
ছবি: ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ফ্ল্যাগস্ট্যান্ড নির্মিত হচ্ছে পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্টে। এই ফ্ল্যাগস্ট্যান্ডে প্রতিদিন উড়বে বাংলাদেশের লাল-সবুজের জাতীয় পতাকা। শনিবার দুপুরে এই ফ্ল্যাগস্ট্যান্ড নির্মাণ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন, একটি গেট নির্মাণ এবং সৌন্দর্যবর্ধনের কাজের উদ্বোধন করেন পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক সাবেত আলী।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলার বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও ধর্মীয় সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দ এবং স্থানীয় জনসাধারণ। উপস্থিত ছিলেন জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির ইকবাল হোসাইন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সহসভাপতি ক্বারী মো. আব্দুল্লাহ, তেতুঁলিয়া উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব রেজাউল করিম শাহীনসহ আরও অনেকে।
জেলা প্রশাসনের সূত্রে জানা গেছে, বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্টের বিপরীতে ভারতের প্রান্তে দীর্ঘদিন ধরে একটি প্রায় ১০০ ফুট উচ্চতার ফ্ল্যাগস্ট্যান্ডে ভারতীয় জাতীয় পতাকা ওড়ানো হয়ে আসছে। কিন্তু বাংলাদেশের প্রান্তে এতদিন কোনও বৃহৎ আকারের ফ্ল্যাগস্ট্যান্ড বা স্থায়ীভাবে পতাকা উত্তোলনের ব্যবস্থা ছিল না। এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয়দের মধ্যে একটি প্রবল প্রত্যাশা ও দাবির সৃষ্টি হয়। তারা চাইছিলেন, সীমান্তে এমন একটি ফ্ল্যাগস্ট্যান্ড স্থাপন করা হোক যা উচ্চতায় ভারতের চেয়েও বড় হবে এবং যা প্রতীকীভাবে বাংলাদেশের গৌরব ও মর্যাদা প্রকাশ করবে।
জেলা প্রশাসক সাবেত আলী উদ্বোধনী বক্তব্যে বলেন, বাংলাবান্ধা সীমান্তে দাঁড়িয়ে আমরা ২৪ ঘণ্টা ভারতের পতাকা উড়তে দেখি। পঞ্চগড়ের মানুষের দীর্ঘদিনের একটি দাবি ছিল যে, বাংলাদেশের প্রান্তেও এমন একটি ফ্ল্যাগস্ট্যান্ড হোক যা ভারতের তুলনায় আরও উঁচু হবে। আজ সেই দাবির প্রতিফলন ঘটছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে পঞ্চগড়বাসীর একটি স্বপ্ন পূরণ হবে এবং এটি হবে জাতীয় গর্বের এক অনন্য নিদর্শন।
তিনি আরও বলেন, এই ফ্ল্যাগস্ট্যান্ড শুধু একটি কাঠামো নয়, এটি বাংলাদেশের মর্যাদা, অহংকার এবং সীমান্তের প্রান্তিক জনগণের চেতনার প্রতীক হয়ে উঠবে। এটি সীমান্ত পর্যটনকেও উজ্জীবিত করবে এবং বাংলাবান্ধাকে পর্যটন মানচিত্রে আরও গুরুত্বপূর্ণ করে তুলবে। এর সঙ্গে নির্মিতব্য গেট ও সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ এলাকাটিকে দৃষ্টিনন্দন ও আকর্ষণীয় করে তুলবে।
অনুষ্ঠানে স্থানীয় জনগণও এই উদ্যোগের জন্য প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তারা জানান, দীর্ঘদিন ধরে তারা এধরনের একটি ফ্ল্যাগস্ট্যান্ডের দাবি করে আসছিলেন, যা অবশেষে বাস্তবায়নের পথে এগোচ্ছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে সীমান্ত এলাকার মর্যাদা যেমন বাড়বে, তেমনি জাতীয় পতাকার মর্যাদাও আরও উজ্জ্বল হবে।
উল্লেখ্য, বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সীমান্তবন্দর এবং এটি ভারতের শিলিগুড়ি করিডোরের সংযোগস্থল। এখানে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ মানুষ ও পণ্য চলাচল করে। নতুন এই ফ্ল্যাগস্ট্যান্ড সীমান্তের সুরক্ষা, সম্মান এবং পরিচিতিকে আন্তর্জাতিক পর্যায়েও তুলে ধরবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
এই প্রকল্পের মাধ্যমে পঞ্চগড়ের ইতিহাসে নতুন একটি অধ্যায় সূচিত হতে যাচ্ছে, যেখানে জাতীয় পতাকা শুধু এক টুকরো কাপড় নয়, বরং একটি জাতির আত্মমর্যাদা, সংগ্রাম ও স্বাধীনতার প্রতীক হিসেবে উড্ডীন থাকবে বাংলাবান্ধার আকাশে।
repoter