
ছবি: ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম মন্তব্য করেছেন, বাংলাদেশ ক্রিকেটের জনপ্রিয় আইকন সাকিব আল হাসানের মতো একজন তারকার জন্য আওয়ামী লীগের মতো একটি দলে যোগদান করা ঠিক হয়নি। শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) দুপুরে মাগুরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
শফিকুল আলম বলেন, “সাকিব আল হাসান দেশের একজন সেরা ক্রীড়াবিদ, যাকে দেশের জনগণ ভালোবাসে ও শ্রদ্ধা করে। কিন্তু তিনি এমন একটি রাজনৈতিক দলে যোগ দিয়েছেন, যাদের বিরুদ্ধে গুম, খুন এবং স্বৈরাচারী আচরণের অভিযোগ রয়েছে। সভ্য কোনো দেশে এমন দৃষ্টান্ত কল্পনাও করা যায় না। ২০১২ সালে বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলী গুম হয়েছেন। এরপরও এমন অসংখ্য গুম ও নিখোঁজের ঘটনার পর সাকিবের এই দলে যোগদান সাধারণ মানুষের জন্য বিস্ময়কর ও বেদনার।”
তিনি আওয়ামী লীগকে একটি ‘নিকৃষ্ট রাজনৈতিক সংগঠন’ বলে আখ্যা দেন এবং বলেন, “এই দলের বহু নেতার বিরুদ্ধে খুন, নিপীড়ন, দমন-পীড়নের অভিযোগ রয়েছে। তাদের শাসনামলে দেশের বহু যুবক-যুবতী নিখোঁজ বা নিহত হয়েছেন, যার সংখ্যা কয়েক হাজার হতে পারে। এ ধরনের দলে যোগদান কোনো সচেতন নাগরিকের পক্ষেও সমর্থনযোগ্য নয়।”
রাজনৈতিক অংশগ্রহণ নিয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, “রাজনীতি করা প্রতিটি নাগরিকের অধিকার। কেউ চাইলে যেকোনো রাজনৈতিক আদর্শে বিশ্বাস রাখতে পারেন, সেটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। কিন্তু প্রশ্ন হলো, আপনি কোন আদর্শে বিশ্বাস করছেন, কার সঙ্গে আপনি নিজেকে যুক্ত করছেন। আপনি কি জেনে-বুঝে এমন কোনো সংগঠনের সঙ্গে নিজেকে সম্পৃক্ত করছেন, যাদের বিরুদ্ধে সহিংসতা ও জঙ্গিবাদের অভিযোগ রয়েছে?”
সাকিব আল হাসান সম্প্রতি একটি রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্ত হয়েছেন বলে জানা যায়, যা রাজনৈতিক অঙ্গনে এবং সাধারণ জনগণের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।
এর আগে, মাগুরা মেডিকেল কলেজ পরিদর্শনের সময় প্রেস সচিব কলেজের অধ্যক্ষ, শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এ সময় তিনি মাগুরা মেডিকেল কলেজের সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে অবগত আছেন বলে জানান এবং প্রতিষ্ঠানটি ভালোভাবে পরিচালিত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, “এখানে এসে যেটা দেখলাম, তাতে মনে হচ্ছে যে মাগুরা মেডিকেল কলেজ ভালোভাবে চলছে। এখানকার শিক্ষার্থীরা আগ্রহী এবং প্রশাসনও সচেষ্ট। আমরা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেছি এবং তারা জানিয়েছেন যে, আপাতত মাগুরা মেডিকেল কলেজকে অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মার্জ করার পরিকল্পনা নেই।”
শফিকুল আলম আরও বলেন, দেশের প্রতিটি মেডিকেল কলেজের মান ও কার্যক্রম পর্যালোচনা করা হচ্ছে এবং স্থানীয় জনগণের চাহিদা ও শিক্ষার্থীদের উপযোগিতা বিবেচনায় রেখেই যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে তিনি আশ্বস্ত করেন যে, মাগুরা মেডিকেল কলেজের চলমান কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে এবং এখানে পাঠদান ও চিকিৎসাসেবা স্বাভাবিকভাবে চলবে।
এই সফর ও মন্তব্যের মাধ্যমে প্রেস সচিব স্থানীয় ও জাতীয় দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে নিজের মত প্রকাশ করেন—একদিকে মাগুরার স্বাস্থ্যখাতের অগ্রগতি, অন্যদিকে দেশের রাজনীতিতে জাতীয় তারকাদের ভূমিকা এবং রাজনৈতিক সচেতনতা।
repoter