
ছবি: ছবি: সংগৃহীত
বাংলা একাডেমি পুরস্কারের ঘোষিত নামের তালিকা স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। শনিবার (২৫ জানুয়ারি) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টের মাধ্যমে তিনি এই সিদ্ধান্তের কথা জানান।
পোস্টে তিনি লেখেন, বাংলা একাডেমি পুরস্কারের ঘোষিত নামের তালিকা আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, বিদ্যমান নীতিমালা পুনর্বিবেচনা করা হবে, কারণ এই ধরনের নীতিমালা উদ্ভট এবং গোষ্ঠীভিত্তিক পুরস্কারের সুযোগ তৈরি করে।
ফারুকী বলেন, “আমাদের প্রথম কাজ হবে এই অদ্ভুত নীতিমালাগুলো দ্রুত রিভিউ করা। একই সঙ্গে বাংলা একাডেমির পরিচালনা প্রক্রিয়া এবং কার্যক্রমের জন্য একটি সুষ্ঠু ও আধুনিক নীতিমালা তৈরি করাও প্রয়োজন।” তিনি আরও যোগ করেন, “বাংলা একাডেমির কার্যক্রমের ক্ষেত্রে মৌলিক পরিবর্তন আনার উদ্যোগ নেওয়া হবে। দেশের অন্যান্য খাতের উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে বাংলা একাডেমিতেও সংস্কার আনা অত্যন্ত জরুরি।”
উল্লেখ্য, বাংলা একাডেমি পুরস্কার দেশের সাহিত্য, সংস্কৃতি ও গবেষণা ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখা ব্যক্তিদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের জন্য দেওয়া হয়ে থাকে। তবে, পুরস্কার প্রদানের ক্ষেত্রে একাধিকবার নীতিমালার কার্যকারিতা নিয়ে সমালোচনা উঠে এসেছে। মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর সাম্প্রতিক বক্তব্যে সেই সমালোচনার প্রতিধ্বনি শোনা যায়।
তাঁর মতে, বাংলা একাডেমিকে একটি সঠিক কাঠামো ও আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিচালিত করতে হবে। সংস্কৃতি ও ভাষার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা এই প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমের ওপর নজরদারি এবং নীতিমালার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা হবে।
বাংলা একাডেমির পুরস্কার বিতরণ প্রক্রিয়ায় বিদ্যমান দুর্বলতা ও বিতর্কগুলো চিহ্নিত করে তা দূর করার উদ্যোগ নেওয়া হবে বলেও ফারুকী তাঁর পোস্টে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “আমরা শুধু পুরস্কার বিতরণ নিয়ে নয়, পুরো প্রতিষ্ঠানটির কর্মকাণ্ড পুনর্গঠনের পরিকল্পনা করছি। সবার জন্য এটি একটি স্বচ্ছ, গ্রহণযোগ্য এবং প্রভাবশালী মঞ্চ হিসেবে গড়ে তোলা হবে।”
এই ঘোষণা অনেক সাহিত্যপ্রেমী ও সংশ্লিষ্ট মহলের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে। কেউ কেউ এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন, আবার কেউ এটিকে আরও একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়ার সূচনা হিসেবে দেখছেন।
অন্যদিকে, বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্ত নিয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করেনি। তবে এই উদ্যোগের ফলে পুরস্কার নীতিমালার আধুনিকায়ন এবং এর কার্যকারিতা নিয়ে নতুন আলোচনার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সংস্কৃতি উপদেষ্টার এই সিদ্ধান্তে বাংলা একাডেমির উন্নয়নে একটি নতুন অধ্যায় শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
repoter