ঢাকা,  বৃহস্পতিবার
৩ এপ্রিল ২০২৫ , ০২:৫০ মিনিট

Donik Barta

শিরোনাম:

* চাঁদপুরের ৪০টি গ্রামে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদ রবিবার * প্রতিযোগী না হয়ে প্রতিপক্ষ হলে ক্ষতিই নিজেদের: পঞ্চগড়ে সারজিস আলম * জুলাই বিপ্লবের শহীদ পরিবারদের পাশে নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক * ভূমিকম্প বিধ্বস্ত মিয়ানমারে যাচ্ছে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর উদ্ধারকারী দল * শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেছে, সৌদিতে রবিবার ঈদ উদযাপিত হবে * “বাংলাদেশ কোরআনের উর্বর ভূমি” — পিএইচপি কোরআনের আলো প্রতিযোগিতায় ধর্ম উপদেষ্টার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা * চা শ্রমিকদের পাশে সিলেটের ডিসি — দুর্দশায় ত্রাণ নিয়ে হাজির প্রশাসন * সাত বছর পর পরিবারের সান্নিধ্যে ঈদ উদযাপন করছেন খালেদা জিয়া * মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডে ভয়াবহ ভূমিকম্পে শতাধিক মৃত্যুর আশঙ্কা * আগামীকাল রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর ২ ঘণ্টার লেনদেন

আসাদের পতন রাশিয়ার মর্যাদায় আঘাত

repoter

প্রকাশিত: ১০:৪৬:২৯অপরাহ্ন , ১০ ডিসেম্বর ২০২৪

আপডেট: ১০:৪৬:২৯অপরাহ্ন , ১০ ডিসেম্বর ২০২৪

রাশিয়ার সমর্থনে প্রায় এক দশক ধরে ক্ষমতায় ছিল বাশার আল-আসাদ।

ছবি: রাশিয়ার সমর্থনে প্রায় এক দশক ধরে ক্ষমতায় ছিল বাশার আল-আসাদ।

সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করা এবং তাকে মস্কোতে আশ্রয় দেওয়ার সাম্প্রতিক ঘটনা রাশিয়ার মর্যাদার জন্য বড় ধাক্কা হয়ে এসেছে। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে রাশিয়ার সামরিক সমর্থনে ক্ষমতায় টিকে থাকা আসাদ সরকারের পতন এবং সিরিয়ার রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নাটকীয় পরিবর্তন রুশ নেতৃত্বের দীর্ঘমেয়াদি কৌশলকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।

মস্কো থেকে রুশ বার্তা সংস্থা জানিয়েছে, মানবিক কারণে বাশার আল-আসাদ ও তার পরিবারকে রাশিয়া আশ্রয় দিয়েছে। তবে, এই পরিস্থিতি আসাদকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখার রাশিয়ার প্রচেষ্টার চূড়ান্ত ব্যর্থতাকেই তুলে ধরেছে। সিরিয়ার রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং দেশটির ভবিষ্যৎ পরিস্থিতি নিয়ে অনিশ্চয়তা প্রকাশ করেছে।

২০১৫ সালে প্রেসিডেন্ট আসাদকে সমর্থন দিতে হাজার হাজার রুশ সেনা সিরিয়ায় পাঠানো হয়। এটি ছিল মধ্যপ্রাচ্যে রাশিয়ার প্রভাব বিস্তারের বড় পদক্ষেপ এবং ভ্লাদিমির পুতিনের বৈশ্বিক ক্ষমতা জাহির করার প্রথম বড় চ্যালেঞ্জ। সেই সময় রাশিয়া দাবি করেছিল, তারা সিরিয়ায় দীর্ঘমেয়াদে থাকবে এবং সন্ত্রাসবাদ রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

সিরিয়ার হেমেইমিম বিমানঘাঁটি এবং তারতুস নৌঘাঁটি ৪৯ বছরের জন্য রাশিয়াকে ইজারা দিয়ে সিরিয়া রুশ সামরিক ঘাঁটিগুলোর গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হয়ে ওঠে। এই ঘাঁটিগুলো রাশিয়ার জন্য পূর্ব ভূমধ্যসাগরে সামরিক শক্তি বৃদ্ধির কৌশলগত সুযোগ করে দেয়। আফ্রিকার বিভিন্ন অঞ্চলে সামরিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য এই ঘাঁটিগুলো গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছিল।

তবে, আসাদ সরকারের পতনের পর এই ঘাঁটিগুলোর ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সিরিয়ার বিরোধী পক্ষের সঙ্গে রুশ কর্মকর্তাদের যোগাযোগের খবর জানিয়ে রাশিয়া দাবি করেছে, ওই ঘাঁটিগুলোর নিরাপত্তার বিষয়ে নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে। রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ঘাঁটিগুলোকে ‘উচ্চ পর্যায়ের সতর্কতায়’ রাখা হয়েছে, তবে এই মুহূর্তে বড় কোনো ঝুঁকি নেই।

সিরিয়ার ঘটনা রাশিয়ার জন্য মর্যাদার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল। প্রেসিডেন্ট আসাদকে ক্ষমতায় রেখে রাশিয়া বিশ্ববাসীর কাছে নিজেদের সামরিক শক্তি ও প্রভাব দেখানোর চেষ্টা করেছিল। তবে, আসাদের পতন রুশ নেতৃত্বের সেই পরিকল্পনাকে ধূলিসাৎ করেছে।

রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সম্প্রতি সিরিয়ার সেনাবাহিনীর সমালোচনা করে বলা হয়েছে, বিদ্রোহীদের মোকাবিলা করতে তারা যথাযথ ভূমিকা পালন করেনি। একাধিক গুরুত্বপূর্ণ এলাকা কার্যত বিনা প্রতিরোধে বিদ্রোহীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। রাশিয়ার সামরিক সহযোগিতা থাকা সত্ত্বেও সিরিয়ার সরকার বাহিনী তাদের অবস্থান রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে।

রাশিয়ার নাগরিকদের জন্য এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেওয়া হয়েছে। আসাদকে ক্ষমতায় রাখতে রাশিয়া বহু সম্পদ খরচ করলেও এখন তাদের প্রধান অগ্রাধিকার দেশটির অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও ইউক্রেন যুদ্ধের মতো আরও গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। রাশিয়ার নেতৃত্ব একদিকে আসাদ সরকারের পতনের ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করছে, অন্যদিকে নিজেদের মর্যাদা রক্ষা করতে বৈশ্বিক কূটনীতিতে নতুন কৌশল অবলম্বন করছে।

সিরিয়ার এই পরিস্থিতি মধ্যপ্রাচ্যে রাশিয়ার দীর্ঘমেয়াদি কৌশলগত পরিকল্পনার উপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে। আসাদের পতন রাশিয়ার আন্তর্জাতিক অবস্থান এবং তার মিত্রদের সঙ্গে সম্পর্কের উপর কী প্রভাব ফেলে, সেটি এখন দেখার বিষয়।

repoter