ঢাকা,  বৃহস্পতিবার
৩ এপ্রিল ২০২৫ , ০৩:০১ মিনিট

Donik Barta

শিরোনাম:

* চাঁদপুরের ৪০টি গ্রামে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদ রবিবার * প্রতিযোগী না হয়ে প্রতিপক্ষ হলে ক্ষতিই নিজেদের: পঞ্চগড়ে সারজিস আলম * জুলাই বিপ্লবের শহীদ পরিবারদের পাশে নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক * ভূমিকম্প বিধ্বস্ত মিয়ানমারে যাচ্ছে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর উদ্ধারকারী দল * শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেছে, সৌদিতে রবিবার ঈদ উদযাপিত হবে * “বাংলাদেশ কোরআনের উর্বর ভূমি” — পিএইচপি কোরআনের আলো প্রতিযোগিতায় ধর্ম উপদেষ্টার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা * চা শ্রমিকদের পাশে সিলেটের ডিসি — দুর্দশায় ত্রাণ নিয়ে হাজির প্রশাসন * সাত বছর পর পরিবারের সান্নিধ্যে ঈদ উদযাপন করছেন খালেদা জিয়া * মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডে ভয়াবহ ভূমিকম্পে শতাধিক মৃত্যুর আশঙ্কা * আগামীকাল রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর ২ ঘণ্টার লেনদেন

আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র হত্যা ও গণহত্যার জন্য জনবিচ্ছিন্ন: মির্জা ফখরুল

repoter

প্রকাশিত: ১১:৩৪:৪১পূর্বাহ্ন, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪

আপডেট: ১১:৩৪:৪১পূর্বাহ্ন, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র হত্যা এবং গণহত্যা করেছে বলেই তারা জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে আওয়ামী লীগের অনুপস্থিতিকে এই বিচ্ছিন্নতার প্রতিফলন বলে উল্লেখ করেন তিনি।

শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, "আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে, গণহত্যা করেছে। এই কারণে তারা জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এবং আজকে বুদ্ধিজীবী দিবসেও উপস্থিত হতে পারেনি।"

তিনি আরও বলেন, "আমরা সবসময় আশাবাদী। বর্তমানে যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সূচনা হয়েছে, আমরা তা সহযোগিতা করছি। আমরা আশা করি, খুব দ্রুত জনগণের ইচ্ছা অনুযায়ী একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা হবে। জনগণ তাদের ভোটের মাধ্যমে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করার সুযোগ পাবেন।"

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে বিএনপির মহাসচিব বলেন, "আজকের এই দিনটি আমাদের জন্য অত্যন্ত বেদনাদায়ক এবং গুরুত্বপূর্ণ। ১৯৭১ সালে বিজয়ের পূর্ব মুহূর্তে পাক হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হত্যা করেছিল। তাদের লক্ষ্য ছিল স্বাধীনতার পূর্ব মুহূর্তে বুদ্ধিজীবী সমাজকে নিশ্চিহ্ন করা, যাতে বাংলাদেশ একটি নেতৃত্বহীন রাষ্ট্রে পরিণত হয়।"

তিনি বলেন, "সাংবাদিক, অধ্যাপক, চিকিৎসক, ইঞ্জিনিয়ারসহ জাতির সেরা মানুষদের নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল। এই দিনে আমরা তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। বিএনপির পক্ষ থেকে, চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে আমরা তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।"

মির্জা ফখরুল বলেন, "আজকের এই দিনে আমরা শপথ নিচ্ছি যে, বাংলাদেশের মানুষ ১৯৭১ সালে যে চেতনা নিয়ে যুদ্ধ করেছিল— একটি স্বাধীন, গণতান্ত্রিক ও বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে— তা পূরণ করতে আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণার মধ্য দিয়ে যে সংগ্রামের সূচনা হয়েছিল, সেই চেতনা বাস্তবায়নের জন্য আমরা কাজ করে যাব।"

বর্তমান পরিস্থিতি প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, "বাংলাদেশের জনগণ আর ফ্যাসিস্ট শক্তির শাসন মেনে নেবে না। একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা হবে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য অবৈধ পন্থা অবলম্বন করেছে। তারা গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে, মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। কিন্তু আমরা বিশ্বাস করি, জনগণ তাদের অধিকার আদায় করে নেবে।"

তিনি বলেন, "গণতন্ত্রের পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও মানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে আমাদের লড়াই চলবে। জনগণের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা এই ফ্যাসিস্ট সরকারকে পরাজিত করব।"

শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেনসহ দলের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ, যুগ্ম মহাসচিব খাইরুল কবির খোকন, হাবিব-উন-নবী খান সোহেলসহ হাজার হাজার নেতাকর্মী শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে নেতাকর্মীদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, "আমাদের আজকের এই লড়াই হলো গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াই। শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্বপ্ন ছিল একটি সমৃদ্ধ, স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ। আমরা সেই স্বপ্ন পূরণে অঙ্গীকার করছি।"

তিনি বলেন, "যারা শহীদদের আত্মত্যাগের কথা ভুলে গেছে, যারা গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে, তারা কখনোই জনগণের বন্ধু হতে পারে না। আমরা জনগণের পক্ষে দাঁড়িয়েছি এবং জনগণই আমাদের শক্তি।"

বিএনপি মহাসচিব জানান, "জনগণের ঐক্যই আমাদের আন্দোলনের মূল শক্তি। আমরা আশা করি, খুব শিগগিরই একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে।"

উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের এই দিনে বিজয়ের ঠিক পূর্ব মুহূর্তে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এবং তাদের দোসররা দেশের কৃতি বুদ্ধিজীবীদের নির্মমভাবে হত্যা করে। এই ঘটনায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ইতিহাসে একটি কালো অধ্যায় সৃষ্টি হয়। বিএনপির নেতাকর্মীরা শহীদদের স্মরণে শ্রদ্ধা জানিয়ে তাদের আদর্শে দেশ গড়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

repoter