
ছবি: ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে শুরু হয়েছে ‘বাংলাদেশ বিনিয়োগ সম্মেলন ২০২৫’। এই চারদিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলনের তৃতীয় দিনে বিশেষ অতিথি হিসেবে অংশ নিয়েছেন নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বুধবার ড. ইউনূস সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে ‘বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট ২০২৫’-এর আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন। একই মঞ্চ থেকে তিনি মার্কিন ধনকুবের ইলন মাক্সের স্পেস এক্সের সহযোগী প্রতিষ্ঠান স্টারলিংকের পরীক্ষামূলক ইন্টারনেট সেবার কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। মহাকাশভিত্তিক এই সেবার মাধ্যমে বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক মানের উন্নত ইন্টারনেট সংযোগের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে বলে ধারণা করছেন প্রযুক্তি বিশ্লেষকরা।
সম্মেলনের এক অধিবেশনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ড. ইউনূস বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য সরকারের নেওয়া বিভিন্ন নীতি ও উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন। তিনি বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান, ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং তরুণ জনশক্তির ওপর গুরুত্ব দিয়ে বলেন, এই দেশ এখন বৈশ্বিক শিল্প ও প্রযুক্তি বিনিয়োগের একটি সম্ভাবনাময় গন্তব্য। তিনি অংশগ্রহণকারী বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান এবং সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীদের সকল ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
সম্মেলনের প্রথম দুই দিনেই চীন, কোরিয়া, সুইজারল্যান্ড এবং যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি, জ্বালানি, অবকাঠামো এবং উৎপাদন খাতে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। পাশাপাশি কয়েকটি আন্তর্জাতিক ব্যাংকও বাংলাদেশের অর্থনীতিতে সহায়তা হিসেবে ঋণ প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
সরকার ইতোমধ্যে বিদেশি বিনিয়োগে গতি আনার লক্ষ্যে প্রশাসনিক প্রক্রিয়াগুলো সহজ করার পাশাপাশি জ্বালানি খাতে কাঠামোগত সংস্কার আনার ঘোষণা দিয়েছে। সম্মেলনের তৃতীয় দিনে ড. ইউনূস তার বক্তব্যে বাংলাদেশে উৎপাদন কারখানা স্থানান্তরের যৌক্তিক দিকগুলো তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বৈশ্বিক বাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে উৎপাদন ব্যয় হ্রাস করতে হবে, আর বাংলাদেশ সে দিক থেকে একটি যথার্থ বিকল্প হতে পারে।
এই সম্মেলনের মাধ্যমে দেশ-বিদেশের বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন এবং নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ভাগ করে নেওয়ার এক গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ তৈরি হয়েছে বলে মন্তব্য করেন আয়োজকরা। সম্মেলনের শেষ দিনে আরও কয়েকটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হওয়ার কথা রয়েছে, যা আগামী দিনে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
repoter