সিলেটের ডিসি — দুর্দশায় ত্রাণ নিয়ে হাজির প্রশাসন * সাত বছর পর পরিবারের সান্নিধ্যে ঈদ উদযাপন করছেন খালেদা জিয়া * মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডে ভয়াবহ ভূমিকম্পে শতাধিক মৃত্যুর আশঙ্কা * আগামীকাল রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর ২ ঘণ্টার লেনদেন

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে লক্ষ্যমাত্রা: ৪-৫ শতাংশে নামানো হবে

repoter

প্রকাশিত: ০৮:৩১:৫৯অপরাহ্ন , ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪

আপডেট: ০৮:৩১:৫৯অপরাহ্ন , ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪

ফাইল ছবি

ছবি: ফাইল ছবি

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, দেশের মূল্যস্ফীতি কমিয়ে ৪-৫ শতাংশের মধ্যে আনতে হবে, এবং এজন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। বুধবার (৪ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম) অডিটরিয়ামে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এই বক্তব্য দেন। "টিপিং পয়েন্টস অব রিফর্ম এজেন্ডা ফর দ্য টার্ন অ্যারাউন্ড অব দ্য ব্যাংকিং সেক্টর অব বাংলাদেশ" শীর্ষক আলোচনা সভাটি বিআইবিএমের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়।

মূল্যস্ফীতি কমাতে সরকারের প্রচেষ্টা

গভর্নর মনসুর আরও জানান, সরকারের লক্ষ্য হল ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশে নামিয়ে আনা এবং পরবর্তী অর্থবছরের মাঝামাঝি সময়ে তা ৫ শতাংশে নামানো। তিনি বলেন, "আমাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে মূল্যস্ফীতি ৪-৫ শতাংশের মধ্যে নামিয়ে আনা। আমরা আশা করি, এই লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হবে।"

গভর্নর আরও জানান, বাংলাদেশের বর্তমান বাজার পরিস্থিতি এবং মূল্যস্ফীতির উচ্চতা মূলত বন্যার কারণে উদ্ভূত খাদ্যদ্রব্যের সংকট এবং সবজির দাম বাড়ানোর ফলস্বরূপ। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, বন্যার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে খাদ্যদ্রব্যের দাম কমে আসবে এবং এর ফলে মূল্যস্ফীতির হারও কমবে।

অর্থনীতির দীর্ঘমেয়াদী সংকট এবং ব্যাংকিং খাতের চ্যালেঞ্জ

গভর্নর আহসান এইচ মনসুর দেশের অর্থনীতির দীর্ঘমেয়াদী চ্যালেঞ্জের বিষয়ে কথা বলেন। তিনি উল্লেখ করেন, গত ১০-১২ বছর ধরে অর্থনৈতিক খাতগুলো অনেকটা পিছিয়ে রয়েছে। ব্যাংকিং, স্টক মার্কেট, ইন্স্যুরেন্স এবং বন্ড মার্কেট—এই চারটি খাতই বাংলাদেশে শক্তিশালী হয়নি। বিশেষ করে বন্ড মার্কেট এখনো গড়ে ওঠেনি এবং ইন্স্যুরেন্স ও স্টক মার্কেটের অবস্থাও উদ্বেগজনক।

তিনি বলেন, "ফলে একমাত্র ব্যাংকিং খাতকেই দেশের অর্থনীতির জন্য বড় দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। যদি আমরা অর্থনীতির দীর্ঘমেয়াদী উৎস তৈরি না করতে পারি, তাহলে ব্যাংকিং খাতের ওপর নির্ভরশীলতা বাড়বে।"

রিজার্ভ সংকট এবং টাকা পাচারের সমস্যা

গভর্নর আরো বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বর্তমানে টাকা সংকট রয়েছে। দেশটির রিজার্ভের পরিমাণ একসময় ৪৮ বিলিয়ন ডলার ছিল, যা এখন কমে ২৪ বিলিয়ন ডলারে এসে দাঁড়িয়েছে। তিনি বলেন, "অর্থাৎ, বাকি টাকাগুলো বাইরে চলে গেছে। যদি আমরা আমানত বাড়াতে না পারি, তাহলে টাকা বাইরে চলে যাবে এবং আমাদের ব্যাংকিং খাতের প্রবৃদ্ধি হবে না।"

এছাড়া, তিনি এই পরিস্থিতি পরিবর্তন করতে টাকা পাচার বন্ধ করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। গভর্নর দাবি করেন, দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি এবং ব্যাংকিং খাতের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে হলে বিদেশে অর্থ পাচারের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।

ব্যাংকিং খাতের ভবিষ্যৎ এবং প্রবৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ

গভর্নর আরও উল্লেখ করেন, ব্যাংকিং খাতের জন্য আগামীদিনগুলোতে একটি সুদৃঢ় এবং দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণের প্রয়োজন রয়েছে। তিনি বলেন, "বিস্তারিত পরিকল্পনা এবং কার্যকর পদক্ষেপের মাধ্যমে ব্যাংকিং খাতের শক্তিশালী উন্নতি সম্ভব।"

এছাড়া, আলোচনায় বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতের সংকট মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ এবং ব্যাংকিং খাতের সংস্কারের বিভিন্ন দিক নিয়েও আলোচনা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. হাবিবুর রহমান এবং নূরুন নাহার সভায় অংশগ্রহণ করেন এবং বিভিন্ন দিক নিয়ে তাদের অভিমত তুলে ধরেন।

এই আলোচনা সভায় অর্থনীতি ও ব্যাংকিং খাতের ভবিষ্যৎ নিয়ে গভর্নর আহসান মনসুরের বক্তৃতা দেশবাসী ও অর্থনৈতিক বিশ্লেষকদের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

repoter